গ্রামবাসীর সঙ্গে ছাত্রদের এক বিরোধের সময় ছয়-সাতজনকে চা আপ্যায়ন বাবদ ৪০ হাজার টাকা ব্যয় দেখিয়েছেন ভিসি! একইভাবে ছাত্রকল্যাণ ফান্ড থেকে এক লাখ টাকা অ্যাপায়ন বিল দেখানো হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেছেন বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র সম্রাট বিশ্বাস।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থীদের ফোরাম।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন পালনের পর প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।
ওই সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্যে বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র সম্রাট বিশ্বাস অভিযোগ করেন, বশেমুরবিপ্রবির ভিসি খোন্দকার নাসির উদ্দিন দুর্নীতিবাজ ও বিভিন্ন লুটপাটসহ নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত। তার এসব দুর্নীতি নিয়ে যে শিক্ষার্থীই মুখ খুলেছেন তাকেই বহিষ্কার করেছেন ভিসি।
ভিসির দুর্নীতির প্রমাণ হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও শহীদ মিনার স্থাপনের জন্য দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। অথচ বাস্তবে এ ম্যুরাল এখনো তৈরিই হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কোনো ম্যুরালের অস্তিত্ব নেই।
সম্রাট বিশ্বাস বলেন, গ্রামবাসীর সঙ্গে ছাত্রদের বিরোধের সময় ছয়-সাতজনকে চা আপ্যায়ন বাবদ ৪০ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। একইভাবে ছাত্রকল্যাণ ফান্ড থেকে এক লাখ টাকা অ্যাপায়ন বিল দেখানো হয়েছে।
সম্রাট বিশ্বাস আরও অভিযোগ করেন, ভারতের হায়দরাবাদ থেকে গাছ আনার কথা বলে ভিসি যশোর থেকে এনেছেন বলে দাবি করা হয়েছে ওই সংবাদ সম্মেলনে। কোনো শিক্ষার্থী এসব ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে সম্রাট বিশ্বাস আরও অভিযোগ করেন, ভিসি খোন্দকার নাসির উদ্দিন নিয়োগ বাণিজ্য, ভর্তি বণিজ্য, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা লুটপাট, ভিসি কোটা চালু, নারী কেলেঙ্কারি ও ভিসির বাসায় বিউটি পার্লার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত।
সম্রাট বিশ্বাস বলেন, নাসির উদ্দিন ১৯৯৪-৯৫ সালে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে জামাত-শিবির সমর্থিত সাদা দলের হয়ে নির্বাচন করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয় ওই সংবাদ সম্মেলনে।
উল্লেখ্য, আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। আন্দোলনকে ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে সব শিক্ষার্থীকে হলত্যাগ করতে নির্দেশনা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে শনিবার ক্যাম্পাসের বাইরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করলে বহিরাগতরা হামলা চালায়। এ হামলায় অনন্ত ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়ে গোপলগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হন।
গত ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ফেসবুকে লেখার জেরে ১১ সেপ্টেম্বর আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বশেমুরবিপ্রবির ক্যাম্পাস।
Leave a Reply