সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা মহাসড়কের আশেকপুর বাইপাস এলাকায় অবরোধ করে এই আন্দোলন করেন। এতে মহাসড়কে পুরোপুরি যানবাহন আটকে যায়। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশেই প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। এ কারণে অসংখ্য মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেয়- ‘মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। ১৮-এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
আখতারুজ্জামান সাজু নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘চাপিয়ে দেওয়া বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতির কবর রচনা করতে আমরা একত্রিত হয়েছি। যেকোনও বাধাকে উপেক্ষা করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আমাদের দাবি একটাই, ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে।’
কয়েকজন যাত্রী ও বাসচালক বলেন, কোটা আন্দোলনের কারণে তারা মহাসড়কে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা ধরে অবস্থান করছেন- এতে তাদের ভোগান্তি হলেও এই আন্দোলনের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন।
টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি লোকমান হোসেন বলেন, ‘আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে সরে গেছেন। এখন যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।’
Leave a Reply