শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৩ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মাদকসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগে জেলা বিএনপির কাছে লিখিত আবেদন রেমিট্যান্সে রেকর্ড, ২৬ দিনে এলো প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে আদালতের রায় ঈদের ছুটি দীর্ঘ হলেও অর্থনীতিতে স্থবিরতা আসবে না: অর্থ উপদেষ্টা বিকাশ-নগদ-রকেটে দৈনিক ৫০ হাজার টাকা লেনদেন করা যাবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনে ভেটো দিয়েছে ১২ দলীয় জোট ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে হামজা বললেন, ‘জুনে আবার দেখা হবে’ পর্যটক বরণে প্রস্তুত সাজেকসহ রাঙামাটির পর্যটনকেন্দ্রগুলো ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়ী করার অভিযোগ সত্য নয়’

এবারও জামিন হলো না খালেদা জিয়ার

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
  • ১৯৪
খালেদা জিয়ার জামিন

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে করা আপিল আবেদন আবারও খারিজ করে দেয়া হয়েছে। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ৩ টায় এ আদেশ দেন।

এর আগে বেলা ১১টায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়। এসময় কারাহেফাজতে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসনের সবশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থার প্রতিবেদন হাইকোর্ট বেঞ্চে দাখিল করা হয়। এর পরই রিপোর্টটি আদালতে পড়ে শোনান বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। রিপোর্টে সাত সদস্যের মেডিকেল বোর্ড তাদের মতামত দিয়েছেন।

রিপোর্টে বলা হয়, খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, অ্যাজমা, ব্যাকপেইন ও আর্থ্রাইটিজের সমস্যা রয়েছে। তবে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু আর্থ্রাইটিজ ও ব্যাকপেইনের চিকিৎসার জন্য যেসব মেডিসিন পুশ করা দরকার, যেই বেটার ট্রিটমেন্ট দরকার তার জন্য খালেদা জিয়া অনুমতি দেননি। এতে করে উন্নত চিকিৎসা দেয়া যাচ্ছে না। এ সময় আদালত বলেন, ‘আমরা এখন আদেশ দেব।’

খালেদা জিয়ার আইনজীবী আ্যডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, মাই লর্ড, আমাদের একটু আবেদন রয়েছে। তিনি কেন অনুমতি দেননি, তা জানা দরকার। আমরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে চাই। আমরা তার কাছে জানব, কেন তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন না।

এ সময় খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, মাই লর্ড, যেই মেডিসিন পুশ করার কথা বলা হচ্ছে, তা বিদেশি ওষুধ। তা পুশ করার পর কী রিঅ্যাকশন হবে, সেটা দেখা দরকার।

আদালত বলেন, তিনি কি এক্সপার্ট? তিনি কি ডাক্তার? তিনি কীভাবে বুঝবেন?

আদালত বলেন, আমরাও চিকিৎসার জন্য দরকার হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ডাক্তারদের কনসার্ন নিয়ে চিকিৎসা করি। আমাদের একজন বিচারপতি প্যারালাইজড হয়ে গেছেন। তিনিও চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে গেছেন। কিন্তু যাওয়ার আগে ঢাকা মেডিকেলের ডাক্তারের কনসার্ন নিয়ে গেছেন।

এ সময় মওদুদ আহমদ বলেন, মাই লর্ড, খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমাদের দেখা করে জানার দরকার।

জবাবে আদালত বলেন, আপনারা কি ডাক্তার? আপনারা ট্রিটমেন্টের কী বুঝবেন?

এ সময় অপর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, আমাদের বারবার আপনাদের কাছেই আসতে হয়। আমাদের সবকিছু বন্ধ করবেন না। আমাদের একটু অনুমতি দেন। আর এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী রোববার দিন ধার্য রাখেন।

আদালত বলেন, আমাদের একটি প্ল্যান রয়েছে। কোর্টের নিজস্ব প্ল্যান থাকে। সেই অনুযায়ী কোর্ট চলে।

জয়নুল আবেদীন বলেন, মাই লর্ড, এইটুকু কনসিডার করেন। আপনাদের কাছে বারবার আসতে হয়। আগামী রোববার আদেশের জন্য দিন রাখেন।

এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, মেডিকেল বোর্ড রিপোর্ট দিয়েছে। তিনি (খালেদা জিয়া) যদি চিকিৎসার অনুমতি না দেন, তাহলে মেডিকেল বোর্ডের কী করার আছে? উনার সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এ সময় আদালত বলেন, ব্যাকপেইন ও আর্থ্রাইটিসের সমস্যা রয়েছে। ঠিক আছে আমরা আদেশ দিই।

পরে আবার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, মাই লর্ড, দুপুর ২টা রাখেন।’ পরে আদালত জামিনের আদেশের জন্য দুপুর ২টায় সময় দেন। বেলা ২টায় আদালত শুনানি শুরু হয়। আদালত জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।

খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, মওদুদ আহমদ, জয়নুল আবেদীন, এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে খুরশিদ আলম খান।

আদালতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের দণ্ড মাথায় নিয়ে কারাবন্দি খালেদা জিয়া এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দল ও পরিবারের সদস্যরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে অন্য হাসপাতালে নিতে চাইলে তাতে অনুমতি মেলেনি।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় জামিন চেয়ে এর আগেও হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। কিন্তু অপরাধের গুরুত্ব, সংশ্লিষ্ট আইনের সর্বোচ্চ সাজা এবং বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত- এমন তিন বিবেচনায় হাইকোর্ট বেঞ্চ ৩১ জুলাই সেই আবেদন খারিজ করে দেন। এর পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আপিল বিভাগে যান। কিন্তু খালেদা জিয়া জামিন পাননি।

গত বছরের ১২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে জামিন আবেদনটি খারিজ করে দেন। আপিল বিভাগের ওই রায়ে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসনের সম্মতি থাকলে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে দ্রুত ‘অ্যাডভান্সড ট্রিটমেন্ট’ দেয়ার পদক্ষেপ নিতে।

সেই রায় ১৯ জানুয়ারি প্রকাশিত হওয়ার পর হাইকোর্টে নতুন করে জামিন আবেদন করার উদ্যোগ নেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। ৩৬টি মামলার মধ্যে ৩৪টি মামলায় খালেদা জিয়া জামিনে আছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT