শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৩ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মাদকসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগে জেলা বিএনপির কাছে লিখিত আবেদন রেমিট্যান্সে রেকর্ড, ২৬ দিনে এলো প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে আদালতের রায় ঈদের ছুটি দীর্ঘ হলেও অর্থনীতিতে স্থবিরতা আসবে না: অর্থ উপদেষ্টা বিকাশ-নগদ-রকেটে দৈনিক ৫০ হাজার টাকা লেনদেন করা যাবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনে ভেটো দিয়েছে ১২ দলীয় জোট ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে হামজা বললেন, ‘জুনে আবার দেখা হবে’ পর্যটক বরণে প্রস্তুত সাজেকসহ রাঙামাটির পর্যটনকেন্দ্রগুলো ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়ী করার অভিযোগ সত্য নয়’

করোনা মোকাবিলায় সরকারের ১৩ সিদ্ধান্ত

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : রবিবার, ২২ মার্চ, ২০২০
  • ২০৯
কোন জেলায় কতজন করোনায় আক্রান্ত

সমন্বিতভাবে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ১৩টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সব মন্ত্রণালয়কে নিজ নিজ করণীয় চিহ্নিত করে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, সম্প্রতি সচিবালয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ এবং দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য আয়োজিত এক সভায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতামতের ভিত্তিতে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ১৪ সচিব উপস্থিত ছিলেন। করোনা মোকাবিলায় গৃহীত সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তবে করোনা প্রতিরোধে সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে তার মধ্যে কয়েকটির এখনও বাস্তবায়ন শুরু হয়নি। এ ব্যাপারে সরকারও তেমন নজরদারি করছে না। ফলে মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসসহ অন্যান্য রোগজীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সরকারের সিদ্ধান্তগুলো হলো- গার্মেন্টসহ সব শিল্পকারখানায় কর্মীদের হ্যান্ড থার্মাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করে কর্মস্থলে প্রবেশের ব্যবস্থা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বহিরাগতদের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান। প্রবাসীদের দেশে আসা নিরুৎসাহিত করে ব্যাপক প্রচারণা। বাস ও রেলস্টেশন, নদীবন্দর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নকরণসহ স্থলপথ ও নৌপথে যাতায়াতের ক্ষেত্রে যাত্রীরা যাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং মাস্ক ব্যবহার করে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা। গণপরিবহনের ক্ষেত্রে সিট, হাতল, মেঝে নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখা। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা সাবান ও মাস্ক ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে। ক্লাসরুম পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করতে হবে। অবশ্য ইতোমধ্যে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওয়াজ মাহফিল ও কীর্তনসহ বেশি জনসমাগম হয় এমন ধর্মীয় অনুষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হবে এবং সব ধর্মাবলম্বীর মধ্যে করোনা বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টি করা। এ বিষয়েও সরকার নিদের্শনা জারি করেছে। আন্তর্জাতিক সব ফ্লাইট নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ সিদ্ধান্তও মোটামুটি বাস্তবায়িত হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের করোনা প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় নির্দেশ প্রদান করবে। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় সচেতনতামূলক কর্মসূচি এবং গুজব প্রতিরোধে ব্যাপক প্রচারের কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।

এ ছাড়া সারাদেশে করোনা বিষয় পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার ও ফেস্টুন বিতরণের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সব ধরনের জনসমাগম ও সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজন সীমিতকরণে উৎসাহিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সেলফ কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করতে হবে।

জানা গেছে, বাস ও রেলস্টেশন, নদীবন্দর এবং গণপরিবহনসহ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। দেশের প্রায় ১৪ হাজার বস্তির ২৪ লাখ বাসিন্দা করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে বস্তিবাসী অল্প জায়গায় গাদাগাদি করে বসবাস করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ ছাড়া দেশি-বিদেশি এনজিও কর্মকর্তাদের অবাধ বিচরণ ও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে গোপনে আসা-যাওয়ার কারণে যেকোনো মুহূর্তে কক্সবাজারের ক্যাম্পে অবস্থানরত এই জনগোষ্ঠী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

মিরপুর এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গার্মেন্ট ও শিল্পকারখানায় কর্মীদের হ্যান্ড থার্মাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করে কর্মস্থলে প্রবেশের নির্দেশনা থাকলেও তা সব প্রতিষ্ঠান মানছে না।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার সমকালকে বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বহিরাগতদের প্রবেশের বিষয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রয়োজনেই কিছু বহিরাগত ক্যাম্পে প্রবেশ করছে। নানা কাজে তাদের ভেতরে যেতে হচ্ছে।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ঢাকা জেলার উপমহাপরিদর্শক মেহেদী হাসান সমকালকে বলেন, গার্মেন্ট ও শিল্পকারখানায় কর্মীদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকারের নির্দেশনাগুলো পোস্টার, লিফলেট আকারে বিতরণ করা হচ্ছে। হ্যান্ড থার্মাল ডিটেক্টর কেনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যারা এখনও কেনেনি, তাদের মনিটর করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক সমকালকে বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আমাদের চিন্তায় যা যা ছিল, তার সবকিছুই বলা হয়েছে। ওই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন না হলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবকে তাগাদা দেওয়া হবে। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করা হবে। এ জন্য সাধারণ মানুষকেও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সরকার সবকিছু বলতে পারে কিন্তু বাস্তবায়নে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা লাগবে। তিনি বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য সেনাবাহিনী, পুলিশ ও প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT