দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ক্যাসিনো ব্যবসায় অর্জিত অবৈধ অর্থের অনুসন্ধান শুরু করেছে কমিশন।
তিনি বলেন, ক্যাসিনো ব্যবসা দুদক আইনের তফসিলভুক্ত অপরাধ নয়। তবে এই ব্যবসার মাধ্যমে যে বা যারা জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন, তাদের বিষয়টি কমিশনের আইনের তফসিলভুক্ত অপরাধ হওয়ায় কমিশন এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
দুদক চেয়ারম্যান সোমবার কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ১৫ থেকে ২০ জনের বিষয়ে গণমাধ্যম, দুদকের নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্য ও অন্যান্য সংস্থা থেকে তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের বিষয়ে এখন অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা আইনি পথে চলতে চাই। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা যদি মনে করেন, জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন, তাহলে তা করবেন। প্রয়োজনে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কোনো ব্যক্তি, কোনো বিশেষ পেশা দুদকের কাছে মুখ্য বিষয় নয়। দুদকের বিচার্য বিষয় হচ্ছে, দুর্নীতি হয়েছে কি-না এবং তা কমিশন আইনের তফসিলভুক্ত অপরাধ কি-না। যদি অপরাধটি কমিশন আইনের তফসিলভুক্ত হয়, তাহলে যিনিই হোক, তাঁকে ন্যূনতম ছাড় দেবে না দুদক।
তিনি বলেন, ‘কমিশন আইনের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাশীল। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ঘুষ খাওয়া সরকারি দায়িত্ব নয়। বর্তমান সরকার যেভাবে ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি অনুসরণ করছে, কমিশনও ঠিক একই নীতি বাস্তবায়ন করছে। এখানে ভুল বোঝাবুঝির কোনো অবকাশ নেই। সংসদে যেসব আইন পাস হয়, তার প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা রেখেই দায়িত্ব পালন করছে কমিশন।’
এদিকে রাজধানীর একটি হোটেলে ইউএনওডিসির উদ্যোগে ন্যাশনাল ট্রেনিং ফর অ্যান্টিকরাপশন কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘করাপশন রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। এ সময় তিনি প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘প্রথমে নিজ প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির ঝুঁকি নিরূপণ করে তা নিরসনের নিখুঁত ব্যবস্থাপনার কৌশল বের করতে হবে। এ বিষয়ে এমনভাবে প্রশিক্ষণ নিতে হবে, যার মাধ্যমে সরকারি প্রতিটি সংস্থার দুর্নীতির ঝুঁকি নিরূপণ করে তা নিরসনের ব্যবস্থাপনায়, আপনারা প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন।’
অপরদিকে আজ দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ সংক্রান্ত কার্যক্রমকে অধিকতর বেগবান ও গতিশীল করার লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর মধ্যে দুর্নীতি প্রতিরোধ সংক্রান্ত কাজে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য তৃতীয় বারের মতো সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্তের সভাপতিত্বে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির মহারপিরচালক (প্রতিরোধ) সারোয়ার মাহমুদ এবং টিআইবি’র পক্ষে এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
দুর্নীতি প্রতিরোধ সংক্রান্ত কাজে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য ১ অক্টোবর ২০১৯ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ পর্যন্ত ৩ বছর মেয়াদি এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
Leave a Reply