মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ ইরানের সঙ্গে চলমান সংঘাতের অংশ হিসেবে এবার অঞ্চলটির মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগন জানিয়েছে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদারে অংশ হিসেবে এবার দেশ দুটিতে অতিরিক্ত সেনাসদস্য এবং বাড়তি সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করা হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষের বরাতে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম ‘আল-জাজিরা’ জানায়, সৌদি আরবের আরামকো তেলক্ষেত্রে হামলার ঘটনায় এখনই তেহরানের বিরুদ্ধে বড় কোনো সামরিক ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মূলত এর প্রেক্ষিতেই সৌদি ও আমিরাতে বাড়তি সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পেন্টাগন।
সেনা মোতায়েন ইস্যুতে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এস্পার বলেছেন, ‘সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রত্যক্ষ অনুরোধের প্রেক্ষিতেই দেশ দুইটিকে সহায়তা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। যে কারণে সেখানে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে।’
মার্ক এস্পার আরও বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ এই দেশ দুইটি পক্ষ থেকে এরই মধ্যে তাদের আকাশ ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য মার্কিন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় আমাদের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অতিরিক্ত সেনাসদস্য এবং সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা ক্রমাগত বৃদ্ধি করা হবে।’
এ দিকে গত শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউসে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমাদের কাছে আছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী। আমি আগেও অনেকবার বলেছি, খুবই সহজেই মার্কিন সেনারা ইরানি ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে পারবে। এটা হবে খুবই সহজ একটা সিদ্ধান্ত।’
অপর দিকে একই দিন ওভাল অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুচিন বলেছেন, ‘তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি হচ্ছে ইরানের অর্থের সর্বশেষ উৎস। যা ভীষণ বড়। এবার আমরা দেশটির অর্থের সকল উৎসকেই বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছি।’
এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় অপরিশোধিত তেল শোধনাগার ‘আরামকো কোম্পানি’র দুটি বৃহৎ স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত সশস্ত্র হুথি বিদ্রোহীরা। মূলত এ ঘটনায় এরই মধ্যে একের পর এক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। যদিও এর জন্য দেশের সার্বিক তেল ও গ্যাস উৎপাদন অনেকটাই কমে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে হামলার নেপথ্যে ইরান জড়িত রয়েছে বলে দাবি করে এরই মধ্যে বেশ কিছু স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। তবে হামলার পর হুথি বিদ্রোহীরা দায় স্বীকার করলেও যুক্তরাষ্ট্র কেবল ইরানকেই দায়ী করে আসছে। যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগটি শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছে তেহরান।
Leave a Reply