শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৩ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মাদকসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগে জেলা বিএনপির কাছে লিখিত আবেদন রেমিট্যান্সে রেকর্ড, ২৬ দিনে এলো প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে আদালতের রায় ঈদের ছুটি দীর্ঘ হলেও অর্থনীতিতে স্থবিরতা আসবে না: অর্থ উপদেষ্টা বিকাশ-নগদ-রকেটে দৈনিক ৫০ হাজার টাকা লেনদেন করা যাবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনে ভেটো দিয়েছে ১২ দলীয় জোট ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে হামজা বললেন, ‘জুনে আবার দেখা হবে’ পর্যটক বরণে প্রস্তুত সাজেকসহ রাঙামাটির পর্যটনকেন্দ্রগুলো ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়ী করার অভিযোগ সত্য নয়’

টাকা ফেরত পাবেন কি না, শঙ্কায় ইভ্যালির গ্রাহকরা

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ২৮ আগস্ট, ২০২০
  • ৩০৮
ই-ভ্যালির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

দীর্ঘদিন ধরে পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে ক্যাশব্যাকের নামে গ্রাহকের টাকা আটকে রেখে সমালোচনার তোপে আছে অনলাইন শপিং প্লাটফর্ম ইভ্যালি। তাদের অভিনব ব্যবসায়িক কৌশল নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় ইভ্যালির কার্যক্রমের তথ্য চেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাইবার টিমগুলোও প্রতিষ্ঠানটির কাজকর্ম মনিটরিং করছে।

একের পর এক ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) রাতে ইভ্যালি ডটকম লিমিটেড এবং এর চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেলের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

গত ৩-৪ দিন ধরেই ইভ্যালির কার্যক্রম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছিল। অনেকে ইভ্যালিতে অর্ডার দিয়েও ৩-৪ মাস ধরে পণ্য বা টাকা ফেরত না পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করছিলেন। অনেকে আবার ক্যাশব্যাক অফারে কমদামে পণ্য পাওয়ায় ইভ্যালির কাছে কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করছিলেন।

তিন দিন আগে ব্র্যাক ব্যাংক ঘোষণা দেয়, তাদের কার্ড ইভ্যালির কেনাকাটায় ব্যবহার করা যাবে না। বৃহস্পতিবার রাতে এ প্রতিষ্ঠান ও তার শীর্ষ দুই কর্মকর্তার ব্যাংক হিসাব জব্দের খবর ছড়িয়ে যাওয়ার পর গ্রাহকদের মধ্যে ‘ডেসটিনির মতো টাকা হারানোর শঙ্কা’ দেখা দেয়।

এছাড়া বৃহস্পতিবার আকস্মিক এক বিজ্ঞপ্তিতে ইভ্যালি জানায়, শুক্রবার তাদের ফুড এবং এক্সপ্রেস শপ বন্ধ থাকবে। শনিবার থেকে পারশিয়াল ব্যালেন্স এবং পারশিয়াল ক্যাশ অন ডেলিভারিতে সার্ভিস আবারও শুরু হবে। হঠাৎ করে জনপ্রিয় একটি সার্ভিস বন্ধ করে দেয়ায় গ্রাহকরা ইভ্যালির ভবিষ্যৎ কার্যক্রম নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। অনেকে অবিলম্বে তাদের রিফান্ডের টাকা ফেরত না দিলে আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ারও হুমকি দিয়েছেন।

এসএস হাসান নামে এক গ্রাহক বলেন, আমি গত ২৯ জুন ও ১ জুলাই ৫টা পণ্য অর্ডার দেই। প্রায় দুই মাস হয়ে গেলেও তিনটা পণ্য এখনো ‘প্রসেসিং’ দেখাচ্ছে, বাকি দুইটা ‘অর্ডার পিকড’ হয়ে পড়ে আছে। তিন হাজার ৫০০ টাকা ওয়ালেটে রিফান্ড নিয়েছি ফুড অর্ডার করার জন্য। এখন এই সার্ভিসও বন্ধ। পণ্য বা টাকা আদৌ ফেরত পাবো কি-না, এ নিয়ে আমি এখন শঙ্কিত।

