আবরার হত্যায় জড়িতদের ‘জানোয়ার’ উল্লেখ করে কামাল হোসেন বলেন, ‘যারা ঘটিয়েছে এরকম তো জানোয়ারও করে না। আমি কোনও জন্তু চিনি না, যারা মানুষকে এভাবে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। আমরা এদেশের ছেলেদেরকে পশুতে পরিণত করছি, এটা ভয়াবহ একটা অবস্থা। এ থেকে সমাজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দেশকে মুক্ত করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে আবরার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গণফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
লেজুড়ভিত্তিক সংগঠন গণফোরাম কোনোদিন চায়নি, এমনটি উল্লেখ করে ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ছাত্র রাজনীতি ‘লেজুড়ভিত্তিক’ হওয়ার পরিণাম সারাদেশ ভুগছে।
কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি সেই তদন্ত চাচ্ছি, যেখানে বিচার বিভাগের লোক থাকবেন। এর পাশাপাশি গভীরে যেয়ে যাদের তথ্য উদঘাটনের অভিজ্ঞতা আছে, তাদের রাখতে হবে। এখানে আমি গতানুগতিক তদন্ত কমিটির দাবি করছি না। সত্যিকার অর্থে গুরুতর রোগের গোড়াতে কী আছে, সেটা উদঘাটন আমরাও চাইবো, দেশের মানুষও চাইবে। সেটা হোক দ্রুত হোক।’
ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা উচিত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘এই বিষয়টি আমাদের দলের ভেতর আলোচনা করতে হবে। লেজুড়ভিত্তিক সংগঠন আমরা কোনোদিন চাইনি, এটা আমরা আগাগোড়া থেকে সবসময় বলে আসছি। ছাত্র রাজনীতি লেজুড়ভিত্তিক হয়ে গেলে সেটা অন্য কিছু হয়ে যায়। তার পরিণতি আজকে সারাদেশকে ভুগতে হচ্ছে।’
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ড.কামাল হোসেন বলেন, ‘দলের মধ্যে যারা রুগ্ন, তারাই এধরনের কাজ করতে পারে। আমি এমনটা কল্পনা করতে পারিনি। একটি ছেলে মত প্রকাশ করেছে, তাকে এভাবে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা— এটা আমাদের দেশে হাজার বছরের সভ্যতার ওপর, স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ। সংবিধানে পরিষ্কার বলা আছে— আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। মতের অমিল হলে পিটিয়ে মারতে হবে এটা সংবিধান বিরোধী, দেশ বিরোধী, রাষ্ট্রদ্রোহিতা।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। কারণ, তদন্ত ছাড়াতো রহস্য উদঘাটন হয় না। কিন্তু তদন্ত মানে তদন্ত! নামকাওয়াস্তে তদন্ত না। সমাজে যেভাবে আক্রমণ করে পিটানো হচ্ছে, ভিন্ন মত দিলে পিটানো— এটা গণতন্ত্র হতে পারে না, গণতন্ত্রের ষোলআনা পরিপন্থী। আপনারা সময় নিন, ঝুঁকি নিন, সত্যিকার অর্থে তদন্ত করুন। কারণ, এই দেশকে বাঁচাতে হবে। স্বাধীনতার ৫০ বছর হতে যাচ্ছে, এই মুহূর্তে পরাধীন যুগের ঘটনা ঘটবে, এটা আমরা কোনোভাবে মেনে নিতে পারি না। দলমত নির্বিশেষে ঐকমত্য হতে হবে, সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে।’
Leave a Reply