রিমঝিম বর্ষা শুরু হয়েছে। দিনভর ঝরেই চলেছে বৃষ্টি। অসহনীয় গরম কমে বেশ আরামদায়ক আবহাওয়া থাকলেও এই সময় বেশ কিছু রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণ স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া, পানি জমে থাকা ও বন্যায় পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি বাড়ে। আবার অনেক ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকি অন্যান্য ঋতুর তুলনায় বেশি থাকে বর্ষায়। বারডেম জেনারেল হাসপাতাল চিকিৎসক ডা.কামরুজ্জামান নাবিলের কাছ থেকে জেনে নিন পরামর্শ।
বর্ষা মৌসুমের রোগগুলো তিনটি প্রাথমিক মাধ্যমে ছড়াতে পারে। যেমন মশা, পানি এবং দূষিত খাবার। বর্ষার বেশিরভাগ রোগে জ্বরকে সাধারণ উপসর্গ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে। এই জ্বর কী কারণে হচ্ছে তার সঠিক কারণ বের করতে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শের প্রয়োজন। সাধারণত জ্বর, পেটব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা, পায়খানার সমস্যা, মাথাব্যথা ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে রোগীরা চিকিৎসকের কাছে যান। এগুলো টায়ফয়েডের লক্ষণ হতে পারে। টাইফয়েড ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট একটি পানিবাহিত রোগ। খোলা বা নষ্ট হওয়া খাবার বা দূষিত পানি পান করলে টাইফয়েড ছড়াতে পারে। উচ্চমাত্রার জ্বর পাঁচ–সাত দিনের বেশি হলে অবশ্যই পরীক্ষা করতে হবে।
বর্ষাকালকে মশা এবং মশাবাহিত রোগের প্রজনন ঋতু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গুতে ৩৪ শতাংশ এবং ম্যালেরিয়ায় ১১ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হয় বর্ষা মৌসুমে। এছাড়া চিকুনগুনিয়াও হয় অনেক সময়। এডিস মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ ডেঙ্গু এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়ার সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে জ্বর, শরীর ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া ইত্যাদি।
বর্ষায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা যায় অনেক বেশি। রোগীর পাতলা পায়খানার সঙ্গে বমি, পেটব্যথা এমনকি জ্বরও হতে পারে। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা করা না গেলে পানিশূন্যতা ও কিডনি অকেজ হওয়ার মতো মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
কলেরায় আক্রান্তের ক্ষেত্রে দূষিত খাবার বা পানি ভূমিকা রাখে। এর ফলে মারাত্মকভাবে রোগীর ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা না করা হলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রোগী মারাও যেতে পারে। এছাড়াও হেপাটাইটিস-এ, জন্ডিস রোগও দূষিত খাবার এবং পানির মাধ্যমে ছড়াতে পারে।
হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস ই পানিবাহিত বা খাবারবাহিত ভাইরাস দিয়ে জন্ডিস হতে পারে। সাধারণত রোগীর চোখ ও শরীর হলুদ হয়। প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ হয়। খাবারে অনীহা, বমি ভাব, বমি, পেটব্যথা ইত্যাদি সমস্যাও দেখা দিতে পারে। কখনো কখনো রক্তপাত, পেটে পানি আসা, এমনকি রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
জেনে নিন টিপস
Leave a Reply