দেশের বৃহত্তর স্থলবন্দর বেনাপোলে ধূমপানকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা রাস্তা অবরোধ এমনকি পণ্য খালাস না করার হুমকি দেন।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বেনাপোলে এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, বেনাপোল স্থল বন্দরের শ্রমিক ও নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আনছার সদস্যদের সাথে ধূমপানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকরা। অপরদিকে শ্রমিকরা আনছার ক্যাম্পে ইট পাটকেল ছুড়েছে এমন অভিযোগও উঠেছে।
বাদল নামের এক শ্রমিককে বেধড়ক মারপিট করায় আনছার সদস্যদের বদলি ও শাস্তি দাবি করেন শ্রমিকরা। তারা ১৬ মাসের শ্রমিকদের প্রায় ৩ কোটি টাকা যদি না পায় তাহলে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বেনাপোল বন্দরের লোড আনলোড কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার ও হুমকি প্রদান করেন।
এসময় শ্রমিকরা ৮৯১ হ্যান্ডলিং শ্রমিক অফিসের ও বন্দরের ৫ নং গেটের সামনে সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করে আনছার সদস্যদের বদলি শাস্তি এবং পাওনা টাকার দাবিতে।
বেনাপোল ৮৯১ হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কলিম উদ্দিন মোল্যা বলেন, বিনা কারণে বাদল নামের এক শ্রমিকের গায়ে আনছার সদস্যরা হাত তুলেছে। তাকে এমনভাবে মারধর করা হয়েছে সে এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। যদি এর সঠিক বিচার না হয় এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের ১৬ মাসের প্রায় ৩ কোটি টাকা মজুরি বিল পরিশোধ না করে তাহলে বন্দরের লোড-আনলোডসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সহ-সভাপতি খলিল বলেন, ধূমপানকে কেন্দ্র করে ৪০ নং শেডের মধ্যে বাদলকে আনছার সদস্যরা বেধড়ক মারপিট করেছে আমরা এর সঠিক বিচার দাবি করছি। বাদল এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা বেনাপোল বন্দরে নিয়োজিত আনছার এর পিসি সাকিবুলের অনতি বিলম্বে বদলি দাবি করছি।
বেনাপোল আনছার এর প্লাটুন কমান্ডার সাকিবুজ্জামান বলেন, বেনাপোল বন্দরে কোটি কোটি টাকার আমদানি পণ্য ভারত থেকে আসে। এখানে এর আগেও কয়েকবার আগুনে পুড়ে এসব পণ্য পুড়ে ছাই হয়েছে। মারাত্নক ভাবে আমদানিকারক ও দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।
শ্রমিকরা ৪০ নং শেডে ধুমপান করছিল তাদের ধুমপান করতে নিষেধ করা হয়। এসময় একজন শ্রমিক অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে আনছার সদস্যদের। এরপর উভয় পক্ষ উত্তেজিত হয়ে হাতাহাতি হয়। শ্রমিকদের একজন নেতা ক্যাম্পে এসে মিমাংসার আশ্বাস দেওয়ার কিছু সময় পর তারা দল বল নিয়ে আনছার ক্যাম্পে এসে ইট নিক্ষেপ করে। আমরা বিষয়টি আমাদের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
৮৯১ হ্যান্ডলিং শ্রমিক এর সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পোর্ট থানার ওসির আশ্বাসে তারা সড়ক অবরোধ তুলে নিয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে আবারও আন্দোলন করতে বাধ্য হব।
বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান বলেন, শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে মিটিং করছিল। তাদের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে থানা থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে তারা সড়ক অবরোধ তুলে নেয়।
বেনাপোল বন্দরের সহকারী পরিচালক রুহুল আমিন বলেন, আমরা ঘটনাটি শুনেছি। এ ব্যাপারে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। উপ-পরিচালক মামুন কবির তালূকদার পেট্রাপোল বন্দরে বিশেষ কাজে গেছেন । তিনি ফিরলে আমরা আলোচান সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
Leave a Reply