পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে জঙ্গী সন্দেহে আটককৃতরা মূলত নব্য জেএমবির সদস্য।
তিনি বলেন,সম্প্রতি ঢাকায় ৫টি হামলার ঘটনার সঙ্গে তাদের যোগসূত্র রয়েছে। তিনি সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
মনিরুল ইসলাম বলেন, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ওই জঙ্গি আস্তানায় যেসব বিস্ফোরক ও বোমা তৈরীর সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে, তার সাথে ঢাকায় বিস্ফোরণে উদ্ধার করা বিস্ফোরকের মিল রয়েছে।
তিনি বলেন, পাশের একটি বাসা থেকে রুমীকে আটক করা হয়। তার স্ত্রী ও ভাইকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হয়েছে। ঢাকার বড় বড় হামলার সাথে রুমির যোগসুত্র রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ ভোরে ফতুল্লার তক্কার মাঠ এলাকার ওই বাড়ি থেকে আটক ফরিদ উদ্দিন রুমি, জামাল উদ্দিন রফিক ও জান্নাতুল ফুয়ারা অনু নব্য জেএমবির সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বসতবাড়ি থেকে আটকের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে একই এলাকায় তাদের আরেকটি পরিত্যক্ত টিনশেড বাড়িতে গোপনে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ওই বাড়িটিতে বোমা তৈরির ল্যাব আছে এবং ওইখানে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম মজুদ আছে। পরে তাদের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ওই বাড়িতে বোমা বিশেষজ্ঞ দল ও রোবট পাঠিয়ে পর্যবেক্ষণ করে এর সত্যতা পাওয়া যায়।
সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার তক্কার মাঠ এলাকার একটি বাড়ি থেকে জঙ্গি তৎরপতায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জঙ্গীকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
এ সময় জঙ্গি আস্তানায় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য পাওয়া যায়। পরে পুলিশের বোমা নিস্ক্রীয়করণ ইউনিটের রোবট চার দফা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এ গুলি ধ্বংস করে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মনিরুল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে আসা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা জেলা পুলিশের সহায়তায় ভোর রাত থেকে অভিযান শুরু করে। মূল অভিযানটি চলে বিকেল তিনটা পর্যন্ত।
সোমবার ভোর রাতে তারা তক্কার মাঠ এলাকার জয়নাল আবেদীনের তিন তলা ভবনে অভিযান চালিয়ে জঙ্গী তৎপরতার অভিযোগে জামাল উদ্দিন রফিক, ফরিদ উদ্দিন রুমি ও জান্নাতুল ওয়ারা অনু নামের এক নারীকে আটক করে।
আটককৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, পার্শ্ববর্তী আরেকটি টিনশেড বাড়িতে তাদের বোমা তৈরীর ল্যাব রয়েছে। তাদের এ বক্তব্যের পর পুলিশ দুইটি বাড়িই ঘিরে রাখে। পরে টিনশেড বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার করে।
ওই বাড়ি দুটিরই মালিক জয়নাল আবেদীন। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা। আটককৃতদের দুইজন তার দুই ছেলে ও একজন তার পুত্রবধূ।
তারা হচ্ছে- ঢাকার আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক ফরিদউদ্দিন রুমি (২৭), ফরিদের স্ত্রী অগ্রণী ব্যাংকের কর্মী জান্নাতুল ওয়ারা অনু (২৩) এবং ফরিদের ভাই খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) এর সাবেক ছাত্র জামালউদ্দিন রফিক (২৩)।
Leave a Reply