শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৩ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মাদকসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগে জেলা বিএনপির কাছে লিখিত আবেদন রেমিট্যান্সে রেকর্ড, ২৬ দিনে এলো প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে আদালতের রায় ঈদের ছুটি দীর্ঘ হলেও অর্থনীতিতে স্থবিরতা আসবে না: অর্থ উপদেষ্টা বিকাশ-নগদ-রকেটে দৈনিক ৫০ হাজার টাকা লেনদেন করা যাবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনে ভেটো দিয়েছে ১২ দলীয় জোট ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে হামজা বললেন, ‘জুনে আবার দেখা হবে’ পর্যটক বরণে প্রস্তুত সাজেকসহ রাঙামাটির পর্যটনকেন্দ্রগুলো ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়ী করার অভিযোগ সত্য নয়’

পরীমণির সঙ্গে রাত-যাপন : বাধ্যতামূলক অবসরে সেই পুলিশ কর্মকর্তা

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪
  • ১৮৫
পরীমণির সঙ্গে রাত-যাপন : বাধ্যতামূলক অবসরে সেই পুলিশ কর্মকর্তা

পরীমণির বাসায় নিয়মিত রাত-যাপন করা এবং স্ত্রীর অবর্তমানে রাজারবাগের বাসায় নিয়ে ১৭ ঘণ্টা অবস্থানের প্রমাণ মেলায় চাকরি হারাচ্ছেন আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েন।

 

গত ১৩ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের শৃঙ্খলা-২ শাখার উপ-সচিব রোকেয়া পারভীন জুঁই স্বাক্ষরিত স্মারকে বিভাগীয় মামলায় তাকে চাকরি থেকে ‘বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান’ গুরুদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের সচিবকে অনুরোধ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) শৃঙ্খলা-২ শাখার স্মারকটি গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। গোলাম সাকলায়েন সর্বশেষ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে ঝিনাইদহ ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত ছিলেন।

 

শৃঙ্খলা শাখার ওই স্মারকে বলা হয়েছে, ডিবি গুলশান বিভাগের এডিসি থাকাকালে নায়িকা পরীমণির সঙ্গে ঘটনাক্রমে দেখা এবং যোগাযোগ শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি নায়িকা পরীমণির বাসায় নিয়মিত রাত্রিযাপন করতে শুরু করেন। পুলিশ অধিদপ্তরের এলআইসি শাখা থেকে দেওয়া তার ফোনের সিডিআর বিশ্লেষণ অনুযায়ী ২০২১ সালের ৪ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন সময়ে (দিনে ও রাতে) নায়িকা পরীমণির বাসায় অবস্থান করেছেন।

 

নায়িকা পরীমণির মোবাইল ফোনের ফরেনসিক রিপোর্ট (সিআইডি কর্তৃক মামলার আলামত হিসেবে জব্দকৃত) পর্যালোচনায় দেখা যায়, তার ও পরীমণির আদান-প্রদানকৃত মেসেজগুলো ২৯ জুলাই থেকে ৩ আগস্ট সামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমণির ফেসবুক আইডি ও গোলাম সাকলায়েন সিথিল নামে ফেসবুক মেসেঞ্জারে কথোপকথন এবং তাদের হোয়াটস্অ্যাপ নম্বরে (১১ জুলাই-৪ আগস্ট ২০২১) কথোপকথন সাধারণ পরিচিতি বা পেশাগত প্রয়োজনে স্থাপিত কোনো সম্পর্কের নয় বরং অনৈতিক প্রেমের সম্পর্ক।

২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর সিআইডির স্মারক নং-আইটি-ফরেনসিক/১৫৭৩ রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১ আগস্ট ২০২১ সকাল ৬টা থেকে ২ আগস্ট রাত ৩টা পর্যন্ত রাজারবাগ মধুমতি পুলিশ অফিসার্স কোয়ার্টার্সে নায়িকা পরীমণির যাতায়াতের ধারণকৃত সিসিটিভি ফুটেজের ফরেনসিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে ও সাক্ষীদের জবানবন্দি অনুযায়ী প্রতীয়মান হয় যে, গত ১ আগস্ট, ২০২১ তারিখে তার পূর্ব পরিকল্পনা ও সম্পূর্ণ জ্ঞাতসারে তার স্ত্রী না থাকা অবস্থায় নায়িকা পরীমণি তার রাজারবাগে সরকারি বাসায় যায় এবং প্রায় ১৭ ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করে, পরদিন ২ আগস্ট রাত ১টা ৩০ মিনিটে বাসা ত্যাগ করেন।

তার ও নায়িকা পরীমণির সম্পর্কের বিষয়টি বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায়, টেলিভিশনে ও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং যার ফলে জনমনে এ বিষয়ে নানারূপ বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনার জন্ম দেয়।

গোলাম সাকলায়েন পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হয়ে সরকারি দায়িত্বের বাইরে নায়িকা পরীমণির সঙ্গে অতিমাত্রায় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। তিনি বিবাহিত ও এক সন্তানের জনক হওয়া সত্ত্বেও পরীমণির সঙ্গে তার বিবাহ বহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, পরীমণির সঙ্গে জন্মদিন উদযাপন ও নিজের সরকারি বাসভবনে নিজ স্ত্রীর অবর্তমানে সময় কাটানোর মত ঘটনা বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে তা প্রচারিত হওয়ায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। উল্লিখিত অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়।

 

পরীমণির সঙ্গে রাত-যাপন : বাধ্যতামূলক অবসরে সেই পুলিশ কর্মকর্তা

 

গোলাম সাকলায়েনর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ এর দায়ে অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী জারি করা হয়। অভিযুক্ত কর্মকর্তা আনীত অভিযোগের প্রদানপূর্বক ব্যক্তিগত শুনানি প্রার্থনা করেন। বিভাগীয় মামলাটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব (প্রশাসন) হায়াত-উদ-দৌলা খাঁনকে বলা হয়। তদন্তে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদন ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্যাদি পর্যালোচনাপূর্বক অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গুরুদণ্ডের আওতায় কেন তাকে “চাকরি থেকে বরখাস্তকরণ” করা হবে না সে মর্মে দ্বিতীয় কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। জবাবে তিনি ‘চাকরি থেকে বরখাস্তকরণ’ মামলার দায় থেকে অব্যাহতি প্রার্থনা করেন।

গোলাম সাকলায়েনের বিভাগীয় মামলার তদন্ত প্রতিবেদন, সাক্ষীদের জবানবন্দি, অভিযুক্তের আত্মপক্ষ সমর্থনমূলক লিখিত জবাব, মৌখিক বক্তব্য ও অন্যান্য কাগজপত্রাদি পুনরায় বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়। সার্বিক পর্যালোচনার পর দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর জবাব সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েনকে একই বিধিমালার বিধি ৪ এর উপ-বিধি ৩(খ) বিধি মোতাবেক ‘গুরুদণ্ড’ হিসেবে চাকরি থেকে “বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান” এর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

গোলাম সাকলায়েনের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী“অসদাচরণ” এর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এরই বিধিমালার বিধি ৪ এর উপ-বিধি ৩(খ) বিধি মোতাবেক ‘গুরুদণ্ড’ হিসেবে চাকরি থেকে “বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান” দণ্ডের বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া জন্য নির্দেশক্রমে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনকে অনুরোধ করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT