যুক্তরাষ্ট্র বেশ তাড়াহুড়ো করেই মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আগ্রাসন থেকে বিজয়ের স্বাদ ছাড়াই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। বর্তমানে এও দেখা যাচ্ছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের শান্তি নিয়ে ভীষণ উৎসাহী চীন ও রাশিয়ার মতো দেশ। বিশ্বের প্রায় সব মোড়লই এখন সশস্ত্র সংগঠন তালিবানের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। তবে কেন এবং এরপর কী হতে চলেছে দেশটিতে?
বিশ্লেষকদের মতে, আফগানিস্তানে ন্যাটোর ঢুকে পড়ার প্রচারিত কারণ হিসেবে বলা হচ্ছিল ‘সন্ত্রাস দমন’। তখন বিষয়টিকে সামনে রেখে ইরান, রাশিয়া ও চীন সীমান্তের পাশে বড় পাঁচটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করাও ছিল ন্যাটোর জন্য বড় ভূরাজনৈতিক সাফল্য।
মার্কিন নীতিনির্ধারকরা ভেবেছিলেন, তালিবানকে পরাজিত করার পর তারা হয়তো আফগানিস্তানের খনিজ সম্পদও দখল করতে পারবে। কেননা দেশটিতে এখন প্রায় তিন ট্রিলিয়ন ডলারের খনিজ সম্পদ মজুদ রয়েছে। যদিও শেষ পর্যন্ত সেটা আর সম্ভব হয়নি। তাই নতুন বাস্তবতা মেনে নিয়ে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির সঙ্গে নিজেরাই কাজ করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। তাছাড়া চীন এবং রাশিয়ারও রয়েছে অনুরূপ ইচ্ছা।
ধারণা করা হচ্ছে, আফগানিস্তানের মাটির নিচে এক থেকে তিন ট্রিলিয়ন ডলার সমমূল্যের উত্তোলন যোগ্য সম্পদ রয়েছে। এগুলো নিয়ে ব্যবসা করলে দেশটি অনায়াসে বছরে কয়েক বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারবে। এর মধ্যে স্বর্ণ ও নিকেল ছাড়াও রয়েছে লিথিয়াম, স্ক্যানডিয়াম, ইউটিরিয়াম, কপারসহ অনেক মূল্যবান খনিজ।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে এখনো ৮০-৯০ ভাগ নাগরিক শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। সংখ্যাগরিষ্ঠ তরুণ বন্দুক চালানো ছাড়া আর কিছুই জানে না। একটি জনগোষ্ঠীকে বন্দুক সংস্কৃতি থেকে কাগজ ও কলমের সংস্কৃতিতে টেনে আনতে মনস্তাত্ত্বিকের বিপ্লব ঘটানো প্রয়োজন বলে মত বিশ্লেষকদের। যদিও এ কাজের জন্যও দরকার সম্পদ।
দেশ পরিচালনা ও রোজগারের জন্য খনিজ সম্পদ আর পর্যটন ছাড়া আফগান সরকার তেমন কিছু পাবে না। আন্তর্জাতিক পরাশক্তিগুলো এখনো দেশটির এই দুর্বলতার সুযোগ নিতে যে উদগ্রীব, তা বলাই বাহুল্য। সংশ্লিষ্টদের প্রধান বিনিয়োগ মূলত মানবসম্পদ ও অবকাঠামো খাতের জন্য প্রয়োজন। সেক্ষেত্রেও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ থাকবে কেবল সস্তায় খনিজ আহরণে। প্রয়োজনে চরম দুর্নীতিগ্রস্ত উপায়ে হলেও তারা তা করবে।
আরও পড়ুন : আশ্রিত শরণার্থীরাই তুরস্কের হাতিয়ার!
ধারণা করা হচ্ছে, ‘সেন্ট-গ্যাস’ প্রকল্পের আলাপও শিগগিরই হয়তো শুরু হবে। এই দ্বিমুখী চাওয়া-পাওয়ার সমন্বয় ঘটানোই এখন তালিবান নেতৃত্বের কাছে প্রধান চ্যালেঞ্জ। যদিও অনেকে আবার এখনই ভবিষ্যদ্বাণী করে রেখেছেন যে, দ্রুতই দেশটিতে এই খনিজ সম্পদ দখলের জন্য যুদ্ধ শুরু
Leave a Reply