আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভারতের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিটি বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করে সই করা হয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ’আদানির সঙ্গে চুক্তি একটি খারাপ চুক্তি। এটি অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই যে, চুক্তিটা খুব ভালো হয়নি এবং যারা চুক্তিটি নিয়ে আলোচনা করেছে, তারা বাংলাদেশের স্বার্থ ঠিকমতো রক্ষা করতে পারেনি। আদানির চুক্তির জন্য যে পরিমাণ পয়সা আমাদের দিতে হবে এবং যে পরিমাণ বিদ্যুৎ আমরা নিতে পারি বা না পারি; সবক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থকে কম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে আমার মনে হয়।‘ এক্ষেত্রে যদি সরকারের কিছু করতে হলে আদানি গ্রুপের সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক করতে হবে বলে তিনি জানান।
সাধারণত দুইপক্ষের মধ্যে আলোচনা হয় চুক্তি সই করার আগে, পরে না উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘চুক্তি সই করার পরে পর্যালোচনা করা যেতে পারে, যদি দুপক্ষ স্বীকার করে, একমত হয়। চুক্তি সই করার পরে এক তরফাভাবে বাতিল করতে পারবেন না, যদি না সেখানে বাতিল করার প্রভিশন থাকে। যেমন অনেক চুক্তিতে থাকে তিন মাসের নোটিশে চুক্তি বাতিল করা যাবে এবং সেটি উভয়পক্ষ মেনে নেয়। বণিজ্যিক চুক্তি করার পরে সেটি একতরফাভাবে বাতিল করলে, সেটি তখন আর আমাদের হাতে থাকবে না। সেটি চলে যাবে সিঙ্গাপুর বা নেদারল্যান্ড এবং সেখানে বিচারক যে রায় দেবে সেটি মেনে নিতে হবে।’ সেই পর্যায়ে না যাওয়াটাই ‘সবসময় লাভজনক’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ইউএসএআইডি সহায়তা
ক্ষমতায় বসার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির সহায়তা স্থগিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সংস্থাটিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করতে চাচ্ছে তার নতুন প্রশাসন। সংস্থাটির মাধ্যমে বিশ্বে হাজার হাজার কোটি ডলারের সহায়তা দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র।
এ নিয়েও কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘ইউএসএআইডি সহায়তা বন্ধ বাংলাদেশ-কেন্দ্রিক নয়। যুক্তরাষ্ট্র যদি এই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়, তবে আমাদের বা অন্য কোনও দেশের করণীয় তেমন কিছু নেই। সেক্ষেত্রে আমাদের খাপ খাইয়ে নিতে হবে।
রোহিঙ্গাদের জন্য মার্কিন সহায়তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এটি চলমান আছে, তবে কতদিন চলবে সেটি জানা নেই। যদি এটি বন্ধ হয়ে যায়, তবে অন্য দেশগুলোকে অনুরোধ করতে হবে সহায়তা বৃদ্ধির জন্য।’
Leave a Reply