শিল্পী জলিলের নামাজে জানাজা আজ মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুর ২ টায় সাতক্ষীরা শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) দিবাগত রাত তিনটার দিকে সাতক্ষীরা সিবি হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঈষিকা কমার্শিয়াল আর্ট এর স্বত্বাধিকারী বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী এম এ জলিল মৃত্যুবরণ করেছেন(ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। তিনি দুই পুত্রের জনক। তার স্ত্রী তথ্য অধিদপ্তরে চাকরি করেন।
১৯৫৯ সালের ১৫ জুলাই সাতক্ষীরা জেলার পলাশপোল গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এমএ জলিল। বাবা মৃত জহর আলী পেশায় ছিলেন একজন ব্যবসায়ী ও মা মৃত হামিদা খাতুন গৃহিনী। পরিবারে ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। স্ত্রী লতিফুন নাহার লতা এবং দুই পুত্র পাভেল রহমান ও শিহাব রহমানকে নিয়েই ছিলো তার পরিবার।
চিত্রশিল্পী এমএ জলিল স্কুল জীবন থেকেই অনুপ্রাণিত হন ছবি আঁকার কাজে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি ছাত্রজীবনেই আঁকা-আঁকিতে হাতেখড়ি হয় তাঁর। বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতেন তিনি।
বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী এম এ জলিল
১৯৮২ সালে এমএ জলিল সাতক্ষীরা জেলার মিনি মার্কেট সংলগ্ন ঈষিকা আর্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। শুধুমাত্র রং ও তুলি নিয়েই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শুরু করেন ছবি আঁকার কাজ। প্রথমে সাইনবোর্ড ও অর্ডারের ছবি আঁকতেন। পরে ছবি আঁকা, ব্যানার, সাইনবোর্ড, ফেস্টুন এবং পাথরে খোদাইয়ের কাজও করেছেন। প্রথম ছয় বছরে প্রায় দেড় শতাধিক ছবি এঁকেছেন রং-তুলির আঁচড়ে। এর মধ্যে বিপ্লবী নেতা লেলিন, এঙ্গেলস, মাও সে তুং, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মাওলানা ভাসানীর আঁকা ছবিগুলো অন্যতম।
সাতক্ষীরার বিখ্যাত এ চিত্রশিল্পীর জিবদ্দশায় তিনবার তার একক চিত্রপ্রদর্শণী অনুষ্ঠিত হয়। চলতি বছরের ২৫ মার্চ থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত সাতক্ষীরা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয় তার সর্বশেষ একক চিত্রপ্রদর্শণী ‘ঈষিকা অর্কেস্ট্রা’। এর আগে ১৯৮৭ সালের ১৬-২০ ডিসেম্বর ও ২০১৬ সালের ২৭-৩০ ডিসেম্বর তার প্রথম ও দ্বিতীয় একক চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে তার পেটের নাড়িতে অপারেশন করা হয়েছিল। গতকাল সোমবার বিকালে পুনরায় অসুস্থ হলে তাকে সাতক্ষীরা সিবি হসপিটালে ভর্তি করা হয়। রাত দশটার দিকে আবারও তার অপারেশন করা হয়। চিকিৎসকরা তার অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু রাত তিনটার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন।
Leave a Reply