যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার একটি অবহেলিত গ্রাম মল্লিকপুর। গ্রামটি ঝিকরগাছা সদর ইউপির ৭নং ওয়ার্ড। পৌর সীমানা সংলগ্ন হলেও স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও কোন উন্নয়নের ছোঁয়া পড়েনি এ গ্রামে। এ যেন অবহেলার রাজ্য!
স্বাধীনতার পর থেকে এখনো এ গ্রামের মানুষ কাচা রাস্তায় চলাচল করে। ইউনিয়ন পরিষদ কতৃপক্ষ ইটের সোলিং করলেও সামান্য বৃষ্টিতে তা ধ্বসে গেছে। গ্রামটিতে বর্তমানে কয়েক কিলোমিটার পাকাসড়ক, বেশ কয়েকটি ব্রীজ-কালভাট ও পাকা ড্রেন অত্যন্ত প্রয়োজন।
জানা যায়, গ্রামটিতে প্রায় ৫ হাজার মানুষের বসবাস। ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি তারিখের তথ্য অনুযায়ী মোট ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ২৯ জন। পুরুষ ভোটার ৯ শত ৯৯ জন ও মহিলা ভোটার ১ হাজার ৩০ জন। গ্রামটি অন্তত ১০টি পাড়া নিয়ে গঠিত। পূর্বপাড়া, উত্তরপাড়া, মহালদারপাড়া, হিন্দুপাড়া, ঋষিপাড়া, পশ্চিমপাড়া, গাজিরদরগাহ পাড়া, গুচ্ছগ্রাম, রেলাইনপাড়া, দিঘিরপাড়া, লাউজানী বাজার সংলগানপাড়া।
এই গ্রামে ৭টি মসজিদ, ২টি মন্দির, ১টি (গাজিরদরগাহ) মাদ্রাসা, একটি পোষ্ট অফিস (গাজিরদরগাহ), একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় (কপোতাক্ষ গুচ্ছগ্রাম), ২টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সজিব মেমোরিয়াল ও মোড়লপাড়া প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং চারটি ইটভাটা রয়েছে। প্রায় ৩ কিলোমিটার লম্বা এই গ্রামের পূর্বদিকে কাশিপুর বাজার, পশ্চিমে লাউজানী বাজার, উত্তরে সদর উপজেলার ছোট মেঘলা এবং দক্ষিনে পদ্মপুকুর ও কৃত্তিপুর গ্রাম। গ্রামের মাঝ দিয়ে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক ও রেললাইন বয়ে গেছে।
গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ১৯৯৮ সালে ঝিকরগাছা পৌরসভা ঘোষনা হওয়ার পূর্বে কপোতাক্ষ নদের এপার ঝিকরগাছা সদর ইউনিয়নের অর্ন্তভূক্ত ছিল। পুরো ঝিকরগাছা উপজেলা নিয়ন্ত্রন করা হতো ঝিকরগাছা সদর ইউনিয়ন থেকে। কিন্তু সে তুলনায় এ অঞ্চলের উন্নয়ন কম।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে মল্লিকপুর ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক খলিলুর রহমান তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পৌর সীমানা সংলগ্ন মাত্র ২ শ’ গজ দুরে বসবাস করা সত্তেও তাকে এখনো কাঁচা রাস্তায় হেটে বাড়ি যেতে হয়। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের ব্যর্থতার কারনে এ অঞ্চলে তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি বলেও তিনি জানান।
এলাকাবাসী দ্রুত এ গ্রামের রাস্তাঘাট, ব্রীজ কালভাট উন্নয়নের দাবি করেন। তবে সদ্য বিদায়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাবিরা নাজমুল ও ইউপি চেয়ারম্যান আমির হোসেনের চেষ্টায় এই গ্রামে সামান্য এক ইটের সোলিং হয়েছিল বলে জানা গেছে।
গত দুবছরের সামান্য বৃষ্টিতে সেই সোলিং রাস্তাও ধসে গিয়ে চলাচলের অনুপোযোগী হয়েছে বলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে লাউজানী বাজার থেকে কাশিপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার পাকা রাস্তা উন্নয়নের কাজ শুরু হবে বলে উপজেলা প্রকৌশলী শ্যামল কুমার বসু জানিয়েছেন।
Leave a Reply