ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনৈতিক ব্লকের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য বাংলাদেশের। এর পরের স্থান উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর জোট- নাফটা’র। অন্যান্য রাজনৈতিক ব্লকের সঙ্গে কমবেশি বাণিজ্য হলেও ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়ন ব্লকের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ অত্যন্ত কম বাংলাদেশের। মোট সাত লাখ কোটি বাণিজ্যের মধ্যে ওই ব্লকের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের পরিমাণ মাত্র আট হাজার কোটি টাকার মতো।
অথচ ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের পাচঁটি দেশে মোট জনসংখ্যা প্রায় ২০ কোটি এবং মোট দেশজ উৎপাদন প্রায় চার ট্রিলিয়ন ডলার। এই পাচঁটি দেশ হলো রাশিয়া, বেলারুশ, কাজাখস্তান, আর্মেনিয়া ও কিরগিজস্তান। এই প্রেক্ষাপটে ওই ব্লকের সঙ্গে বাণিজ্যসহ অন্যান্য সহযোগিতা বাড়াতে চায় সরকার। এজন্য পদক্ষেপও নিচ্ছে বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা মধ্য এশিয়ার ওই দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক বেশি কিন্তু আমরা সেখানে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাই না। রাশিয়ার সঙ্গে শুল্কমুক্ত সুবিধার বিষয়ে আলোচনার সময় তারা আমাদের জানায়- যেহেতু তারা একটি ইউনিয়নের সদস্য সেজন্য পাচঁটি দেশের সম্মিলিতভাবে তৈরি সেক্রেটারিয়েটের সঙ্গে আমাদের দর কষাকষি করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং গত মে মাসে বাণিজ্যমন্ত্রীর মস্কো সফরের সময় ওই ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের একটি সহযোগিতা সমঝোতা সই হয়েছে।’
এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য রাজনৈতিক যোগাযোগের বিষয়টিও সামনে এসেছে বলে জানান আরেকজন কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই দর কষাকষির ভিত্তি শুধুমাত্র বাণিজ্যের মাপকাঠিতে বিবেচ্য হবে না, রাজনৈতিক সদিচ্ছারও প্রয়োজন হবে।’
রাজনৈতিক এ সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে রাশিয়া সফর করেছেন বলে তিনি জানান। গত জুলাই মাসে লন্ডনে অনুষ্ঠিত এনভয় কনফারেন্সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রক্রিয়াটি এগিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য ওই অঞ্চলে রাজনৈতিক নেতাদের সফর বৃদ্ধি পেয়েছে। আশা করা হচ্ছে, উচ্চ পর্যায়ে একটি সফর এ বছর হবে।’
Leave a Reply