বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলের একাধিক কক্ষে নিয়ে মারধরের কারণেই মারা যান শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। গোয়েন্দা সংস্থার বক্তব্য অনুযায়ী, ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার গ্রন্থনা ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক মুন্নার নির্দেশেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় সোমবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘বুয়েট শিক্ষার্থী ফাহাদ হত্যার ঘটনায় শনাক্ত ৯ জনকে আটক করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ পেয়েছি। সেটা পর্যালোচনা করছি।’
আটক ৯ জন হলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল, সহ-সভাপতি মুস্তাকিম ফুয়াদ, সহ-সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু, উপ-দফতর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, উপ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, ক্রীড়া সম্পাদক সেফায়েতুল ইসলাম জিওন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার এবং গ্রন্থনা ও গবেষণা সম্পাদক ইশতিয়াক মুন্না।
রবিবার (৬ অক্টোবর) রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে আবরারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তাকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে একটি গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র বলছে, আবরার গত শনিবার (৫ অক্টোবর) ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। পরে সেটি ইশতিয়াক মুন্নার নজরে আসে। তিনি একই হলের শিক্ষার্থী বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু, উপ-দফতর সম্পাদক মোস্তফা রাফি, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, ক্রীড়া সম্পাদক মেজবাউল ইসলাম জিয়ন ও তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকারকে বিষয়টি জানিয়ে আবরারকে ডেকে আনার নির্দেশ দেন। এরা সবাই ১৬ ও ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে দুজন রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আবরারকে ডেকে ২০১১নং কক্ষে নিয়ে যান।
সেখানে নেওয়ার পর আবরারের কাছ থেকে মোবাইল ফোন নেওয়া হয়। তার ফেসবুক মেসেঞ্জার চেক করাসহ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর শুরু হয় মারধর। একপর্যায়ে আবরার অচেতন হয়ে পড়লে কোলে করে মুন্নার কক্ষে (২০০৫নং) নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে দোতলা ও নিচতলার সিঁড়ির মধ্যবর্তী জায়গায় অচেতন আবরারকে নিয়ে যান তারা। এরপর হল প্রভোস্ট ও চিকিৎসককে খবর দেওয়া হয়। চিকিৎসক এসে আবরারকে মৃত ঘোষণা করেন। তখন কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়।
কৃষ্ণপদ জানান, এই ঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মামলায় আবরারের বাবা বাদী হবেন।
Leave a Reply