হোসেন আকরাম নামে আরেক গ্রাহক বলেন, আমি একটি স্মার্ট টেলিভিশন কেনার জন্য দুই মাস আগে ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি। প্রায় ৩০ শতাংশ ক্যাশব্যাকে টিভির দাম হয় ২৭ হাজার টাকা, বাকি টাকা আমার ওয়ালেটে জমা হওয়ায় কথা। টিভি পাইনি। গতকাল তাদের প্রতিষ্ঠানের ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ হওয়ার সংবাদ শুনে টাকা নিয়ে আরও শঙ্কিত হয়ে পড়লাম। ইভ্যালির উচিৎ আপাতত সব ধরনের অর্ডার নেয়া বন্ধ করে আগের অর্ডারের পণ্য অথবা টাকা ফেরত দেয়া।

গ্রাহক সোলেমান সরকার বলেন, আমি পাঁচ মাস আগে ইভ্যালিতে একটি পণ্য অর্ডার দেই। অর্ডার নেয়ার তিন মাস পর সেই পণ্য ‘আউট অব স্টক’ উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর ইভ্যালি ওয়ালেটে টাকা ফেরত আসে এক মাস পর। সেই টাকা বিকাশে পাঠাতে আরও মাসখানেকের সময় নেয় তারা। দীর্ঘদিন ধরে তারা এভাবেই মানুষের টাকা আটকে ব্যবসা করছে। আমি এখনো ছয় হাজার ৮০০ টাকা পাই। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করায় আমাদের টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে অনেক শঙ্কায় আছি।

জীবন জাহিদ নামে এক গ্রাহকের বক্তব্য, আমি একটি হেডফোন অর্ডার দিয়েছিলাম। পণ্যটি ‘আউট অব স্টক’ হওয়ায় দুই সপ্তাহ আগে আমাকে রিফান্ড দেয়ার কথা ছিল। এখনো পাইনি। মিনা বাজার থেকে কিছু টাকার পণ্য কিনেছি, এক ঘণ্টার মধ্যে ডেলিভারি দেয়ার কথা থাকলেও ২০ দিনেও পণ্য বা টাকা পাইনি। একইভাবে পাঁচ দিন আগে স্বপ্ন থেকে পণ্য অর্ডার দেই, এক ঘণ্টার ডেলিভারির প্রতিশ্রুতি দিয়েও তারা পণ্য বা টাকা দেয়নি। ইস্যু রিপোর্ট করেও কোনো সমাধান পাইনি। টাকা ফেরত পাবো কি-না, কিছুই জানি না, কারও সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থাও নেই। সরকারি নজরদারি সংস্থাগুলোর উচিত, ইভ্যালির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেয়া।

এ বিষয়ে নিজের ফেসবুক পেজে লাইভে ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও এমডি মোহাম্মদ রাসেল বলেন, অনেক সময় রিফান্ড সংক্রান্ত জটিলতা হয়। একজন গ্রাহক চারটি পণ্য কিনে দুটি বা তিনটি পণ্য ডেলিভারি পেলে আমাদের সিস্টেমে ‘অর্ডার ডেলিভারড’ দেখায়। তাই সেই রিফান্ডটি আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়। পরে অবশ্য অভিযোগ পেলে আমরা রিফান্ড করে দেই।

ইভ্যালিতে বর্তমানে ৩৫ লাখ গ্রাহক নিবন্ধিত রয়েছেন। প্রতিমাসে প্রতিষ্ঠানটি ৩০০ কোটি টাকার লেনদেন করে। প্রতিষ্ঠার পর ২০ মাসে গ্রাহকের কাছে দেড় হাজার কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছে ইভ্যালি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT