নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম ব্যস্ত নগরী মেলবোর্নে। শহরটির বিখ্যাত মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ভারতকে হারিয়ে পঞ্চমবারেরমত শিরোপা ঘরে তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
এই ম্যাচটি দর্শক উপস্থিতির দিক থেকে একটা বিশ্ব রেকর্ডও করে রেখেছে। সারাবিশ্বে যে কোনো নারী ইভেন্টের সর্বোচ্চ দর্শক উপস্থিতি ছিল মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে। মোট ৮৬১৭৪ দর্শক উপস্থিত হয়েছিল ওইদিন নারীদের চার-ছক্কার ফুলঝুরি দেখতে, ইতিহাসের সাক্ষী হতে।
কিন্তু ইতিহাসের সাক্ষী হতে গিয়ে এখন উল্টো বিপদে পড়েছেন ওইদিন মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে হাজির হওয়া দর্শকরা। কারণ, পুরো স্টেডিয়ামে উপস্থিত ৮৬ হাজার ১১৭জন দর্শকের সবাই এখন পড়ে গেছেন মারাত্মক করোনাভাইরাস ঝুঁকিতে।
কারণ, ৮ মার্চ এমসিজির গ্যালারিতে উপস্থিত হওয়া দর্শকদের মধ্যে একজনকে করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। যে কারণে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্য সরকার ঘোষণা দিয়েছে, ওইদিন গ্যালারিতে যে সব দর্শক উপস্থিত ছিলেন, তাদের মধ্যে কেউ যদি শারীরিক কোনো অস্বস্তি অনুভব করেন, তাহলে সাথে সাথে তারা যেন দ্রুত ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হয় এবং পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখে।
অস্ট্রেলিয়ায় এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫০ প্লাস। এরমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ জন। মৃত্যু বরণ করেছে ৩জন।
৮ মার্চ এমসিজির নর্দার্ন স্ট্যান্ডে বসে খেলা দেখা এক ব্যক্তির করোনাভাইরাস পজিটিভ পাওয়া গেছে। মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ক্লাব এবং মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের ম্যানেজারসহ সবাই খুব সতর্ক এ বিষয়ে যে, গ্যালারিতে উপস্থিত একজনকে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করানোর পর তার শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।’
ডিপার্টমেন্ট অব হেল্ড অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস (ডিএইচএইচএস) পরামর্শ দিয়েছে নর্থ স্ট্যান্ডে বসে যারা খেলা দেখেছে, তাদেরকে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখার জন্য। যদিও কোভিড-১৯ সেখান থেকে ছড়ানোর বিষয়টা লো-রিস্ক হিসেবে দেখা যাচ্ছে।’
ভিক্টোরিয়া রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বলা হচ্ছে, ৮ মার্চ মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের গ্যালারিতে যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদেরকে আগামী ২২ মার্চ পর্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, কোরানাভাইরাসের উপস্থিতির প্রমাণ মিলে যাবে এই সময়ের মধ্যেই। করোনা আক্রান্ত সা হলে তো কথাই নেই, আক্রান্ত হলে এই সময়ের মধ্যেই ওই ব্যক্তির মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পাবে।
মেলবোর্নে কয়েকটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে কারো যাতায়াত ঘটে থাকলে সে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মেন করা হচ্ছে। জায়গাগুলো হচ্ছে- নর্থ বালউইনের ম্যাকলিন পার্কে ৮ মার্চ সকাল ১০টা থেকে ৪টা পর্যন্ত, ক্লিফটন হিলের রামসডেন স্ট্রিট ওভালে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত যারা আসা-যাওয়া করেছেন তারা করোনা ঝুঁকিতে রয়েছেন।
এছাড়া ওইদিন যারা মেলবোর্নে বিমানযোগে আসা-যাওয়া করেছেন, তারাও রয়েছেন করোনা ঝুঁকিতে। শুধু তাই নয়, ৭ মার্চ সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত যারা অ্যালবার্ট পার্ক হোটেলে আসা-যাওয়া করেছেন, তারাও রয়েছেন মারাত্মক করোনা ঝুঁকিতে।
Leave a Reply