অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিদ্যমান এবং এখানকার অত্যন্ত আকর্ষণীয় প্রণোদনার সুযোগ গ্রহণ করে অধিক মুনাফার সুযোগ রয়েছে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের কর্মক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠীর সুযোগ বিনিয়োগকারিরা নিতে পারেন।
রোববার রাজধানীর শেরেবাংলানগর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে সেবার মান উন্নয়ন এবং প্রবৃদ্ধি বিকাশের ক্ষেত্রে ব্লকচেইন প্রযুক্তির ব্যবহার’ বিষয়ক দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব ফরিদা নাসরীন ও এডিবির আবাসিক প্রধান মনমোহন প্রকাশ বক্তব্য রাখেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন,চীন,ভারত ও এশিয়ার অন্যান্য ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে ভৌগলিক অবস্থানে রয়েছে।চীন,ভারত ও জাপান এই তিনটি বৃহৎ অর্থনীতির মাঝে থাকবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান দেশটিকে আঞ্চলিক যোগাযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ এবং গ্লোবাল আউট সোর্সিংয়ের কেন্দ্রে উন্নীত
রেছে। সুতরাং কৌশলগত কারনেই বাংলাদেশকে এড়িয়ে বিশ্বের সার্বিক অগ্রগতি সম্ভব নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রভাবশালী ২০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ উন্নীত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,২০২৪ সালের মধ্যে বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে যেসব দেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে তার মধ্যে বাংলাদেশ থাকবে।
মুস্তফা কামাল আরো বলেন,দেশে এখন যেসব মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে এগুলো শেষ হলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়বে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে প্রবৃদ্ধি দুই অংকের ঘরে পৌঁছে যাবে। তাই উদ্ভাবনে গুরুত্ব দিয়ে নতুন প্রযুক্তি আনার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই সময়ে রোবোটিকস,আর্টিফিয়াল ইনটেলিজেন্স বায়োটেকনোলজি ও ন্যানো টেকনোলজির ভূমিকা অনেক বেশি। যেখানে ব্লক চেইনের গুরুত্ব বিবেচনায় নিতেই হবে। এর মাধ্যমে কিছু ক্ষেত্রে হয়ত চাকুরি কমে যাবে, তবে আবার নতুন নতুন চাকুরির সুযোগ তৈরি হবে এবং মানবসম্পদ সমৃদ্ধ হবে।
অনুষ্ঠানে এডিবির আবাসিক প্রধান মনমোহন প্রকাশ বলেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এখন বিশ্বে রোল মডেল। সম্প্রতি এডিবির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে অগ্রগামী। বাংলাদেশে এবারের প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, রেমিটেন্স প্রবাহ বেশ ভাল। প্রতিবছর শ্রমশক্তিতে যুক্ত হচ্ছে ২০ লাখ তরুণ। জনমিতির সুবিধা নিতে পারলে উন্নতি আরো বেগবান হবে। তিনি বলেন, বৈশ্বিকভাবে ব্লকচেইন কার্যকর প্রযুক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বাংলাদেশে এটি কার্যকর করতে পারলে সকল ক্ষেত্রে কার্যকর সুসাশন, স্বচ্ছতা এবং পরিচালন ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন।
Leave a Reply