এখনও ছাপা হয়নি ৩ কোটি পাঠ্যবই

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : বুধবার, ৫ মার্চ, ২০২৫
  • ৫০
শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই

চলতি শিক্ষাবর্ষের দুই মাস শেষ হলেও এখনও সব পাঠ্যবই হাতে পায়নি স্কুল শিক্ষার্থীরা। নবম শ্রেণির ইংরেজিসহ মাধ্যমিক পর্যায়ের অনেক বই এখনও ছাপা হয়নি। এনসিটিবি সূত্র জানিয়েছে, তিন কোটির মতো পাঠ্যবই ছাপা বাকি রয়েছে। এর বেশিরভাগই মাধ্যমিকের।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) দাবি, আগামী ১০ মার্চের মধ্যে এর সমাধান হয়ে যাবে। শিক্ষার্থীরাও পাঠ্যবই হাতে পাবে।

এর আগে গত ৯ জানুয়ারি ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছিলেন, ‘ক্যাবিনেট মিটিংয়ে পাঠ্যপুস্তক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ক্যাবিনেটে বলা হয়েছে যে আগামী মাসের (ফেব্রুয়ারি) মধ্যে সবার হাতে পাঠ্যপুস্তক দেওয়া হবে।’

এরপর গত ১৩ জানুয়ারি শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থীরা সব পাঠ্যবই হাতে পাবে।’

কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষের দুই মাস পার হয়ে গেলেও পাঠ্যবই নিয়ে সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি এনসিটিবি।

এনসিটিবি’র অভিযোগ, তিন কোটি পাঠ্যবই ছাপার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ মজুত থাকলেও ছাপাখানার মালিকরা কাগজ তুলছেন না। এ কারণে বই ছাপা হয়নি।

জানতে চাইলে এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘তিন কোটি বই ছাপার কাজ বাকি আছে। প্রিন্টিং প্রেসগুলো কাগজ ওঠায়নি। সে কারণে বই ছাপা হয়নি। তবে আগামী ১০ মার্চের মধ্যে ছাপা এবং সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।’

মুদ্রণ শিল্প সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, ‘মার্চে কাগজ সরবরাহ করে ফেব্রুয়ারির মধ্যে বই চাইলো তো পাওয়া যাবে না। এনসিটিবি প্রথম কিস্তির কাগজ দিয়েছে দেরিতে। দ্বিতীয় কিস্তির কাগজ আজ মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দেওয়ার কথা থাকলেও পুরোটা দিতে পারছে না। দ্বিতীয় কিস্তির কাগজ না দিয়ে পাঠ্যবইয়ের জন্য চাপ দেওয়ার কারণে অনেকে বাইরে থেকে কাগজ কিনে বই ছেপেছে। অথচ এখন দ্বিতীয় কিস্তির বাকি কাগজসহ তৃতীয় কিস্তির সব কাগজ নিতে বলছে এনসিটিবি। যারা আগে কাগজ কিনে নিয়ে বই ছেপেছেন, তারা এনসিটির কাছ থেকে তৃতীয় কিস্তির সব কাগজ কিনবে কেন?’

কাগজ নিয়ে এই সংকট কেন জানতে চাইলে তোফায়েল খান বলেন, ‘এনসিটিবি’র ভুল পরিকল্পনার কারণে এমনটা ঘটেছে।’

বাকি বই ছেপে কবে নাগাদ সরবরাহ করা সম্ভব হবে প্রশ্নে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, ‘বেশিরভাগ বই মার্চের মাঝামাঝি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। আর কিছু বই তো শর্ট ফর্মার থাকবে, সেগুলোও মার্চের মধ্যে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।’

এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, এবার মোট পাঠ্যবইয়ের সংখ্যা ৪০ কোটির মতো। এর মধ্যে মাদ্রাসার এবতেদায়ি এবং মাধ্যমিক স্তরের জন্য দুই কোটি ৩১ লাখের মতো এবং প্রাথমিক স্তরের বই ৯ কোটি ২০ লাখের মতো। এসব বইয়ের মধ্যে তিন কোটি বই এখনও ছাপা হয়নি।

এনসিটিবি’র সূত্র বলছে, মাধ্যমিক স্তরের ২৭ কোটি ৪৩ লাখ ৭২ হাজার ২১৩টি পাঠ্যবই ছাপা হয়েছে। এর মধ্যে পোস্ট ডেলিভারি ইন্সপেকশন (পিডিআই) হয়েছে ২৩ কোটি ৭৬ লাখ ১১ হাজার ৪৩২টি পাঠ্যবই। অর্থাৎ ছাপা হলেও এখন পর্যন্ত বিতরণ বাকি সাড়ে ৩ কোটি পাঠ্যবই।

অপরদিকে, প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপা হয়েছে ৯ কোটি ১২ লাখ ১৬ হাজার ৬১০টি। এর মধ্যে পোস্ট ডেলিভারি ইন্সপেকশন (পিডিআই) হয়েছে ৯ কোটি ১ লাখ ৭৫ হাজার। এখনও ছাপার বাকি ১১ লাখ পাঠ্যবই।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT