করোনা পজিটিভ হয়েও নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে প্রবাসীদের বিদেশগমন, বিভিন্ন হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান প্রভৃতি কেলেঙ্কারির জন্য সরকারকে দায়ী করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
শনিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের করোনা রোগীদের জন্য আরটি-পিসিআর পরীক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সরকারের অপরিণামদর্শিতা, চিন্তা না করে কথা বলা ও কোনো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ না নেয়া- এসব ভুলের কারণে এ অবস্থা। আজ থেকে দুই মাস আগে চায়না যখন ভ্যাকসিন ট্রায়াল করতে চাইলো, আমি বললাম আজই করেন। তাহলে আমার দেশের লোক উপকৃত হতো। তারচেয়ে লাভ হতো আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধি পেত, আমার দেশের লোক শিখে নিতে পারতো।
তিনি বলেন, টেস্টের পাশাপাশি আমরা গবেষণায় মনোযোগী হচ্ছি। আমরা ৫০ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছি গবেষণার জন্য। আমরা সর্বোচ্চ কোয়ালিটি মেইনটেইন করছি। বাংলাদেশ সারাবিশ্বে নাম করেছে তার ওষুধনীতির কারণে। ঠিক একইভাবে বাংলাদেশ পৃথিবীতে নাম করতো যদি অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমতি দিতো।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে ব্যবসায়ীসহ সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় গণস্বাস্থ্য কিটের উদ্ভাবক দলের প্রধান বিজ্ঞানী ও অনুজীববিজ্ঞানী ডা. বিজন কুমার শীল বলেন, জানুয়ারি মাসে যখন আমরা কাজ শুরু করি তখনই আমাদের এই ল্যাবরেটরির পরিকল্পনা ছিল। এখন আমাদের ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা হয়ে গেছে। সব মেশিনারিজ চলে আসছে। বলে রাখি, ২০০৩ সালে করোনাভাইরাসের পিসিআর টেকনিকটি সিঙ্গাপুরে আমরা তৈরি করেছিলাম। এরপর যখন এটা হারিয়ে গেল তারপর আর কোনো কিছু হয়নি। পরে ২০২০ সালে করোনাভাইরাস যখন আবার ফিরে এলো, পিসিআরই একমাত্র টেস্ট হলো করোনাভাইরাস ডিটেক্টশনের জন্য। আমরা মূলত স্রোতধারার সঙ্গে আজকে মিলিত হতে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, আপনারা অনেক ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। টেস্টের ক্ষেত্রে ওয়ার্কার যেন সংক্রমিত না হয়, সেদিকে খেয়াল রেখে সর্বোচ্চ সতর্ক থেকে টেস্টগুলো করতে হবে। আবার স্যাম্পলেরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং রেজাল্ট কারেক্ট করতে হবে। এতে ভুল হলে পজিটিভ একজন মানুষ কিন্তু নেগেটিভ হতে পারে। সব রেজাল্ট ঠিক হলো, কিন্তু একজনের নামের জায়গায় আরেকজনের নাম চলে আসলো, এভাবেও ভুল হতে পারে। সবকিছু স্বীকার করেই যত্ন নিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের কোভিড নিয়ে গবেষণার সুযোগ আছে। ল্যাবরেটরিতে শুধু রুটিন টেস্ট হবে না, গবেষণাও হবে বলে আমি আশা করছি।
গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, দ্রুত করোনা পরীক্ষা করতে বাইরের একজন রোগীকে গুনতে হবে তিন হাজার টাকা। গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে যাদের স্বাস্থ্যবীমা আছে তাদের দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা দিতে হবে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহযোগী সংগঠন গণস্বাস্থ্য আরএনএ বায়োটেক লিমিটেডের সার্বিক সহায়তায় একটি অত্যাধুনিক মলিকিউলার ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে।
Leave a Reply