শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৩ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মাদকসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগে জেলা বিএনপির কাছে লিখিত আবেদন রেমিট্যান্সে রেকর্ড, ২৬ দিনে এলো প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে আদালতের রায় ঈদের ছুটি দীর্ঘ হলেও অর্থনীতিতে স্থবিরতা আসবে না: অর্থ উপদেষ্টা বিকাশ-নগদ-রকেটে দৈনিক ৫০ হাজার টাকা লেনদেন করা যাবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনে ভেটো দিয়েছে ১২ দলীয় জোট ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে হামজা বললেন, ‘জুনে আবার দেখা হবে’ পর্যটক বরণে প্রস্তুত সাজেকসহ রাঙামাটির পর্যটনকেন্দ্রগুলো ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়ী করার অভিযোগ সত্য নয়’

দেড় কোটি শিশুকে চিঠি প্রধানমন্ত্রীর

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ১৬ মার্চ, ২০২০
  • ২০২
দেড় কোটি শিশুকে চিঠি প্রধানমন্ত্রী
ফাইল ছবি।

দেশের এক কোটি ৪০ লাখ শিশুর কাছে চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষ উপলক্ষে এ চিঠি লিখেছেন তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা তার এ চিঠি আগামীকাল ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে পাঠ করবে সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়ূয়া এক কোটি ৪০ লাখ শিশু। চিঠিটি ছাপিয়ে তাদের প্রত্যেককে এক কপি করে দেওয়া হবে। চিঠি পাঠ শেষে তারা বাড়ি নিয়ে যাবে তা। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সারাদেশের ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একযোগে এই চিঠি পাঠ করা হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ উদ্যোগ নিয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম আল হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের ভালোবেসে নিজে কলম তুলে নিয়েছেন। তাদের কাছে চিঠি লিখেছেন। শিশুদের কোমল হৃদয়ে বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করানোর জন্য এ উদ্যোগ। প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন পুত্রের শিক্ষকের কাছে একটি চিঠি লিখেছিলেন। তা ইতিহাস হয়ে আছে। শিশুদের জন্য বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা তার যোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই চিঠিও ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ সচিব বলেন, জাতির পিতার জীবন ও সংগ্রামের তথ্যগুলো জানার মধ্য দিয়ে সারাদেশের প্রায় দেড় কোটি শিশুর মধ্যে দেশপ্রেম বোধ, স্বাধীনতার চেতনা জাগ্রত করা এ আয়োজনের উদ্দেশ্য। আজকের শিশুরাই ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গড়ার মূল কারিগর। তাই তাদের উজ্জীবিত করার জন্যই এ উদ্যোগ।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, বর্তমানে সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৬২০টি এবং ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা এক কোটি ৪০ লাখ। এই কোমলমতি শিশুদের মধ্যে দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার চেতনা জাগ্রত করার জন্য জাতির পিতার জীবন সংগ্রাম অনুপ্রেরণা জোগাবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় মনে করছে। আজকের শিশুরা আগামী এসডিজি লক্ষ্য ও ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পাঠ উপলক্ষে আগামীকাল সকাল ১১টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের মাঝে উপস্থিত হবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন ও সচিব মো. আকরাম আল হোসেন। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর প্যাডে লেখা মুজিববর্ষের লোগোসহ হুবহু চিঠিটি ছাপিয়ে শিশুদের মাঝে বিতরণ করা হবে। দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিশুরা তা নিজে পাঠ করবে। আর প্রাক-প্রাথমিক ও প্রথম শ্রেণির শিশুদের শিক্ষকরা পাঠ করে শোনাবে।

দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব শিশুকে লেখা সরকারপ্রধানের এটিই প্রথম চিঠি। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এটি বিশ্বরেকর্ড হতে পারে।

চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী যা লিখেছেন- “ছোট্ট সোনামণি, আমার শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা নিও। তোমার বাবা-মাকে আমার সালাম ও ভাইবোনদের স্নেহ পৌঁছে দিও। পাড়া-প্রতিবেশীদের প্রতি শুভেচ্ছা রইলো।

আজ ১৭ই মার্চ। ১৯২০ সালের এদিনে বাংলার মাটিতে জন্ম নিয়েছিলেন এক মহাপুরুষ। তিনি আমার পিতা, শেখ মুজিবুর রহমান।

বাংলাদেশ নামের এই দেশটি তিনি উপহার দিয়েছেন। দিয়েছেন বাঙালিকে একটি জাতি হিসেবে আত্মপরিচয়ের সুযোগ। তাই তো তিনি আমাদের জাতির পিতা।

দুঃখী মানুষদের ক্ষুধা-দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিতে নিজের জীবনের সব সুখ-আরাম বিসর্জন দিয়ে তিনি সংগ্রাম করেছেন। বারবার কারাবরণ করেছেন। মানুষের দুঃখ-কষ্ট তাঁকে ব্যথিত করতো। অধিকারহারা দুঃখী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে তিনি দ্বিধা করেননি। এই বঙ্গভূমির বঙ্গ-সন্তানদের একান্ত আপনজন হয়ে উঠেছিলেন- তাই তিনি ‘বঙ্গবন্ধু’।

২০২০ সালে আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি। আজ শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অনেক দেশ এই জন্মশতবার্ষিকী অর্থাৎ ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন করছে। সকলকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।

প্রিয় বন্ধু,

ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নিয়েছে জাতির পিতাকে। তাঁর নাম বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু ওরা পারেনি। ঘাতকেরা বুঝতে পারেনি বঙ্গবন্ধুর রক্ত ৩২ নম্বর বাড়ির সিঁড়ি বেয়ে-বেয়ে ছড়িয়ে গেছে সারা বাংলাদেশে। জন্ম দিয়েছে কোটি কোটি মুজিবের। তাই আজ জেগে উঠেছে বাংলাদেশের মানুষ সত্যের সন্ধানে। ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। সত্যকে মিথ্যা দিয়ে দাবিয়ে রাখা যায় না। আজ শুধু বাংলাদেশ নয়, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। বাংলাদেশকে বিশ্ব চিনে নিয়েছে তাঁরই ত্যাগের মহিমায়।

সোনামণি,

জাতির পিতার কাছে আমার অঙ্গীকার, তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়বোই। আর সেদিন বেশি নয়। পিতা ঘুমিয়ে আছেন টুঙ্গিপাড়ার সবুজ ছায়াঘেরা মাটিতে পিতামাতার কোলের কাছে। তিনি শান্তিতে ঘুমান। তাঁর বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।

আমরা জেগে রইবো তাঁর আদর্শ বুকে নিয়ে। জেগে থাকবে মানুষ-প্রজন্মের পর প্রজন্ম- তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে। জাতির পিতার দেওয়া পতাকা সমুন্নত থাকবে চিরদিন।

তোমরা মন দিয়ে পড়ালেখা করবে, মানুষের মতো মানুষ হয়ে দেশ ও মানুষের সেবা করবে।

জয় বাংলার জয়, জয় মুজিবের জয়, জয় বঙ্গবন্ধুর জয়।

ইতি,
তোমারই
শেখ হাসিনা।”

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর লেখা ও চিঠিটি এসে মন্ত্রণালয়ে পৌঁছায়। এরপরই তা ছেপে সব জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও সংশ্নিষ্ট বিদ্যালয়গুলোতে পৌঁছাতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়। গতকাল রোববার এ চিঠি ছাপানো শেষ হয়। আজকের মধ্যে তা সারাদেশে পৌঁছে দেওয়া হবে

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT