ইহুদি নারীদের ‘সেক্স স্ট্রাইক’, কিন্তু কেন?

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১৫৬
ইহুদি নারীদের ‘সেক্স স্ট্রাইক’, কিন্তু কেন?

লিসিসট্রাটা। সময়কাল ৪১১ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। এথেন্সে মঞ্চায়িত হলো এক অভাবিত কমেডি। নাটকের বিষয়বস্তু—গ্রিক নগররাষ্ট্রের নারীদের এক অভিনব বিদ্রোহ। তাঁদের নেত্রীর নাম লিসিসট্রাটা, যার নামে নাটকটির নামকরণ হয়েছে। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে গ্রিক নারীরা তাঁদের পুরুষ সঙ্গীদের সাথে যৌনতা থেকে বিরত থাকেন। উদ্দেশ্য ছিল—পেলোপোনেশিয়ান যুদ্ধ বন্ধ করা, যে যুদ্ধে গ্রিক নগররাষ্ট্রের সবাই সবার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছিল। সেই নাটকের মূল পটভূমি আজ এক বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমেরিকার নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ইহুদি নারীরা একইভাবে এক আন্দোলনের সূচনা করেছেন। তাঁদের মূল লক্ষ্য—বিয়ে বিচ্ছেদের অধিকার আদায়।

 

হালের আমেরিকার নিউইয়র্ক শহর থেকে মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে কিরিয়াস জোয়েল নামের এলাকা, যেখানে রয়েছে কট্টরপন্থী ইহুদি জনগোষ্ঠীর বসতি। গ্রিক সেই নাটকের দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় পর এসে সেখানে গড়ে উঠেছে এক আগ্রহজাগানিয়া ধর্মঘটের। যৌনতার ধর্মঘট। নেতৃত্ব দিচ্ছেন আদিনা সাশ।

 

চলতি বছরের মার্চ মাসের শুরুর দিকে ইহুদি নারীদের এ আন্দোলনের সূচনা হয়চলতি বছরের মার্চ মাসের শুরুর দিকে ইহুদি নারীদের এ আন্দোলনের সূচনা হয়। ছবি: সংগৃহীত
আদিনা সাশের নেতৃত্বে চলতি বছরের মার্চ মাসের শুরুর দিকে এ আন্দোলনের সূচনা হয়। তাঁর ডাকে সাড়া দেন সেখানকার ৮০০ ইহুদি নারী। তাঁরা ঘোষণা করেন, শুক্রবার রাতে তাঁরা তাঁদের পুরুষ সঙ্গীদের সাথে মিলিত হবেন না।

 

প্রসঙ্গত, ইহুদি ধর্মমতে শুক্রবার রাতে নারী–পুরুষের মিলনকে পবিত্র হিসেবে গণ্য করা হয়। গত ৮ মার্চ এ আন্দোলনের সূচনার পর আরও অনেক ইহুদি নারী এর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন।

নিউইয়র্কের এই ইহুদি নারীরা গ্রিকদের মতো কোনো যুদ্ধের প্রতিবাদ হিসেবে এমন ধর্মঘটে যাননি। যদিও ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল এক প্রলম্বিত যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গাজায় ধ্বংস ও মৃত্যু এক নিদারুণ বাস্তবতা এখন পৃথিবীর সামনে। যদিও দেশে দেশে অস্ত্র ও গোলার দম্ভ এখনো এক হতাশাজনক বাস্তবতা। কিন্তু এর কিছুই এই ধর্মঘটের কারণ নয়।

 

নিউইয়র্কের এই ইহুদি নারীদের এমন অভিনব ধর্মঘটের কারণ হিসেবে উপস্থিত আরও বড় এবং বেদনাদায়ক এক বাস্তবতা। এটা তাঁদের নিজেদের লড়াই, নিজেদের অধিকার আদায়ের লড়াই।

ইহুদি ধর্মমতে, নারীরা চাইলেও অনাকাঙ্ক্ষিত বিয়ের বন্ধন থেকে আলাদা হতে পারেন না। তাঁদের সে অধিকার নেই। ইহুদি পুরুষেরা চাইলেই তাঁদের অনির্দিষ্টকাল ধরে আটকে রাখতে পারেন এমন বন্ধনে। ছোটার কোনো সুযোগই নেই। নেই বিয়ে বিচ্ছেদের অধিকার। এ এক অদৃশ্য শিকল যেন।

 

ইহুদি আইন অনুযায়ী, ইহুদি নারীরা চাইলেও বিয়ে বিচ্ছেদ করতে পারেন না। এ জন্য তাঁকে অবশ্যই তাঁর পুরুষ সঙ্গীর সম্মতি পেতে হবে। পুরুষ সঙ্গীর তরফ থেকে আর্মায়িক ভাষায় ১২ লাইনের একটি চিঠি পেতে হবে, যেখানে লেখা থাকবে তাঁর নারী সঙ্গীটি তাঁর সাথে থাকতে আর বাধ্য নন। শুধু তাই নয়। এই চিঠিতে অবশ্যই তিনজন রাব্বি (ইহুদি ধর্মগুরু) সই করতে হবে।

 

ফলে ইহুদি নারীদের পক্ষে আক্ষরিক অর্থেই অনাকাঙ্ক্ষিত বিয়ে থেকে বের হওয়া সম্ভব হয় না। বিচ্ছেদ কিনতে তাঁদের মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হয় পুরুষ সঙ্গীকে। এমনকি সন্তানদের অভিভাবকত্বও ছেড়ে দিতে হয়। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এবং নারী অধিকার নিয়ে সোচ্চার এক পৃথিবীতে এটি রীতিমতো অভাবনীয়।

 

ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট জানায়, কিরিয়াস জোয়েলের বাসিন্দা মালকি বারকোয়িটজ। ২৯ বছর বয়সী এই নারী গত চার বছর ধরে বৈবাহিক সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাঁর বর ভলভি প্রতিনিয়ত এই বিচ্ছেদের দাবিকে খারিজ করে দিচ্ছেন। এমনকি ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ আহ্বান জানালেও, তিনি এই বিচ্ছেদে সম্মতি দিচ্ছেন না। ফলে মালকিকে এই বিয়ের ঘানি টেনে যেতে হচ্ছে।

 

কিরিয়াস জোয়েলের কট্টর ইহুদিদের মধ্যে থাকা বিভিন্ন বিধি এতটাই কঠোর যে, নারীরা রীতিমতো বন্দী বলা চলে। সেখানকার নারীদের এমনকি পুলিশের কাছে পারিবারিক নির্যাতনের অভিযোগ জানাতেও রাব্বিদের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। অনুমতি পেলে অভিযোগ করতে পারেন। না পেলে মুখ বুজে নির্যাতন সহ্য করতে হয়।

 

মালকি বারকোয়িটজের মতো হাজারো ইহুদি নারী এমন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে আদিনা সাশ দ্য ইকোনমিস্টকে বলেন, মালকি এখানকার নারীদের প্রতিনিধি কেবল। এই ব্যবস্থার অধীনে নারীরা ভেড়ার পাল ছাড়া আর কিছুই নয় যেন। মালকির মতো অনাকাঙ্ক্ষিত বিয়ের ঘানি টানছেন ইহুদি সমাজের লাখো নারী।

 

শিকলে বন্দী এই নারীদের নিয়ে যারা কাজ করেন, তাঁরাও লড়তে লড়তে ক্লান্ত। বিচ্ছেদের আবেদন পুরুষ সঙ্গীটির তরফ থেকে একতরফা খারিজ করাটা যে আরেকটি নির্যাতন, তা প্রতিষ্ঠিত করতেই তাঁরা এখনো লড়ে যাচ্ছেন। বহু লড়াইয়ের পর ২০২১ সালে ব্রিটেনের আদালত বিষয়টিকে বিবেচনায় নেয় এবং এ ধরনের চর্চাকে বেআইনি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করে। ২০২২ সালে বিয়ে বিচ্ছেদে সম্মতি না দেওয়ায় একজনকে ১৮ মাসের কারাদণ্ডও দেওয়া হয় সেখানে। কিন্তু আমেরিকায় এখনো কোনো বদল নেই। এখনো সেখানকার ইহুদি জনগোষীতেঠি মধ্যযুগীয় এই ধারাই চলমান।

 

ইকোনমিস্ট জানায়, ফৌজদারী আইন সংস্কারে লড়াইরত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ ধরনের বিষয় ও পারিবারিক নির্যাতনের খতিয়ান তুলে ধরছে। তারা বলছে, কোনো নারী বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করলে তাঁকে পারিবারিক ও সামাজিক নানা হেনস্তা ও নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

ইহুদি নারীদের ‘সেক্স স্ট্রাইক’, কিন্তু কেন?

অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অর্গানাইজেশন ফর দ্য রেজ্যুলিউশন অব অ্যাগুনট–এর তথ্যমতে, বিচ্ছদের আবেদন করা নারীদের নামে অপপ্রচারসহ তাঁদের নানা ধরনের হেনস্তার শিকার হওয়া আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।

 

এমন বাস্তবতাতেই ইহুদি জনগোষ্ঠীর নারীরা এই আন্দোলনে নেমেছেন। তাঁরা নিজেদের পুরুষ সঙ্গীটিকে এই বার্তা দিতে চান যে, তাঁরা যেন ইহুদি নারীদের অধিকার আদায়ে সক্রিয় হন। অন্য পুরুষদের ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। এই আন্দোলন এতটাই সাড়া ফেলেছে যে, ভীতির সংস্কৃতিতে থাকা বহু ইহুদি নারী প্রথমবারের মতো তাঁদের পুরুস সঙ্গীকে মিলনের আহ্বানে ‘না’ বলে দিয়েছেন।

 

কট্টর ইহুদি জনগোষ্ঠীর নারীদের বিয়ে কৈশোরেই সম্পন্ন হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিয়ের আগে মেয়েরা তাঁরদের সম্ভাব্য বরটি সম্পর্কে বলতে গেলে কিছুই জানেন না। এমন বিয়ের ঘানি টানা মেয়েদের মধ্যে এমন জাগরণ তাই সবাইকে আগ্রহী করে তুলেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোতেও বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। শুধু আমেরিকা কেন, বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমেই বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে।

 

ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম হারেৎজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালকি বারকোয়িটজের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই আন্দোলনের সূচনা করেন আদিনা সাশ। না, তিনি তেমন কোনো সোশ্যাল মিডিয়া সেলেব্রিটি নন। কিন্তু তিনি নিজের অবস্থান থেকে এই আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন, যা ইহুদি নারীদের মধ্যে বেশ ভালো সাড়া ফেলেছে।

 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেট্রো একই বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে। তারা বলছে, ‘গেট’ নামে পরিচিত এই বিয়ে বিচ্ছেদ সম্পর্কিত আবেদনে পুরুষ সঙ্গীর অনুমতি নারীর অধিকার হরণ ছাড়া আর কিছুই নয়। অবশ্য একইসঙ্গে তারা ইহুদি নারীদের এই আন্দোলনের বিপরীতে কট্টর ধর্মগুরুদের বক্তব্যও তুলে ধরেছে। এমনকি ইহুদি নারীবাদী সংগঠন জিউইশ অর্থোডক্স ফেমিনিস্ট অ্যালায়েন্সও এমন আন্দোলনের বিরোধিতা করছে। তারা বলছে, ‘যৌনতা বা সঙ্গমকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আন্দোলনে পুরুষের মনোযোগ আকর্ষণ ও তাদের সহায়তা পেতে হাতিয়ার হিসেবে যৌনতার ব্যবহার বিপদ ডেকে আনতে পারে।

 

ইহুদি ধর্মগুরু হিসেবে এফ্রেম গোল্ডবার্গ ও র্যাভ হারশেল বেশ প্রসিদ্ধ। সমাজে তাঁদের প্রভাবও অনেক। এ দুই ধর্মগুরুই এই আন্দোলনের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তাঁদের ভাষ্য—এই আন্দোলন বিয়ের মতো পবিত্র একটি বন্ধনের জন্য ক্ষতিকর এবং ধর্মাচার বিরোধী।

 

যদিও যৌনতার ধর্মঘট নতুন কিছু নয়। গ্রিক নাটক লিসিসট্রাটার কথা আগেই বলা হয়েছে। সে তো দুই হাজারেরও বেশি বছর আগের ঘটনা। অত পেছনেও যাওয়ার প্রয়োজন নেই। গত শতকের নব্বইয়ের দশকেই কলোম্বিয়াতে এমন ঘটনা ঘটেছে। ১৯৯৭ সালে কলোম্বিয়ার সেনাপ্রধান মাদক, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও বামপন্থী দলগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনতে নারীদের প্রতি ‘সেক্স স্ট্রাইকের’ আহ্বান জানান। কলোম্বিয়াতে চলতি শতকেও অনুরূপ ধর্মঘট হয়েছে।

 

এনবিসি নিউজ জানায়, কলোম্বিয়ার বারবাকোসে ২০১১ সালে অনুরূপ আন্দোলন হয়। কারণ? অঞ্চলটির মহাসড়ক ছিল ভয়াবহ। ভাঙাচোরা মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করাই এক বিরাট যুদ্ধের মতো বিষয় ছিল। সে সময় সেখানকার নারীরা একই ধরনের আন্দোলনে নামেন। তাঁদের ভাষ্য ছিল—যে পথে গর্ভবতীদের পক্ষে চলাচলই কঠিন, সে পথে চলবার জন্য কোনো শিশুকে তাঁরা এই পৃথিবীতে আমন্ত্রণ জানাতে চান না। সুতরাং স্বামী কিংবা পুরুষ সঙ্গীর সাথে যৌন মিলন তাঁরা করবেন না ততদিন, যতদিন না সড়ক ঠিক হয়। শুরুতে পুরুষেরা ক্ষুব্ধ হলেও পরে তারা এ আন্দোলনে যোগ দেয়। প্রশাসনও বাধ্য হয় ওই অঞ্চলের পথঘাট সংস্কার করতে। ফলে এ আন্দোলনকে বেশ সফল বলা যায়।

ইহুদি নারীদের ‘সেক্স স্ট্রাইক’, কিন্তু কেন?

একই ধরনের আন্দোলন হয়েছিল কলোম্বিয়ার পেরেইরা শহরে। সহিংসতার জন্য কুখ্যাত শহরটিতে খুনের হার প্রতি লাখে ৯৭। সেখানকার নারীরা আন্দোলনে নামেন। পুরুষ সঙ্গীদের উদ্দেশ্যে তাঁদের বক্তব্য ছিল—অস্ত্র, নয়তো সঙ্গম, যেকোনো একটি বেছে নিতে হবে। এতে সাড়া পড়লেও সহিংসতা থেকে শহরটি শেষব্দি খুব একটা বেরিয়ে আসতে পারেনি।

 

একই ধরনের আন্দোলন হয়েছিল কেনিয়াতে ২০০৯ সালে। দেশটিতে বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে সেখানকার নারীরা এ আন্দোলনে নামেন। আন্দোলনকারীরা এমনকি দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এমবাই কিবাকি ও প্রধানমন্ত্রী রাইলা ওডিঙ্গার স্ত্রী এবং যৌনকর্মীদেরও এক সপ্তাহের জন্য যৌন সঙ্গম থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। ফল হয় অভিনব। এক সপ্তাহের মধ্যে দেশটিতে নারী নিপীড়ন ও রাজনৈতিক অস্থিরতা দুইই কমে এসেছিল।

 

বেলজিয়ামে এমন আন্দোলন হয়েছিল ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। নির্বাচনের পর সরকার গঠন করতে হওয়া বিলম্বের প্রেক্ষাপটে দেশটির বামপন্থী সিনেটর মারলিন টেমারমেন এই আন্দোলনের ডাক দেন। এনপিআর জানায়, মারলিন রাজনৈতিক নেতাদের নারী সঙ্গীদের প্রতি সরকার গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝোতায় পৌঁছানো পর্যন্ত যৌনমিলন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। আন্দোলনটি অবশ্য সফল হয়নি। কারণ, নির্বাচনের পর সরকার গঠন করতে বেলজিয়ামের লেগেছিল ৪২১ দিন, যা একটি বিশ্বরেকর্ড।

 

অর্থাৎ, এ ধরনের আন্দোলন সফল ও বিফল—উভয়ই হওয়ার রেকর্ড আছে ইতিহাসে। তাই আগে থেকেই বলবার সুযোগ নেই যে এবারের এই আন্দোলনে ইহুদি নারীরা সফল হবেন কিনা। তবে তাঁরা যে কারণে এবং যে অধিকারের জন্য আন্দোলন করছেন, তা এরই মধ্যে বিশ্বের মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। বর্তমান বৈশ্বিক ব্যবস্থায় আমেরিকার মতো একটি দেশে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী নারীদের অধিকার যেভাবে খর্ব করছে, তাই বিস্মিত করছে সবাইকে।

 

গ্রিসের সেই নারীদের আন্দোলন পরিণতি পেয়েছিল গ্রিক–স্পার্টা যুদ্ধবিরতি ও চুক্তিতে। কলোম্বিয়া বা কেনিয়ায় তা মিশ্র ফল এনেছে। বেলজিয়ামে বিফল হয়েছে। ইহুদি নারীদের এই আন্দোলন এই সময়ে যে সুনির্দিষ্ট কারণে করতে হচ্ছে, তা রীতিমতো লজ্জাকর। বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় বিয়ে থেকে বিচ্ছেদের অধিকার নারী–পুরুষ নির্বিশেষে পাওয়ার কথা। এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা কোনো বিশেষ গোষ্ঠী বা সঙ্গীর অনুমতির প্রসঙ্গই থাকবার কথা নয়। এমন একটি অধিকার পেতে নারীদের বাধ্য হয়ে নামতে হচ্ছে ‘সেক্স স্ট্রাইকে’। এটি যতটা বিস্ময়ের, যতটা অভিনব, তার চেয়েও বেশি বেদনার, লজ্জার ও ক্ষোভের।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT