দীর্ঘ আন্দোলন, নানা আলোচনা ও সমালোচনার পর অবশেষে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য হিসেবে পদত্যাগ করেছেন অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরীর কাছে অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন তার পদত্যাগপত্রটি জমা দেন। পরে তিনি সেটি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে হস্তান্তর করেন।
সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মন্ত্রণালয় উপস্থিত না থাকায় অতিরিক্ত সচিব পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
এর আগে পদত্যাগের ব্যাপারে মন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সিনিয়র সচিবের সঙ্গে উপাচার্য মৌখিকভাবে আলোচনা করেন বলে জানা গেছে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, ‘আমরা তার পদত্যাগপত্র পেয়েছি। এখন আইনগত প্রক্রিয়া দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘তিনি (উপাচার্য) আর থাকতে চাচ্ছেন না। তদন্ত প্রতিবেদন আমরা পর্যালোচনা করছি। আপনারা যা বোঝার বুঝে নিন।’
টানা দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করে যাওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ, ভর্তি ও কেনাকাটায় আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দমিয়ে রাখতে বহিষ্কার, অশোভন আচরণ, কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজের ঘটনা নিয়েও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
উপাচার্যের মতো একটি সম্মানিত পদে থাকা খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির মতও গুরুতর অভিযোগ নিয়েও গণমাধ্যমে সংবাদ হয়েছে। এমনকি উপাচার্য তাঁর বাসভবনের কাছে একটি বিউটি পার্লারের অনুমোদন দিয়েও আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন। সর্বশেষ প্রশাসনের নির্দেশে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। যার প্রতিবাদে প্রশাসনের দুজন সহকারী প্রক্টর পদত্যাগ করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে গত ১১ দিন ধরে টানা আন্দোলন করে আসছেন।
এই প্রেক্ষাপটে ২৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইউজিসিকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক তথ্যাদি জানাতে অনুরোধ করে। এর পরদিন ২৪ সেপ্টেম্বর ইউজিসির সদস্য মুহাম্মদ আলমগীরকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
Leave a Reply