শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৩ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মাদকসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগে জেলা বিএনপির কাছে লিখিত আবেদন রেমিট্যান্সে রেকর্ড, ২৬ দিনে এলো প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে আদালতের রায় ঈদের ছুটি দীর্ঘ হলেও অর্থনীতিতে স্থবিরতা আসবে না: অর্থ উপদেষ্টা বিকাশ-নগদ-রকেটে দৈনিক ৫০ হাজার টাকা লেনদেন করা যাবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনে ভেটো দিয়েছে ১২ দলীয় জোট ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে হামজা বললেন, ‘জুনে আবার দেখা হবে’ পর্যটক বরণে প্রস্তুত সাজেকসহ রাঙামাটির পর্যটনকেন্দ্রগুলো ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়ী করার অভিযোগ সত্য নয়’

কেঁদে-কেঁদে ‘মা-বাবা’কে খুজছে ৪ মাসের শিশু মারিয়া

আসাদুজ্জামান
  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২০
  • ৩৬০
মায়ের গলাকাটা লাশের পাশে কাঁদছিল শিশু মারিয়া
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েসহ ৪ জনকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করেছে দূর্বৃত্তরা। হত্যার আগে অথবা পরে তারা মৃতদের কয়েকজনের হাত পা বেধে রেখে যায়। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) ভোররাতের কোন এক সময় এই ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, খলসি গ্রামের শাহাজান আলীর ছেলে হ্যাচারি মালিক মো. শাহীনুর রহমান (৪০) তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন(৩০), ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী(৯) ও মেয়ে তাসমিন সুলতানা(৬)।

হত্যাকারীরা ওই পরিবারের ৪ মাসের শিশু মারিয়াকে হত্যা না করে ফেলে রেখে যায়। শিশুটি তার পুরো পরিবার হারানোর বিষয়টি বুঝতে না পারলেও বারবার কেঁদে-কেঁদে মায়ের খোঁজ করছেন।

স্থানীয়রা জানান, ভোরে তারা ওই বাড়ির চিৎকার চেচামেচি শুনে ছুটে যান। পরে দরজা খুলে দেখতে পান সাবিনা খাতুন ও তার দুই শিশু তাসনিম ও মাহী একঘরে এবং আরেক ঘরে শাহীনুরের গলা কাটা করা লাশ।

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের ৪ জনকে গলা কেটে হত্যা
খুন হওয়া শাহীনুরের ছোটভাই রায়হানুল ইসলাম জানান, বাড়িতে মা ও বড় ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরা আমরা এক সঙ্গে থাকি। গতকাল মা আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। রাতে আমি ছিলাম পাশের আরেকটি ঘরে। ভোররাতে পাশের ঘর থেকে বাচ্চাদের গোঙানির শব্দ শুনতে পাই। এরপর বাইরে গিয়ে দেখি তাদের ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকানো। দরজা খুলে বিভৎস দৃশ্য দেখতে পাই।

তিনি জানান, হত্যাকারীরা সিড়ির ঘর দিয়ে ঢুকে তাদের খুন করে দরজায় শিকল দিয়ে চলে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়। সকাল ১০টা পর্যন্ত লাশগুলি ঘরেই ছিল। সেখানে পুলিশের ক্রাইম সেকশন কাজ করছে বলে সংবাদকর্মী ও অন্য কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

রায়হানুল ইসলাম আরও জানান, তার বড়ভাই শাহীনুর ইসলাম নিজস্ব ৭-৮ বিঘা জমিতে পাঙ্গাস মাছ চাষ করতেন। গত ২২ বছর ধরে তাদের পারিবারিক সাড়ে ১৬ শতক জমি নিয়ে নিকট প্রতিবেশী ওয়াজেদ কারিগরের ছেলে আকবরের সাথে মামলা চলছিল। এই মামলা ও পারিবারিক বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে তার ধারনা।

পরিবারের স্বজনরা জানান, শাহীনুরের বাবা ডা. শাজাহান আলী কলারোয়ার দামোদরকাটী গ্রামের নূর আলীর ছেলে জনৈক আকবর হোসেনের কাছ থেকে ৩৪ শতক জমি ক্রয় করেন। এই জমির ক্রেতা ছিলেন ডা. শাজাহান ও তার প্রতিবেশী ওয়াজেদ আলীর ছেলে আকবর।

মায়ের গলাকাটা লাশের পাশে কাঁদছিল শিশু মারিয়া

এদিকে, একই পরিবারের ৪ জনকে হত্যার ঘটনায় পরিবারের স্বজনদের মাঝে চলছে শোকের মাতম। গোটা উপজেলাব্যাপি নেমে এসেছে শোকের ছায়া ।

সৌভাগ্যবশত বেঁচে যাওয়া একমাত্র শিশুকন্যা মারিয়া সুলতানা(৪মাস)কে স্থানীয় ইউপি সদস্য নাসিমা খাতুন উদ্ধার করে পরে তাকে আত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করেন।

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্বে) হারান চন্দ্র পাল জানান, এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। ঘটনাস্থলে পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানসহ সিআইডি, গোয়েন্দা পুলিশ, ডিএসবি, র্যাব ও অন্যান্য গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

তিনি আরও বলেন, মায়ের লাশের পাশে কাঁদছিল চারমাস বসয়ী শিশু মারিয়া। সকালে স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য তাকে তার দায়িত্বে রাখেন। পরে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শিশুটি এখনও মাঝে মধ্যে কাঁদছে। সে মা-বাবাকে খুঁজছে।

সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা তথ্য উপাত্ত নিচ্ছি। এই নির্মম-নৃশংস ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT