বিচারের আগেই কেন লোহার খাঁচায় দাঁড়াতে হবে: ড. ইউনূস

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : বুধবার, ১২ জুন, ২০২৪
  • ১৪৪
বিচারের আগেই কেন লোহার খাঁচায় দাঁড়াতে হবে: ড. ইউনূস
আদালত চত্বরে ড. ইউনূস

গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আদালত চলাকালে একটা সভ্য দেশে কেন একজন নাগরিককে লোহার খাঁচায় (আসামির কাঠগড়া) দাঁড়িয়ে থাকতে হবে? যেখানে বিচারই শুরু হয়নি, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার সুযোগও হয়নি, সেখানে নিরপরাধ নাগরিককে খাঁচার ভেতর থাকতে হবে কেন?

বুধবার (১২ জুন) দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেনের আদালত ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বিচার শুরুর প্রতিক্রিয়ায় আদালত থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, ‘অনেক হয়রানি করছে। আজ সারাক্ষণ খাঁচার মধ্যে ছিলাম। এটা কি ন্যায্য হলো? যে কোনও আসামি– যার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তাকে খাঁচায় নিয়ে যাওয়া…। আমি যতটুকু জানি, যতদিন আসামির অপরাধ প্রমাণিত না হয়, ততদিন সে নিরপরাধ। একজন নিরপরাধ নাগরিককে লোহার খাঁচায় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে আদালত চলাকালে, এটা অপমানজনক।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে সেটা বিষয় না, কারও ক্ষেত্রে যেন প্রযোজ্য না হয়, এ বিষয়ে মিডিয়ায় একটা আওয়াজ তুলুন। বিষয়টি পর্যালোচনা করা হোক। প্রশ্নটা তুললাম যারা আইনজ্ঞ আছেন, যারা বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত, পর্যালোচনা করে দেখুন– এটা রাখার দরকার আছে?

কেন হয়রানি বলছেন এমন প্রশ্নে বলেন তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রতারণা, আত্মসাতের। কিন্তু এগুলো আমি কখনও শিখিনি। হঠাৎ করে আমার ওপর এগুলো আরোপ করা হচ্ছে। এর বিচার হবে বুঝতে পারছি না। এগুলোই হলো হয়রানি। আমরা সারা জীবন মানুষকে সেবা দিয়েছি। অর্থ আত্মসাতের জন্য আসিনি।’

দল গঠনের বিষয়ে হয়রানি করা হচ্ছে কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বহু রকমের হয়রানি করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, আমি রক্তচোষা, সুদখোর, দেশের শত্রু, পদ্মা সেতুর অর্থ আটকে দিয়েছি, চারিদিকে ষড়যন্ত্র করে বেড়াই– এ সবই হয়রানি। এ সব কথা বলেই যাচ্ছে। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে জোর করে বের করে দেওয়া হলো। প্রতি বছর নতুন নতুন কাহিনী বলেই যাচ্ছে।’

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আদালতে হাজির হন ড. ইউনূস। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে এ মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। আদালত দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজলকে ড. ইউনূসসহ মামলার অপর আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পাঠ করে শোনাতে বলেন। মোশাররফ হোসেন কাজল পড়ে শোনান। আসামিরা দোষী না নির্দোষ জানতে চাওয়া হয়। ড.ইউনূসসহ অপর আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

জানা গেছে, দণ্ডবিধি ও মানিলন্ডারিং আইনে ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে স্থানান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে এ চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ৩০ মে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থার উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT