সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের শ্যামনগর উপজেলাধীন ভেটখালী রাঁয়নগর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে জেলেদের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ গ্রহণ এবং মাছ লুটের অভিযান উঠেছে। সুন্দরবন থেকে ফিরে এসে স্থানীয় জেলেরা এ অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (৫ অক্টবর) ভেটখালী রাঁয়নগর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা সুন্দরবনে অভিযান চালায়। এসময় অভায়রণ্য এলাকায় মাছ ও কাঁকড়া ধরার অপরাধে প্রতিটি নৌকা থেকে ৫শ থেকে ১হাজার টাকা করে উৎকোচ গ্রহণ করে নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা।
এসময় তারা সীমান্ত নদী থেকে ভারতীয় জেলেদের ২টি ট্রলারসহ প্রায় ৪ মনের অধিক সাদা মাছ এবং প্রায় দেড় মন কাঁকড়া আটক করে। মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে একটি ট্রলারসহ ৪জন ভারতীয় নাগরিকদের ছেড়ে দেওয়া হয় এবং অপর ট্রলারের ৫ জন জেলেদের সাথে চুক্তিতে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ঐ ট্রলারে জেলেদের উঠিয়ে দিয়ে অন্য ১টি ট্রলার নিয়ে চলে আসে তারা। উক্ত ট্রলারে ভারতীয় জেলেদের জাল সহ লক্ষাধীক টাকার ব্যবহারিত মালামাল ছিলো। পুলিশ সদস্যরা লোকালয়ে এসে ট্রলারে থাকা মাছ ও কাঁকড়া নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে আত্মসাৎ করে।
সদ্য লোকালয়ে ফিরে আসা ভূক্তভোগী এক জেলে অভিযোগ করে বলেন, আমিসহ ৩ জন ফেরার পথে কাছিকাটায় ভেটখালী রাঁয়নগর নৌ-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্কাস আলী সহ সঙ্গীয় ফোর্স ও ৭ জন জেলে এবং ১ জন ডাক্তারের সাথে দেখা হয়। তারা আমাদের দেখে নৌকা রাখতে বলেন এবং অভায়রণ্য এলাকায় প্রবেশের দ্বায়ে আমাদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নগদ গ্রহণ করেন। পরবর্তিতে এইসব এলাকায় যেন না দেখতে পাই সে বিষয়ে সর্তক করে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ব্যক্তি জানান, আমরা আমড়াতলীর খালে হলদীবুনিয়া বনবিভাগের অপরিতাক্ত অফিসে রান্নার কাজে থাকি। খাওয়া-দাওয়ার পরে তালপাটি নামক স্থানে পৌছলে বাংলাদেশ ভারত সীমানার নদীর পানির খাল নামক স্থানে পাশাপাশি ২টি ট্রলার দেখতে পাই।
তিনি আরও বলেন, ভেটখালী রাঁয়নগর নৌ-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্কাস আলীর নির্দেশে তাদেরকে আটক করেন সঙ্গীয় ফোর্স। ২টি ট্রলারসহ প্রায় ৪ মনের অধিক সাদা মাছ এবং প্রায় দেড় মন কাঁকড়া আটক করে। আমাদেরকে একটি ট্রলারে উঠিয়ে দিয়ে লেনদেনের মাধ্যমে একটি ট্রলার সহ ৪জন ভারতীয় নাগরীকদের ছেড়ে দেয় এবং অপর ট্রলারের ৫ জন জেলেদের সাথেও লেনদেনের মাধ্যমে ঐ ট্রলারটি ছেড়ে দেয়। এবং ১টি ট্রলার নিয়ে চলে আসে। আটক করা ট্রলারে জালসহ ব্যবহারিত মালামাল ছিলো। পরে নৌ-পুলিশ নৌফাঁড়িতে এসে মাছ/কাঁকড়া নিজেরাই ভাগাভাগি করে নেয়।
এ বিষয়ে ভেটখালী রাঁয়নগর নৌ-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্কাস আলী ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করে বলেন, আমরা একটি নৌকা আটক করতে সক্ষম হয়েছি। ট্রলারে থাকা জেলেরা পালিয়ে গিয়েছিল। আমরা ট্রলারে কোন মাছ বা কাঁকড়া পাইনি।
Leave a Reply