নিহতরা হলেন, খলসি গ্রামের শাহাজান আলীর ছেলে হ্যাচারি মালিক মো. শাহীনুর রহমান (৪০) তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন(৩০), ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী(৯) ও মেয়ে তাসমিন সুলতানা(৬)।
হত্যাকারীরা ওই পরিবারের ৪ মাসের শিশু মারিয়াকে হত্যা না করে ফেলে রেখে যায়। শিশুটি তার পুরো পরিবার হারানোর বিষয়টি বুঝতে না পারলেও বারবার কেঁদে-কেঁদে মায়ের খোঁজ করছেন।
স্থানীয়রা জানান, ভোরে তারা ওই বাড়ির চিৎকার চেচামেচি শুনে ছুটে যান। পরে দরজা খুলে দেখতে পান সাবিনা খাতুন ও তার দুই শিশু তাসনিম ও মাহী একঘরে এবং আরেক ঘরে শাহীনুরের গলা কাটা করা লাশ।
তিনি জানান, হত্যাকারীরা সিড়ির ঘর দিয়ে ঢুকে তাদের খুন করে দরজায় শিকল দিয়ে চলে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়। সকাল ১০টা পর্যন্ত লাশগুলি ঘরেই ছিল। সেখানে পুলিশের ক্রাইম সেকশন কাজ করছে বলে সংবাদকর্মী ও অন্য কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
রায়হানুল ইসলাম আরও জানান, তার বড়ভাই শাহীনুর ইসলাম নিজস্ব ৭-৮ বিঘা জমিতে পাঙ্গাস মাছ চাষ করতেন। গত ২২ বছর ধরে তাদের পারিবারিক সাড়ে ১৬ শতক জমি নিয়ে নিকট প্রতিবেশী ওয়াজেদ কারিগরের ছেলে আকবরের সাথে মামলা চলছিল। এই মামলা ও পারিবারিক বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে তার ধারনা।
পরিবারের স্বজনরা জানান, শাহীনুরের বাবা ডা. শাজাহান আলী কলারোয়ার দামোদরকাটী গ্রামের নূর আলীর ছেলে জনৈক আকবর হোসেনের কাছ থেকে ৩৪ শতক জমি ক্রয় করেন। এই জমির ক্রেতা ছিলেন ডা. শাজাহান ও তার প্রতিবেশী ওয়াজেদ আলীর ছেলে আকবর।
এদিকে, একই পরিবারের ৪ জনকে হত্যার ঘটনায় পরিবারের স্বজনদের মাঝে চলছে শোকের মাতম। গোটা উপজেলাব্যাপি নেমে এসেছে শোকের ছায়া ।
সৌভাগ্যবশত বেঁচে যাওয়া একমাত্র শিশুকন্যা মারিয়া সুলতানা(৪মাস)কে স্থানীয় ইউপি সদস্য নাসিমা খাতুন উদ্ধার করে পরে তাকে আত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করেন।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্বে) হারান চন্দ্র পাল জানান, এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। ঘটনাস্থলে পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানসহ সিআইডি, গোয়েন্দা পুলিশ, ডিএসবি, র্যাব ও অন্যান্য গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
তিনি আরও বলেন, মায়ের লাশের পাশে কাঁদছিল চারমাস বসয়ী শিশু মারিয়া। সকালে স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য তাকে তার দায়িত্বে রাখেন। পরে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শিশুটি এখনও মাঝে মধ্যে কাঁদছে। সে মা-বাবাকে খুঁজছে।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা তথ্য উপাত্ত নিচ্ছি। এই নির্মম-নৃশংস ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করা হবে।
Leave a Reply