শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৩ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মাদকসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগে জেলা বিএনপির কাছে লিখিত আবেদন রেমিট্যান্সে রেকর্ড, ২৬ দিনে এলো প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে আদালতের রায় ঈদের ছুটি দীর্ঘ হলেও অর্থনীতিতে স্থবিরতা আসবে না: অর্থ উপদেষ্টা বিকাশ-নগদ-রকেটে দৈনিক ৫০ হাজার টাকা লেনদেন করা যাবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনে ভেটো দিয়েছে ১২ দলীয় জোট ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে হামজা বললেন, ‘জুনে আবার দেখা হবে’ পর্যটক বরণে প্রস্তুত সাজেকসহ রাঙামাটির পর্যটনকেন্দ্রগুলো ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়ী করার অভিযোগ সত্য নয়’

জাল জাতীয় পরিচয়পত্রে ব্যাংক ঋণ, লাখ টাকায় মিলত পরিচয়পত্র

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ১৩৭
জাল জাতীয় পরিচয়পত্রে ব্যাংক ঋণ, লাখ টাকায় মিলত পরিচয়পত্র

জাল জাতীয় পরিচয়পত্রে ব্যাংক ঋণ, ক্রেডিট কার্ডের টাকা হাতিয়ে নিতে সহায়তাকারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাজধানীর মিরপুর মডেল থানা এলাকা থেকে জাল, দ্বৈত ও ডুপ্লিকেট জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সুমন পারভেজ (৪০), মো. মজিদ (৪২), সিদ্দার্থ শংকর সূত্রধর (৩২), মো. আনোয়ারুল ইসলাম (২৬) ও মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪১)। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে দ্বৈত, জাল ও ডুপ্লিকেট ১২টি জাতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়।

এদের মধ্যে দুইজন সিদ্দার্থ শংকর সূত্রধর ও আনোয়ারুল ইসলাম ই-জোন কোম্পানির মাধ্যমে আউট সোর্সিংয়ে নিয়োগকৃত নির্বাচন কমিশনের অধীনে খিলগাঁও ও গুলশান অফিসে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করেন। এ কারণে তারা নির্বাচন কমিশন অফিসের সফটওয়্যার ব্যবহার করে সহজেই জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতে পারতেন।

তারা এ পন্থা অবলম্বন করে এমন অনেককে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন উত্তোলন করে দিয়েছেন বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডের থানায় মামলা রুজু হয়েছে।

লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার রাজীব আল মাসুদ গণমাধ্যমকে বলেন, সুমন পারভেজ ও মজিদ ব্যাংকঋণ পাইয়ে দেবেন, এই শর্তে একেকজনের কাছ থেকে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা নিতেন। ঋণ হাতে পাওয়ার পর তাদের দিতে হতো মোট টাকার ১০ শতাংশ পর্যন্ত।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছে, ব্যাংকের লোন নিয়ে কেউ ঋণ খেলাপি হলে তাদের সিআইবি খারাপ হয় ফলে পুনরায় তারা ব্যাংকে লোনের জন্য আবেদন করতে পারেন না। তখন গ্রেফতারকৃত সুমন ও মজিদ লোন পাস করে দিবে মর্মে প্রথমে জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির জন্য প্রত্যেকের নিকট হতে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা গ্রহণ করতেন। পরবর্তী সময়ে লোন পাস হলে লোনের সমুদয় টাকার ১০% হারে দিতে হবে মর্মে চুক্তি করতেন। চুক্তিতে একমত হলে তারা প্রথমে জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে দিতেন। পরে লোন পাস হলে চুক্তি অনুযায়ী লোনের সম্পূর্ণ টাকার ১০% হারে নিয়ে নিতেন।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, দ্বৈত জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে তিনি একবার ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও সিটি ব্যাংক থেকে সাড়ে ৯ লাখ টাকা তুলেছিলেন। এরপর স্ত্রী রোজিনা রহমানের নামেও আরেকটি জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজ করাচ্ছিলেন। তিনি হাতেনাতে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে, সুমন পারভেজ সাত-আট বছর আগে ‘ভেরিফিকেশন ফার্মে’ কাজ করতেন। ওই প্রতিষ্ঠানের কাজ ছিল কেউ ঋণ পাওয়ার যোগ্য কি না, তা যাচাই–বাছাই করা। পরে চাকরি ছেড়ে এই কাজে যুক্ত হন।

এই চক্রের অপর সদস্য মজিদের ঋণের দরকার পড়ায় তিনি সুমন পারভেজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপর দুজন মিলে এই কারবারে নামেন।

কারও ঋণ প্রয়োজন হলে তারা নির্বাচন কমিশনের খিলগাঁও অফিসের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর সিদ্ধার্থ শংকর সূত্রধর ও গুলশান অফিসের মো. আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। এই দুজন জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে দিতেন।

একটি জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার পরও আরেকটি জাতীয় পরিচয়পত্র কী করে তৈরি করা যায়, এমন প্রশ্নের জবাবে আসামিদের উদ্ধৃত করে পুলিশ জানায়, অপারেটররা এ জন্য একটি কৌশল অবলম্বন করেন।

যারা দ্বিতীয় পরিচয়পত্র করিয়েছেন, তারা জন্মসনদ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে নাগরিকত্বের সনদ ও বিদ্যুৎ বিল ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের হাতে পৌঁছে দিতেন। তারা অফলাইনে সব তথ্য, আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয়পত্র অনুমোদনের জন্য পাঠিয়ে দিতেন। অনুমোদন হতে সময় লাগত সর্বোচ্চ ১৫–২০ মিনিট। তারপরই নতুন আরেকটি জাতীয় পরিচয়পত্র চক্রটির ঋণ নিতে ইচ্ছুক এমন লোকজনের হাতে তুলে দিতেন।

যে ব্যক্তির নামে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হলো, তার নামে আগে কোনো পরিচয়পত্র আছে কি না, তা যাচাই–বাছাই হতে মাস দুয়েক সময় লেগে যায়। ব্যাংকও টের পায় ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময়। তারা নতুন জাতীয় পরিচয়পত্রের সূত্র ধরে খোঁজখবর করে আর তাকে (নতুন করে যিনি ঋণ নিয়েছেন) খুঁজে পায় না।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT