শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৩ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মাদকসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগে জেলা বিএনপির কাছে লিখিত আবেদন রেমিট্যান্সে রেকর্ড, ২৬ দিনে এলো প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে আদালতের রায় ঈদের ছুটি দীর্ঘ হলেও অর্থনীতিতে স্থবিরতা আসবে না: অর্থ উপদেষ্টা বিকাশ-নগদ-রকেটে দৈনিক ৫০ হাজার টাকা লেনদেন করা যাবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনে ভেটো দিয়েছে ১২ দলীয় জোট ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে হামজা বললেন, ‘জুনে আবার দেখা হবে’ পর্যটক বরণে প্রস্তুত সাজেকসহ রাঙামাটির পর্যটনকেন্দ্রগুলো ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়ী করার অভিযোগ সত্য নয়’

কে এই শ্রমিক লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী সাদিয়া?

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ, ২০২০
  • ২০২
শ্রমিক লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী সাদিয়া

বহিষ্কৃত শ্রমিক লীগ নেত্রী সাদিয়া আক্তার মুক্তার রিমান্ড আবেদনের শুনানি হবে আজ বৃহস্পতিবার। তাকে স্বর্ণ চোরাই চক্রের হোতা বলে আখ্যায়িত করেছে পুলিশ।

ঢাকা ও নরসিংদীতে যুব মহিলা লীগ নেত্রী পাপিয়ার ‘পাপরাজ্যের’ নানা কাহিনী উদ্ঘাটনের সময় বেরিয়ে এল শ্রমিক লীগ নেত্রীর অপরাধ জগতের ঘটনা।

৩২ বছর বয়সী এই যুবতী এখন ‘টক অব দ্য খুলনা’। স্থানীয় আওয়ামী লীগকে পাত্তা না দিয়ে কেন্দ্র থেকে খুলনা মহানগর মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদটি বাগিয়ে নিয়েছিলেন। তবে নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ জুলাই তাকে বহিষ্কার করা হয়।

সম্প্রতি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি বিশেষ টিম বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকায় সাদিয়াকে গ্রেফতার করেছে। তার বাসা থেকে ১২ ভরি তিন আনা চোরাই সোনা এবং সোনা বিক্রির দুই লাখ ৮২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেফতারে পর মঙ্গলবার তাকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জের নিশানবাড়িয়া এলাকার মৃত আলতাফ সরদার ও মৃত মোসাম্মদ ফরিদা বেগমের দ্বিতীয় কন্যা সাদিয়া। বাবা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার পাশে মুদি দোকানের ব্যবসা করতেন।

দেড় যুগ আগে ঢাকার জুরাইন এলাকার ছেলে শুকুর আলীর সঙ্গে সাদিয়ার বিয়ে হয়। এ সময় শুকুর প্লট ও জমির ব্যবসা করতেন।

সাদিয়া রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। তবে কয়েক বছর আগে কেন্দ্র থেকে খুলনা মহানগর মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদটি বাগিয়ে নেন তিনি।

পরবর্তী সময়ে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে সাদিয়াকে দেখা যায়।

তবে নানাবিধ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩১ জুলাই তাকে পদ থেকে বহিষ্কার করে যুগ্ম সম্পাদক জাহানারা বেগমকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের পদ দেয়া হয়। আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতার সঙ্গে সাদিয়ার সখ্য ছিল।

এমনকি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল বলে জানা যায়।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার মজিদ সরণিতে অবস্থিত ‘গুহা ইন খুলনা’ রেস্টুরেন্টের ব্যবসা রয়েছে সাদিয়া-শুকুর দম্পতির। এটি খুলনার একমাত্র মাটির নিচে থাকা রেস্তোরাঁ।

মার্চের শুরুতেই সাদিয়া দম্পতি সর্বশেষ এ রেস্তোরাঁয় এসেছিলেন। তবে রেস্টুরেন্টের কর্মচারীদের ভাষায়- ম্যাডাম (সাদিয়া) আটকের কিছুদিন আগে থেকে মালিকপক্ষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ নেই রেস্তোরাঁ ব্যবস্থাপক জিহাদ আল মামুনের।

তিনি বলেন, শুকুরের ভাই লিটনের মাধ্যমে তারা এ রেস্তোরাঁ পরিচালনা করছেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, কিছুদিন আগে র‌্যাব কর্মকর্তারাও রেস্তোরাঁ মালিক সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে এসেছিলেন।

এদিকে নগরীর হরিণটানা থানার রাসেল সড়কে এ দম্পতির বহুতল ভবন রয়েছে। বাড়ির সামনে ১টি এবং গ্যারেজে ৪টি মোটরসাইকেল দেখা যায়। যার বেশিরভাগের রেজিস্ট্রেশন নেই।

ভবনের নিচতলার ১টি ফ্ল্যাটে সাদিয়ার বড় ভাই মানিক সরদার এবং অপরটিতে ভাড়াটিয়া রয়েছেন। পুরো বাড়ি সিসি ক্যামেরার আওতায়।

সাদিয়ার বড় ভাই মানিক বলেন, আমার বোন ষড়যন্ত্রের শিকার। সে কোনো ধরনের চোরাই স্বর্ণের সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত নয়। তবে রাজনীতি করায় তার অনেক শক্র হয়েছে।

এছাড়া শুকুর জমির ব্যবসা করার কারণেও শত্রু বেড়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে শুকুরের ৪ কাঠা জমি আছে, যা নিয়ে পার্শ্ববর্তী লোকজনের সঙ্গে ঝামেলা আছে।

তবে তিনি স্বীকার করেন যে, শুকুর কয়েকদিন ধরে আত্মগোপনে রয়েছেন। ঘটনার বিষয়ে সাদিয়ার স্বামী শুকুর আলীর ব্যবহৃত সেলফোনে একাধিকবার ফোন এবং খুদে বার্তা দিলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।

জানতে চাইলে জাতীয় শ্রমিক লীগ মহানগরের সাধারণ সম্পাদক রণজিত কুমার ঘোষ বলেন, সাদিয়া কেন্দ্র থেকে পদ নিয়ে এসেছিলেন। আমরা অনেকেই এর বিরোধিতা করেছিলাম। নানাবিধ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩১ জুলাই তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (সাউথ) মোহাম্মদ এহসান শাহ বলেন, সাদিয়া সোনা চোরাই সিন্ডিকেটের মূল হোতা। তার বিরুদ্ধে খিলগাঁও থানায় স্বর্ণালংকার চুরির মামলা আছে। পুলিশ চক্রটির সব সদস্যকে পাকড়াওয়ের চেষ্টা চালাচ্ছে। তার স্বামী শুকুর পলাতক।

তার বিষয়েও খোঁজ নেয়া হচ্ছে। সাদিয়া দম্পতির সোর্স অব ইনকাম নিয়ে সন্দেহ আছে। এ চোরাই সিন্ডিকেটের সঙ্গে পুলিশ বা রাজনীতিবিদ কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তাকে আটক দেখিয়ে আদালতের কাছে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সাদিয়া দীর্ঘদিন চোরাই সিন্ডিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT