সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলায় পরিবেশগত ছাড়পত্র ও সরকারি অনুমোদন ছাড়া গড়ে উঠেছে অধিকাংশ ইট ভাটা। এসব ভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহার হচ্ছে কাঠ ও টায়ারের গুড়া(কালি)।
সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায় উপজেলার প্রায় সবকয়টি ইট ভাটায় কয়লার পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ, তুষ ও টায়ারের গুড়া। এরমধ্যে উপজেলার উত্তরশ্রীপুর ইউনিয়নের ঘোজাডাঙ্গায় অবস্থিত এসবি বিক্সস সেখানে যেয়ে দেখা যায় টায়ারের গুড়া ব্যবহার করছে ইট পোড়ানোর কাজে। ক্ষমতার দাপটে নির্বিঘ্নে টায়ারের গুড়া ব্যবহার করলেও কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করছেনা প্রশাসন।
এসবি ব্রিক্সের পরিচালক শিব বাবু তার এ ইটভাটার ব্যবসায়িক পার্টনার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নাম্বার ওয়ার্ডর ইউপি সদস্য ছবিলার রহমান। ছবিলার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পুলিশের এক সাবেক কর্মকর্তার ভাগ্নে পরিচয় দিয়ে থাকেন। এজন্য তার ভাটার কাগজপত্র দরকার হয়না এমনই জানালেন স্থানীয়রা। তাছাড়া তাদের ভাটায় টায়ারের গুড়া ব্যবহার করলেও কারও কিছু করার ক্ষমতা নেই।
অবৈধভাবে ভাটা পরিচালনা ও টায়ারের গুড়া ব্যবহারের বিষয় জানতে চাইলে ইউপি সদস্য ছবিলার রহমান বলেন, ইট পোড়ানোর কাজে তাদের ভাটায় কয়লা ব্যবহার করা হচ্ছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রশাসন, সাংবাদিক ও স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে তিনি ভাটা চালাচ্ছেন।
https://www.facebook.com/satkhiraprotidin/videos/2440619912921978/
কুশুলিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর মেইন সড়কের পাশেই অবস্থিত মেসার্স যমুনা অটো বিক্সস। ভাটার পাশেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তারপরও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে ৪ বছর আগে গড়ে উঠেছে ইট ভাটাটি। সেখানে থেমে নেই এখানেও ব্যবহার হচ্ছে কাঠ ও কালির ব্যবহার।
রাস্তার পাশে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধ কালি ব্যবহার করলেও থামানোর যেন কেউ নেই। কথা হয় যমুনা ব্রিক্সের ম্যানেজার ওসমান আলীর সাথে। তিনি বলেন, কালি পোড়ানো যাবেনা এমন আইন তাদের জানা নেই। তাছাড়া ভাটার মালিক থাকেন ঢাকাতে আপনারা ভাটার মালিকের কাছে জানতে পারেন সবকিছু। আমি কিছু বলতে পারবনা।
তবে ভাটা মালিকের নাম ও মোবাইল নাম্বার ম্যানেজারের কাছে চাইলে তিনি দিতে অস্বীকার করেন।
উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের হোসেনপুরে গড়ে উঠেছে নাসিফ ব্রিক্স। এখানে কয়লার দেখা না মিললেও আছে তুষ ও টায়ারের গুড়ার ব্যবহার। ইট পোড়ানোর কাজে টায়ারের গুড়া ও তুষ ব্যবহার করলেও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছেনা।
অবৈধভাবে ভাটা পরিচালনা ও টায়ারের গুড়া তুষ ব্যবহারের কারণ জানার জন্য নাসিফ ব্রিক্সের পরিচালক শাহাবুদ্দিনের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে একাধীকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় রহমত আলী, তাহের আলী ও সোহেলসহ অনেকে আক্ষেপ করে বলেন, ধনী মানুষেরা অবৈধ কাজ করলেও সেটির বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনা কর্তৃপক্ষ।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) সিফাত উদ্দিন বলেন, অবৈধ ইট ভাটার বিরুদ্ধে কালিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে কয়েকটি ভাটায় অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করেছে। বর্তমানে ইটের ভাটায় কয়লার পরিবর্তে টায়ারের গুড়া ব্যবহার করা হচ্ছে, এ বিষয়ে আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি। আমরা অতিদ্রুত পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালকদের সাথে নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Leave a Reply