শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৩ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মাদকসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগে জেলা বিএনপির কাছে লিখিত আবেদন রেমিট্যান্সে রেকর্ড, ২৬ দিনে এলো প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে আদালতের রায় ঈদের ছুটি দীর্ঘ হলেও অর্থনীতিতে স্থবিরতা আসবে না: অর্থ উপদেষ্টা বিকাশ-নগদ-রকেটে দৈনিক ৫০ হাজার টাকা লেনদেন করা যাবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনে ভেটো দিয়েছে ১২ দলীয় জোট ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে হামজা বললেন, ‘জুনে আবার দেখা হবে’ পর্যটক বরণে প্রস্তুত সাজেকসহ রাঙামাটির পর্যটনকেন্দ্রগুলো ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়ী করার অভিযোগ সত্য নয়’

মায়ের গলাকাটা লাশের পাশে কাঁদছিল শিশু মারিয়া

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২০
  • ৪৩৯
মায়ের গলাকাটা লাশের পাশে কাঁদছিল শিশু মারিয়া

একটি রুমের মধ্যে মা, ভাই ও বোনের গলাকাটা মরদেহ ছড়িয়ে রয়েছে। মায়ের পাশেই পড়ে কাঁদছিল ছয় মাস বয়সী শিশু মারিয়া সুলতানা। পাশের রুমে বাবার পা বাঁধা মরদেহ পড়ে রয়েছে খাটের ওপরে। নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে একই পরিবারের চারজনকে। তবে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছে শিশু মারিয়া। মা-বাবা, ভাই-বোন যে আর বেঁচে নেই তা এখনও বোঝার বয়সও হয়নি তার। মা-বাবাকে খুঁজছে ছোট্ট মারিয়া।

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) ভোররাতে একই পরিবারের ওই চারজনকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

তবে পুলিশ এখনও ঘটনার মোটিভ উদঘাটন করতে পারেনি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন টিম মাঠে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

নিহতরা হলেন- হেলাতলা গ্রামের ব্যবসায়ী মো. শাহীনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন(৩০), ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী (৯) ও মেয়ে তাসমিন সুলতানা (৬)। মায়ের লাশের পাশেই পড়েছিল ছয় মাস বয়সী শিশু মারিয়া সুলতানা।

মায়ের গলাকাটা লাশের পাশে কাঁদছিল শিশু মারিয়া

নিহতের ছোট ভাই রায়হানুল ইসলাম বলেন, বাড়িতে মা ও বড় ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরা আমরা এক সঙ্গে থাকি। গতকাল মা আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। রাতে আমি ছিলাম পাশের আরেকটি ঘরে। ভোররাতে পাশের ঘর থেকে বাচ্চাদের গোঙানির শব্দ শুনতে পাই। এরপর বাইরে গিয়ে দেখি তাদের ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকানো। দরজা খুলে বিভৎস দৃশ্য দেখতে পাই। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে ভাই, ভাবি, ভাতিজা ও ভাতিজির লাশ। প্রথমদিকে বাচ্চারা বেঁচে ছিল, তবে কিছুক্ষণ পর মারা যায়। ছয় মাস বয়সী মারিয়া পড়ে ছিল মায়ের লাশের পাশে।

তিনি বলেন, বড় ভাই শাহীনুর ইসলাম নিজস্ব ৭-৮ বিঘা জমিতে পাঙাস মাছ চাষ করতেন। গত ২২ বছর ধরে তাদের পারিবারিক সাড়ে ১৬ শতক জমি নিয়ে প্রতিবেশী ওয়াজেদ কারিগরের ছেলে আকবরের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে মামলা ও পারিবারিক বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে ধারণা করছি।

স্বজনরা জানান, ভোরে তারা ওই বাড়িতে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ছুটে যান। পরে দরজা খুলে দেখতে পান গলাকাটা মরদেহগুলো ঘরের মধ্যে পড়ে আছে।

এদিকে সকালে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য নাছিমা খাতুন জীবিত থাকা একমাত্র শিশুটিকে নিয়ে নিজের কাছে রাখেন। পরবর্তীতে শোকে কাতর পরিবারের কাছে দেন শিশুটিকে। সকাল ১০টা পর্যন্ত মরদেহগুলো পড়েছিল ওই ঘরের মধ্যে। পুলিশের ক্রাইমসিনের তদন্তের জন্য ঘরে ঢুকতে দেয়া হয়নি কাউকে। দুপুর ১২টা পর্যন্তও এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করেনি।

জানা গেছে, নিহত শাহীনুর রহমানের তিন ভাইয়ের মধ্যে এক ভাই আশরাফুল ইসলাম মালয়েশিয়া থাকেন।

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের ৪ জনকে গলা কেটে হত্যা

নিহতের বোন আছিয়া খাতুন আহাজারি করছেন। তিনি বলছেন, আমার মা ও আরেকটা ভাই বাড়িতে থাকলে তাদেরও খুন করতো এরা।

হেলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, এটি একটি নৃশংস ঘটনা। একমাত্র শিশুকে রেখে পরিবারের বাকি চার সদস্যকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় যে বা যারাই জড়িত থাকুক তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। একই সঙ্গে ঘটনার মূল রহস্য উন্মোচন করা হোক।

কলারোয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারান চন্দ্র পাল জানান, এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। ঘটনাস্থলে পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানসহ সিআইডি, গোয়েন্দা পুলিশ, ডিএসবি, র্যাব ও অন্যান্য গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

তিনি বলেন, মায়ের লাশের পাশে পড়ে কাঁদছিল ছয় মাস বসয়ী শিশু মারিয়া। সকালে স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য তাকে তার দায়িত্বে রাখেন। এখনও মাঝে মধ্যে কাঁদছে শিশুটি। স্বজনদের কাছে রয়েছে ওই পরিবারের একমাত্র জীবিত থাকা শিশুটি। সে মা-বাবাকে খুঁজছে।

সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই নির্মম-নৃশংস ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করা হবে। আমরা তথ্য উপাত্ত নিচ্ছি। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক তাদের খুঁজে বের করা হবে। পুলিশ মাঠে কাজ করছে।

তথ্যসূত্র: জাগো নিউজ

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT