শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৩ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মাদকসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগে জেলা বিএনপির কাছে লিখিত আবেদন রেমিট্যান্সে রেকর্ড, ২৬ দিনে এলো প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে আদালতের রায় ঈদের ছুটি দীর্ঘ হলেও অর্থনীতিতে স্থবিরতা আসবে না: অর্থ উপদেষ্টা বিকাশ-নগদ-রকেটে দৈনিক ৫০ হাজার টাকা লেনদেন করা যাবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনে ভেটো দিয়েছে ১২ দলীয় জোট ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে হামজা বললেন, ‘জুনে আবার দেখা হবে’ পর্যটক বরণে প্রস্তুত সাজেকসহ রাঙামাটির পর্যটনকেন্দ্রগুলো ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়ী করার অভিযোগ সত্য নয়’

কী কারণে বাড়ছে চালের দাম, জানে না কেউ

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : বুধবার, ৪ মার্চ, ২০২০
  • ৬৬৫
কী কারণে বাড়ছে চালের দাম, জানে না কেউ

বেশ কিছুদিন ধরে বাজারে বাড়ছে চালের দাম। চিকন চালের দাম তুলনায় বেশি বাড়লেও বাদ যাচ্ছে না মোটা চালও। এ সময়ে বেড়েছে সব ধরনের মোটা চালের দামও। যদিও সরকারি নীতিনির্ধারকরা এ বিষয়টি মানতেই চান না।

তাদের দাবি, চাহিদার কারণে চিকন চালের দাম বাড়লেও, কোথাও মোটা চালের দাম বাড়েনি। কিন্তু বাজারের তথ্য এর উল্টো। সম্প্রতি বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। রাজধানীর বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানাগেছে

।জানা গেছে, রাজধানীর বাজারগুলোয় চিকন চাল হিসেবে পরিচিত নাজিরশাইল ও মিনিকেট চালের দাম বেড়ে এখন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইজাম ও লতা নামের মাঝারি মানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। উভয় প্রকার চালই গত সপ্তাহে কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে বলে দাবি করেছে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি)।

পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরেও কেন চালের দাম বাড়ছে- জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরাও একে অপরকে দোষারোপ করছে। বাজারের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী উভয়েরই অভিযোগ, মিল মালিকরা কারসাজি করে অতিরিক্ত মুনাফা আদায়ের উদ্দেশ্যে সব ধরনের চালের দাম বাড়িয়েছে। আবার মিল মালিকরা বলছেন তারা কোনও ধরনের চালের দাম বাড়াননি। দাম যা বাড়ানোর তা বাড়িয়েছেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। আর সরকার যতই অস্বীকার করুক, যে কারণেই হোক বাড়তি দাম দিয়েই ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে সব ধরনের চাল।

চালের দাম বাড়ার অভিনব একটা কারণকেও দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীরা। তাদের অজুহাত, সম্প্রতি চালের দাম বাড়ার পেছনে সরকারের চাল কেনার প্রতি আগ্রহ দায়ী। তাদের দাবি, আমনের মৌসুম শেষ পর্যায়ে। সামনে বোরো ফসল উঠবে। সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অভ্যন্তরীণ মজুত বাড়াতে আমন ধান ও চাল কেনার সময় ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হলেও তা আগামী ৫ মার্চ পর্যন্ত আবার বাড়িয়েছে খাদ্য অধিদফতর। এতে বাজারে বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়েছে। আর এ কারণেই বাজারে বেড়েছে মোটা ও চিকন উভয় প্রকার চালের দাম।

জানতে চাইলে জয়পুরহাটের চাল ব্যবসায়ী লায়েক আলী  বলেন, ‘আমরা মোকামে কোনও চালের দাম বাড়াইনি। চালের দাম যদি বাড়ে তাহলে তা বাড়িয়েছেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। এর বাইরেও চাঁদাবাজিসহ নানা কারণে চালের দাম বাড়তে পারে। বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের নজরদারি করা প্রয়োজন। তবে সরকার আমনের শেষ সময়ে আমন ধান ও চাল কেনার সময় বাড়িয়েছে আরও ৬ দিন। এ কারণে মোকামগুলোয় ধান ও চালের ওপর বাড়তি প্রভাব পড়েছে। এ কারণেও চালের দাম বাড়তে পারে।’

এদিকে রাজধানীর বাবুবাজার-বাদামতলী চাল আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন জানিয়েছেন, রাজধানীর বাজারগুলোয় খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়তে পারে। পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ার কোনও কারণ নাই। কেননা এ মুহূর্তে বাজারে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক। কোথাও চালের ঘাটতি নাই। নতুন করে কোনও বাড়তি চাহিদা সৃষ্টির কোনও সুযোগ তৈরি হয়নি।

আর বাংলাদেশ চাল কল মালিক সমিতির নেতা খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, দেশে পর্যাপ্ত চালের মজুত রয়েছে। কাজেই দাম বাড়ার কোনও কারণ নেই। তবে চিকন চালের দাম বাড়লে এর জন্য চাহিদা দায়ী। কারণ দেশের সবখানেই চিকন চালের চাহিদা বেড়েছে। মানুষের ক্রয় সক্ষমতা বেড়েছে বলে চিকন চালের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন বেশিরভাগ মানুষ। চাহিদা বাড়ার কারণে চিকন চালের দাম বাড়তে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম জানিয়েছেন, মোটা চালের দাম বাড়েনি। তবে তার যুক্তি, চিকন চালের দাম বাড়তে পারে। কারণ, মানুষ এখন মোটা চালের ভাত খেতে চায় না। তারা চিকন চাল কিনছেন। এ কারণে চাহিদা বেড়েছে চিকন চালের। তবে চাহিদা অনুযায়ী বাজারে চিকন চালের সরবরাহ কম। কৃষকরা বেশিরভাগ মোটা চালই উৎপাদন করতে আগ্রহী। যদিও দেশের কতভাগ মানুষ মোটা চালের বদলে চিকন চাল খেতে আগ্রহী তার কোনও পরিসংখ্যানভিত্তিক তথ্য উল্লেখ করতে পারেননি তিনি।

কৃষকদের ধানচাষের আগ্রহের বিষয়টি জানতে প্রান্তিক কৃষক পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার কলার দোয়ানিয়া গ্রামের আসলাম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানিয়েছেন, চিকন চাল আবাদ করার প্রবণতা এখনও আমাদের দেশে কম। আগে আউশ আমন জাতের চাষ করলেও এখন বেশিরভাগ কৃষক উফশি (উচ্চ ফলনশীল) জাতের ধান চাষ করে। যার বেশিরভাগই মোটা চালের ধান।

এদিকে রাজধানীর কোনাপাড়া বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, কারণ ছাড়াই চিকন চালের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে বেড়েছে মোটা চালের দাম। চিকন চালের দাম যেহেতু বেড়েছে, সে কারণে ব্যবসায়ীরা মোটা চালও বিক্রি করছে চড়া দামে। আমরা বেশি দামে কিনি বলেই বেশি দামে বিক্রি করি।খুচরা পর্যায়ে কেউ চালের দাম বাড়ায়নি। দাম বেড়েছে মিল, ও পাইকারি পর্যায়ে।

সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে একটা বিষয়ই শুধু পরিষ্কার- বাজারে সব ধরনের চালের দাম বাড়লেও ব্যবসায়ীদের কোনও পক্ষই এর দায় নিতে রাজি নয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় বিষয়টি করছে উপেক্ষা; নিত্যদিন কেবল এর শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT