বর্ণবাদী মন্তব্যের জেরে মালয়েশিয়ায় ব্যাপক তোপের মুখে পড়া জাকির নায়েককে আর প্রকাশ্যে কথা বলতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। বিতর্কিত ওই ইসলামী বক্তাকে মালয়েশিয়ার রাখতে চান না জানিয়ে মাহাথির দাবি করেছেন, তাকে কোথায় ফেরত পাঠানো যায়, তা খতিয়ে দেখছে তার দেশ।
ভারতের আদালতে অর্থপাচার ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর মধ্য দিয়ে জিহাদি কার্যক্রম উদ্বুদ্ধ করার অভিযোগ রয়েছে জাকিরের বিরুদ্ধে। গত তিন বছর ধরে মালয়েশিয়ায় বসবাস করছেন তিনি। সেখানে ধর্ম ও জাতিগত ইস্যুকে স্পর্শকাতর বিবেচনা করা হয়। দেশটির ৬০ শতাংশ মানুষ মুসলমান আর বাকিরা চীন ও ভারতের নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী। এদের বেশিরভাগই সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ। সম্প্রতি জাকির নায়েক মন্তব্য করেছেন, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের চেয়ে মালয়েশিয়ায় থাকা সংখ্যালঘু হিন্দুরা শতগুণ বেশি অধিকার ভোগ করছেন। মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী হিন্দুরা দেশটির চেয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করেন বেশি। এই বর্ণবাদী মন্তব্যের জেরে তোপের মুখে পড়েছেন জাকির।
মঙ্গলবার সকালে মালয়েশীয় রেডিও স্টেশন বিএফএম-এর ব্রেফফার্স্ট গ্রিল শো-এ মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, ‘জাকির নায়েক এই দেশের (মালয়েশিয়ার) নাগরিক নয়। পূর্ববর্তী সরকার তাকে স্থায়ী আবাসিকতার অনুমতি দিয়েছে। স্থায়ী আবাসিকতা পাওয়া কোনও ব্যক্তি এই দেশের ব্যবস্থা ও রাজনীতি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারেন না। তিনি (জাকির) বিধি লঙ্ঘন করেছেন। এখন তাকে আর প্রকাশ্যে কথা বলতে দেওয়া হবে না।’
দিল্লির পক্ষ থেকে জাকিরকে ফেরত পাঠানোর আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হলে ২০১৮ সালে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ এ ব্যাপারে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। এ বছর জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহেও মাহাথির বলেছিলেন, ন্যায়বিচার ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকলে জাকির নায়েককে ভারতে ফেরত পাঠানো হবে না। তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, মালয়েশিয়ায় জাকিরের বিপুল সংখ্যক অনুসারি রয়েছেন বলেই জনপ্রিয়তা হারানোর ভয়ে তাকে ভারতের হাতে তুলে দিতে নারাজ মাহাথির। মঙ্গলবারের সাক্ষাৎকারে মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে বলেন, ‘তাকে কোথায় পাঠানো যায় আমরা তা খুঁজে দেখার চেষ্টা করছি, তবে কেউ তাকে নিতে চায় না’।
Leave a Reply