জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী বেকার থাকে

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০২৪
  • ১৬৬
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী বেকার থাকে

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজ সমূহ থেকে পাস করা পর ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী বেকার থাকছেন। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) ‘বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকার’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা ফেলো ড. বদরুন নেসা আহমেদ এ কথা বলেন।

 

রোববার (২৪ মার্চ) গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস আয়োজিত প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইস্তেহার বাস্তবায়ন ও চ্যালেঞ্জ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে ৭টি প্রবন্ধ ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের উপর উপস্থাপন করা হয়।

 

বিআইডিএস সম্প্রতি (২০২৩ সাল) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ওপর একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে। ওই গবেষণায় তিন বছর আগে পাস করা শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। পাশাপাশি বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তাদের বক্তব্যও নেওয়া হয়েছে। তাতে উঠে আসে এ তথ্য।

 

গবেষণায় উঠে আসে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, লাইব্রেরি ব্যবস্থাপনা, বাংলা, ইসলামির ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বেকারের হার তুলনামূলক বেশি। যে ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী বেকার, তাদের মধ্যে বেশির ভাগই বিএ (পাস) ডিগ্রিধারী।

 

গবেষণার তথ্য বলছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থী বেতনের বিনিময়ে চাকরি করছেন। এ ছাড়া ১৬ শতাংশ আত্মকর্মসংস্থানে আছেন এবং ১৩ শতাংশের বেশি খণ্ডকালীন কাজ করছেন।

 

যারা বেতনে ও মজুরির বিনিময়ে কর্মে নিয়োজিত আছেন, তাদের বেশির ভাগই শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট কর্মে নিয়োজিত আছেন। মূলত বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টারগুলোতে শিক্ষক পদে তারা চাকরি করছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা অনেকে তৈরি পোশাক খাতের নিচু পদেও যাচ্ছেন। কৃষি খাতেও যুক্ত আছেন অনেকে।

 

বদরুন নেসা আহমেদ বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রমে সমসাময়িক জ্ঞান ও দক্ষতার অভাব রয়েছে। যার কারণে পাস করেও অনেকেই চাকরি পাচ্ছেন না। অংক ও ইংরেজিতে ক্ষেত্রেও ঘাটতি আছে। বাংলাদেশের অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যেসব সুবিধা পায়, তা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ঘাটতি আছে। সেসব সুবিধা দেওয়া গেলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেকারত্বের হার কমে আসবে।

 

তিনি বলেন, গত দুই দশকে (২০০৬-২৩) শিক্ষার কলেবর বেড়েছে এবং ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। সাক্ষরতার হার ৪৫ থেকে বেড়ে ৭৬ শতাংশ হয়েছে। বেকারত্বের হারও কমেছে। ঝরে পড়ার হার ৪৯ থেকে কমে ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে। কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৯, সেখান থেকে সরকার সারা দেশে ১৬৬টি কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র করেছে।

 

দেশের উচ্চশিক্ষায় যত শিক্ষার্থী আছেন, তাদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় অংশ কেন এখনো চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে পারছে না, গবেষণায় এ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়।

 

শিক্ষার মানের অবনতি হয়েছে, এমন বক্তব্যের বিষয়ে ভিন্ন মত দেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অথিতি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মসিউর রহমান। তিনি বলেন, শিক্ষার প্রসারের ক্ষেত্রে স্কুল কাছে হওয়ার বিষয়টি অত্যাবশ্যক। ১৫ বছরে বছরের দায়িত্বকালিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই কাজটি করেছেন। শিক্ষা হারে বড় ধরনের অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এ সময়ে শতভাগ শিশুর স্কুলে যাওয়া নিশ্চিত করা হয়েছে, ৭০ ভাগ মাধ্যমিক যাওয়া নিশ্চিত করা হয়েছে। একই সময়ে মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার নিশ্চিত করা হয়েছে।

 

বিআইডিএস আয়োজিত দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে বিকেলের শেসনে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্য সাব্বির আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এম এম আকাশ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমদ প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT