যশোরে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় যশোর জেলা কার্যালয় থেকে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট যশোর জেলা কমিটির উদ্যোগে দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে লাল পতাকা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের ৩৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেশব্যাপি কর্মসূচির অংশ হিসেবে মিছিলটি পাইপপট্টি মোড় থেকে শহর প্রদক্ষিণ করে যশোর প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
জেলা সভাপতি আশুতোষ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ বিএম শামীমুল হক ও যশোর জেলা সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অব্যাহত মূল্য বৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি-মুদ্রাস্ফীতি, দফায় দফায় গ্যাস বিদ্যুৎ পানির মূল্য বৃদ্ধি, কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি, বাড়িভাড়া-গাড়িভাড়া বৃদ্ধি, ওষুধপত্রসহ চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি, বই, খাতা, কাগজসহ শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি, শিক্ষা শেষে চাকরির অনিশ্চয়তা ইত্যাদির প্রভাবে জনগণের জীবন জীবিকাকে ক্রমাগত কঠিন থেকে কঠিনতর হয়েছে। এমন সময় অন্তর্বর্তী সরকারের ভ্যাট দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ বৃদ্ধি জনগণের ওপর ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’ হয়ে এসেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের শ্বেতপত্র অনুযায়ী মার্কিনের দালাল স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে প্রতি বছরে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার এবং ততোধিক ঋণগ্রস্ত করেছে। ঋণখেলাপি, তারল্য সংকট, টাকার অবমূল্যায়ন, ব্যাংকিং সেক্টরে দেউলিয়াত্বের বিপদ, বিগত সরকারের ন্যায় টাকা ছাপানো ইত্যাদি কারণে দেশের অর্থনীতির ভয়াবহতাকে সামনে আনছে।
বক্তারা আরও বলেন, মার্কিনের দালাল বিগত স্বৈরাচারী সরকারের নয়া উপনিবেশিক ভারত নির্ভরতা ও প্রতিপক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক অগ্রসর করার প্রেক্ষিতে মার্কিন পরিকল্পনায় শহর কেন্দ্রিক ছাত্র-মধ্যবিত্তদের গণ-আন্দোলনে ও সেনাবাহিনীর ভূমিকায় গত ৫ আগস্ট স্বৈরচারী খুনি শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। পরে মার্কিন ও পাশ্চাত্যের অতি বিশ্বস্ত ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় আনা হয়। ক্ষমতার এই পট পরিবর্তনে এক পরাশক্তি মার্কিনের অবস্থান আরও অগ্রসর হয়। দালাল ভারতের অবস্থান দুর্বল ও ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং প্রতিপক্ষ চীন-রাশিয়া স্বীয় অবস্থান ধরে রাখতে সচেষ্ট।
তারা বলেন, বিদ্যমান নয়াউপনিবেশিক আধাসামন্তবাদী সমাজ কাঠামো অক্ষুণ্ন রেখে সাম্রাজ্যবাদের এক দালালের পরিবর্তে আরেক দালাল বা এক সাম্রাজ্যবাদের পরিবর্তে আরেক সাম্রাজ্যবাদের দালাল ক্ষমতাসীন হলেও জনগণের ভাগ্যের কোনো মৌলিক পরিবর্তন হবে না। তাই সব সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের বিরুদ্ধে শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে জাতীয় গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে বেগবান করতে হবে। শ্রমিক কৃষক মেহনতি মানুষের সামগ্রিক মুক্তির ও জাতীয় গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য অগ্রসর হতে হবে।
Leave a Reply