নিজের অধিনায়কত্বে ৫০তম জয় নিয়ে যখন মাঠ ছাড়ছিলেন সতীর্থরা তাকে ঘিরে ধরেছিলেন। বলছি বাংলাদেশ জাতীয় দলের সদ্য অধিনায়কত্ব ছাড়া খেলোয়াড় মাশরাফি বিন মর্তুজার কথা। তামিম তো একেবারে কাঁধেই তুলে নিলেন! তখন মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ ও তাইজুল ধরেছিলেন পা। মাঠ প্রদক্ষিণের সময় বারবার তিনি বলছিলেন, ‘রাখ আমাকে, নিচে নামাও।
মাশরাফি! বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সোনালি অক্ষরে লেখা একটি নাম। তার ‘২’ লেখা জার্সিটিও বহু ইতিহাস, অর্জন ও অনেক তৃপ্তির সাক্ষী। শুক্রবার (৬ মার্চ) রাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শেষ হলো তার অধিনায়কত্বের সফল এক যুগ।
খেলা শেষে তামিম-রিয়াদদের সঙ্গে উদযাপন করে মাঠে উপস্থিত ম্যাচের ধারাভাষ্যকারদের সঙ্গেও কথা বলেন মাশরাফি। ঐতিহাসিক এই জয় নিয়ে বিভিন্ন কথা বলার সময় সঙ্গে যোগ দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। তাদের কথা শেষ হলে ধারাভাষ্যকার দুজনকেই জয় উদযাপনের জন্য অনুরোধ জানান।
খানিকটা এগিয়ে গিয়েও ফের পেছনে থাকা আতহার আলী খানের কাছে ফিরে আসেন ম্যাশ। তখন আতহার বলেন, তুমি হয়তো আরও কিছু বলবে!
মাশরাফি হেসে উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ…প্রতিটা জয়েই সবার অবদান থাকে। এমন সম্মান দেখানোর জন্য ধন্যবাদ আমার খেলোয়াড়দের। আমি একটা কথা বলতে চাই, আমি সাকিবকে মিস করছি। সে আমার সঙ্গে সব সময় ছিল। আই মিস ইউ বয়।’
যদিও নিজের সতীর্থকে ভুলে যাননি বিশ্বসেরা খেলোয়াড় সাকিবও। গত বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) অধিনায়ককে স্মরণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন তিনি।
সাকিব লিখেছেন, ‘সত্যিকারের নেতা এবং যোদ্ধা বলতে যা বুঝায় আপনি আমাদের কাছে তার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন সব সময়। বহু প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও, আপনি উৎসাহ জুগিয়েছেন আমাদের। শিখিয়েছেন নিজেদের প্রতি বিশ্বাস রাখতে। আপনার থেকেই শিখেছি গৌরব আর সম্মানের সাথে দেশের জার্সি পরে কীভাবে মাঠে লড়তে হয়। নিঃসন্দেহে আমরা দারুণ কিছু সময় কাটিয়েছি মাঠে, কাটাব সামনের দিনগুলোতেও।’
সাকিব আরও লিখেন, ‘নিজের উদ্যমে যেভাবে আমাদের প্রেরণা দিয়েছেন আর প্রতিটা মুহূর্ত পাশে থেকে দল হিসেবে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করার ব্যাপারটা ভুলব না কখনোই। বিনয় আর সম্মানের সাথে টিম টাইগার্স আর প্রিয় জাতীয় পতাকাকে বিশ্বের বুকে উঁচিয়ে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। হয়তো আমাদের নেতৃত্বের দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন কিন্তু আমাদের সবার প্রিয় ‘মাশরাফি ভাই’ হয়ে সারাটা জীবন থাকবেন আমাদেরই মাঝে। সব সময়ই যেন আমাদের জন্য আপনার সেরাটা দিতে পারেন এই শুভকামনা জানাচ্ছি।’
বিশ্লেষকদের মতে, যোগ্য নেতা হিসেবে মাশরাফি আবারও প্রমাণ করেছেন, দলের প্রতিটি ক্রিকেটারের চেয়ে তিনিই সেরা। ২২ গজের ময়দানে মাশরাফি-সাকিবের রসায়নটা মারাত্মক। বিদায় লগ্নে সাকিবকে মিস করাটা মাশরাফির আবেগের একটা অংশ। অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফিকে মাঠে আর দেখা না গেলেও হয়তো পাওয়া যাবে সাকিবকে। তিনিও হয়তো মাশরাফির মতো করেই চেষ্টা করবেন দলকে এগিয়ে নিতে।
Leave a Reply