বশেমুরবিপ্রবি ভিসির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগে আন্দোলন

শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
  • ১৬৭

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। অন্যায়ভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের বহিষ্কার, হুমকি ও বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেওয়াসহ উপাচার্যের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা এ অন্দোলন করছেন। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরেও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগে আন্দোলনে নেমেছেন সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—ক্লাসরুম অপরিষ্কার থাকা নিয়ে ফেসবুকে লেখার কারণে ট্রিপল-ই বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারাদেশ, ভিসির বাসভবনে বিউটি পার্লার নির্মাণ, ভর্তি বাণিজ্যের মাধ্যমে অযোগ্য ছাত্রদের ভর্তি, ক্যাম্পাসে নিজের অনুগত পেটোয়া বাহিনী তৈরি করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক শামস জেবিনের ওপর হামলা, শিক্ষক ও কর্মকর্তা নিয়োগে দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্য, শিক্ষক আক্কাস আলিকে সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা, ভর্তি ফি পাঁচগুণ বাড়ানো, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণে অনীহা ও বাজেটের সম্পূর্ণ টাকা লোপাট, শহীদ মিনারের উন্নয়ন না করা।

অভিযোগের মধ্যে আরও রয়েছে—শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম ও ক্যাম্পাসের পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতি, গাছপালা পরিচর্যার নামে দুই কোটি টাকা লোপাট, আবাসন সুবিধার নামে টাকা আদায়, ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা আট বছরের উন্নয়ন ফি’র টাকা লোপাট। প্রস্তাবিত মেইন গেটের টাকা লোপাট, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের নিজ কক্ষে ডেকে অপমান করা, আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জিনিয়া (সাংবাদিক) বাজেট সম্পর্কে জানতে চাইলে ও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় তাকে বহিষ্কার, ক্লাসরুম সংকট থাকা সত্ত্বেও অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি, কম্পিউটার ফি ২৫০ টাকা নিলেও বিভাগে পর্যাপ্ত কম্পিউটার সুবিধা না দেওয়া, অতিরিক্ত বাস ভাড়া আদায়, লাইব্রেরিতে বইয়ের সংকট, জিমনেসিয়াম নিয়ে দুর্নীতি, কমন রুমের জন্য বরাদ্দ টাকা লোপাট, ছাত্র সংসদের নামে টাকা নিয়েও ছাত্র সংসদ নির্বাচন না করা; বিশেষায়িত বিভাগে পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা না থাকা সত্ত্বেও বিভাগের পর বিভাগ খোলা ইত্যাদি।

এসব বিষয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, দীর্ঘদিনের জমানো ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ এই আন্দোলন। কথায় কথায় বহিষ্কার করা একটা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও নিয়ম-কানুন আছে বলে মনে হয় না। মুক্ত চিন্তা বা বাক স্বাধীনতা বলতে যা বোঝায়, তা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। ভিসির নানা অনিয়ম, দুর্নীতি আর যৌন কেলেঙ্কারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

এদিকে, আমরণ অনশন করতে গিয়ে দুজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভিসি ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের নামে একটি চক্র সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার চেষ্টা করছে। শিক্ষার্থীদের করা ১৪টি দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। তারপরও তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।’

এদিকে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. হাসিবুর রহমানের নেতৃত্বে একদল শিক্ষক শুক্রবার দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যান। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না বলে জানান। তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করতে চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে মেনে নেবেন বলেও তারা জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT