ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভূস্বর্গ খ্যাত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় অঞ্চলটিতে ইতোমধ্যে এক থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যা নিয়ে দেশব্যাপী সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ও এনসিপির তীব্র সমালোচনার ঘটনায় এবার পাল্টা আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সকল বিরোধী দলগুলোর উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘সাহস থাকলে আপনারা আপনাদের নির্বাচনি ইশতেহারে সংবিধানের ৩৭০ ধারা ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দেন।
সূত্রের বরাতে গণমাধ্যম ‘দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া’ জানায়, গত রবিবার (১৩ অক্টোবর) মহারাষ্ট্রের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আয়োজিত এক সমাবেশে ভাষণ দেন তিনি। যেখানে মোদী বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীর কেবল একটি ভূখণ্ডই নয়, একে ভারতের মুকুটও বলা চলে। তাই আপনারা কাশ্মীর নিয়ে অযথা রাজনীতি বন্ধ করুণ।’
উপস্থিত জনতাকে আশ্বস্ত করে নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কখনোই চার মাসের বেশি সময় লাগে না, আমাদের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। অথচ এমন পরিস্থিতি গত ৪০ বছরের বেশি সময় যাবত বিরাজ করছে। কেউ কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সাহস পায়নি।’
বিরোধীদের প্রতি অভিযোগ করে ভারতীয় এই প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারা (বিরোধী) এখন সংবিধানের ৩৭০ ধারা নিয়ে রাজনীতি করছে। এমনকি প্রতিবেশী দেশগুলোর মতো প্রায় একইভাবে কথা বলছে।’
সমাবেশে তিনি বলেছিলেন, ‘৩৭০ ধারা রদের মতো সিদ্ধান্তকে নিয়ে কংগ্রেস ও এনসিপির রাজনীতিকরণ অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক। জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে এতদিন তারা যেসব বক্তব্য দিয়েছে তাদের দলের নেতারাই এখন বিষয়টি আর মানছেন না।’
বিরোধীদের উদ্দেশ করে শক্ত ভাষায় প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘এবার কুমিরের কান্না বন্ধ করুন। আমি আপনাদের চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, যদি সাহস থাকে তাহলে রাজ্য ও ভবিষ্যৎ নির্বাচনের ইশতেহারে ৩৭০ ধারা ও ৩৫এ ধারা পুনরায় বহালের ঘোষণা দেন। যা এবার আমরা বাতিল করেছি। ক্ষমতা থাকলে ৫ আগস্টের সিদ্ধান্ত বাতিলের যথাযথ কর্মসূচি দিন।’
এর আগে গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছিল ক্ষমতাসীন মোদী সরকার। যার প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিতর্কিত লাদাখ ও জম্মু-কাশ্মীর সৃষ্টির প্রস্তাবেও সমর্থন জানানো হয়।
এসবের মধ্যেই চলমান কাশ্মীর ইস্যুতে পাক-ভারত মধ্যকার সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে একে একে ভারত সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য, যোগাযোগসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিবেশী পাকিস্তান। যদিও এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে ভারত পাশে পেয়েছে রাশিয়াকে এবং পাক সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ ইরান ও এশিয়ার পরাশক্তি চীন।
Leave a Reply