বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার অনিক সরকারকে এবার কারাগারে পেটাল অন্য আসামিরা। বুয়েটের শেরে বাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যাকারীদের মধ্যে অন্যতম আলোচিত আসামি অনিক। জানা যায়, মারধরকারীদের মধ্যে ফাহাদকে সবচেয়ে বেশি নির্মমভাবে পিটিয়েছিল বুয়েটেরই আরেক ছাত্র এই অনিক।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে গ্রেফতারের পর রিমান্ড শেষে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছাতেই ক্ষুব্ধ বন্দিরা হামলে পড়ে অনিকের ওপর। কারারক্ষীদের চেষ্টায় রক্ষা পান অনিক।
এর আগে, ডিবির আবেদনের প্রেক্ষিতে শনিবার (১২ অক্টোবর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম তার (অনিক সরকার) জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রিমান্ডে থাকাকালে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হলে তাকে আদালতে নেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান
কারা সূত্রে জানা গেছে, বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী ফাহাদের নির্মম মৃত্যু অন্য সব সাধারণ মানুষের মতো মেনে নিতে পারেনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাবন্দি কয়েদী এবং হাজতিরা। মদ্যপ অবস্থায় অনিক সরকার কয়েক দফায় ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়েছিল। অমানবিক নির্যাতনের শিকার আবরার ফাহাদ গুরুতর অবস্থায় দুই দফা বমি করলেও অনিকের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা পায়নি মৃতপ্রায় ফাহাদ।
দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ড ব্যাপকভাবে প্রচার হওয়ায় কারাবন্দিরাও এই ঘটনার সবকিছু জানতে পারেন। ঘটনার পর দিনই অনিককে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। প্রথম দফা রিমান্ড শেষে দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। তবে আদালতে যাওয়ার পর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিতে সম্মত হয় সে।
পরবর্তীকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলামের আদালতে জবানবন্দি শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কেরানীগঞ্জ আদালতে পৌঁছে অনিক সরকারকে বহন করা প্রিজন ভ্যান। আনুষ্ঠনিকতা শেষে প্রধান ফটক দিয়ে কারাগারে প্রবেশ করে সে। কারাগারের সেলে ঢোকার সময়ই তাকে মারধর করেন কারাবন্দিরা। পরে তাকে অন্যত্র সরিয়ে নেয় কারা কর্তৃপক্ষ। যদিও এ বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি কারা কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। ৫ অক্টোবর ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসের জেরে আবরার ফাহাদকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তার সহপাঠীরা। এ ঘটনায় আবরারের বাবা বরকতউল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর চকবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
Leave a Reply