শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৩ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মাদকসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগে জেলা বিএনপির কাছে লিখিত আবেদন রেমিট্যান্সে রেকর্ড, ২৬ দিনে এলো প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে আদালতের রায় ঈদের ছুটি দীর্ঘ হলেও অর্থনীতিতে স্থবিরতা আসবে না: অর্থ উপদেষ্টা বিকাশ-নগদ-রকেটে দৈনিক ৫০ হাজার টাকা লেনদেন করা যাবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনে ভেটো দিয়েছে ১২ দলীয় জোট ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে হামজা বললেন, ‘জুনে আবার দেখা হবে’ পর্যটক বরণে প্রস্তুত সাজেকসহ রাঙামাটির পর্যটনকেন্দ্রগুলো ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়ী করার অভিযোগ সত্য নয়’

কারফিউ প্রত্যাহারসহ যেসব দাবি সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতির

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪
  • ১৩১

কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলমান কারফিউ প্রত্যাহারসহ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব দাবি তুলে ধরেন।

লিখিত বক্তব্যে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, দেশে কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সময় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সদস্য ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, ব্যারিস্টার জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট আবেদ রেজাসহ সুপ্রিম কোর্ট ও সারা দেশের অনেক আইনজীবীকে বিনা কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদেরকে রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছে। আমরা আইনজীবীদের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানাই এবং অনতিবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। ভবিষ্যতে আইনজীবীদেরকে এরকম হয়রানি ও গ্রেফতার না করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করছি।

‘কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চলছিল, এরইমধ্যে হঠাৎ করে একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী সরকারী দলের একটি ছাত্র সংগঠনের নাম উল্লেখ করে বলেছিলেন যে, কোটা আন্দোলন দমন করতে তাদের ছাত্র সংগঠনই যথেষ্ট। এই উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার পরপরই কোটাবিরোধীদের ওপরে হামলা করা হয় এবং তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এছাড়াও সরকারের আরও দু-একজন মন্ত্রী উসকানিমূলক বক্তব্য রাখেন। এতে সারা দেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট অনুযায়ী, কয়েকশ আন্দোলনকারী নিহত হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে আন্দোলনকারীদের অনেকের চোখ চিরতরে নষ্ট হয়ে যায়। সারা দেশে হাজার হাজার কোটা আন্দোলনকারী আহত হয়। অনেকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। অথচ এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কতজন কোটা আন্দোলনকারী নিহত ও আহত হয়েছে, তার কোনও সংখ্যা দেশবাসীকে জানানো হয়নি। এই সংখ্যা গোপন করায় আমরা হতবাক হয়েছি। অনতিবিলম্বে আহত ও নিহতদের সংখ্যা ও পরিচয় জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবি জানাচ্ছি।’

বার সমিতির সভাপতি বলেন, ‘এই সংঘর্ষে সারা দেশে অনেক সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে। উল্লেখ্য যে, গত ২৪ জুলাই বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে যে, বিআরটিসি’র ৪টি বাস আগুনে পুড়ে দেওয়ার কারণে চট্টগ্রাম নগরে বায়েজিত বোস্তামি থানার শ্রমিক লীগের সভাপতি দিদারুল আলমকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সেই শ্রমিক লীগ নেতা স্বীকার করেন যে, সোহেল রানার সঙ্গে বাসগুলো পুড়ে দেওয়ার জন্য ৪ লাখ টাকার চুক্তি হয় তার। সুতরাং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও বেসরকারি সম্পদ ধ্বংসকারীদের সত্যিকার পরিচয় উদঘাটন না করা পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও আইনজীবীদের গণহারে হয়রানি ও গ্রেফতার না করার অনুরোধ জানাচ্ছি এবং এ কর্মকাণ্ডগুলো সংবিধানের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে আমরা মনে করি।’

‘এমনকি কোটাবিরোধী আন্দোলন দমনে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হয়। সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়— এগুলো জনগণের ওপর রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত বল প্রয়োগ বলে আমরা মনে করি। এই কোটাবিরোধী আন্দোলন দমন করার জন্য ‘জাতিসংঘ শান্তি রক্ষী বাহিনী’ লেখা হেলিকপ্টার ও আরমার ভেহিকেল ব্যবহার করা হয়, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এ কারণে ভবিষ্যতে জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশের নিয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মেধাবী ছাত্র আবু সাঈদ, সাংবাদিকসহ অসংখ্য ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ জনগণ মৃত্যুবরণ করে। এ আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি। যেখানে ভিডিও ফুটেজে স্পষ্টভাবেই দেখা গেছে যে, পুলিশ খুব কাছ থেকে নিরস্ত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করেছে, কিন্তু পুলিশ বাদী হয়ে রংপুরের তাজহাট থানায় যে মামলা দায়ের করেছে— সেখানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের দায়ী করে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে যেসব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছি।’

ব্যারিস্টার খোকন বলেন, ‘হঠাৎ করে গত ২১ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন যে, তারা কোটা সংস্কারে হাইকোর্টের রায় বাতিল চান এবং অন্যান্য আইনজীবীও বক্তব্য রাখেন। আমাদের বক্তব্য হলো— রাষ্ট্রপক্ষ যদি ১৫ দিন আগে হাইকোর্টের রায়ের আবেদন বাতিল চেয়ে চেম্বার জজের কাছে আবেদন করতেন এবং শুনানি এগিয়ে আনার আবেদন করতেন, তাহলে শতশত আন্দোলনকারী নিহত ও আহত হতো না এবং সরকারি ও বেসরকারি সম্পদ ক্ষতিগ্রস্তও হতো না। আমরা মনে করি, সরকারের ধীরগতির সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এই দায়ভার সম্পূর্ণ সরকারের। পরিশেষে আমি বাংলাদেশের সব ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়াকে অনুরোধ করবো, আপনারা সত্য সংবাদ তুলে ধরুন এবং এটা আপনাদের জাতীয় দায়িত্ব। কোনও ধরনের একপেশে সংবাদ পরিবেশন করবেন না। আমি সরকারের কাছে দেশের চলমান কারফিউ প্রত্যাহার এবং বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াগুলো চালু করা এবং মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন— সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দ ফজলে ইলাহী অভি ও ফাতেমা আক্তার।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT