চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি বেশি হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছর রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৫৫০ কোটি মার্কিন ডলার। যেখানে জুলাইয়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৮২ কোটি ৭০ লাখ ডলার। সে মাসে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি রপ্তানি হয়েছে। জুলাই মাসে মোট ২৮৮ কোটি ৭৯ লাখ ডলার রপ্তানি করা হয়েছে। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) রপ্তানি প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে।
শুধু তাই নয়, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানিও বেশি হয়েছে। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৩৫৮ কোটি ১৪ লাখ মার্কিন ডলার। আর এ বছর সেই আয় ছিল ২৮৮ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। ফলে গত অর্থবছরের জুলাইয়ের তুলনায় বর্তমান অর্থবছরের জুলাইয়ে রপ্তানি রয়েছে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেশি।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি বছরের জুলাইয়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি বেশি হলেও কিছু পণ্য লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। যেমন- বরফ ও তাজা মাছের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ কোটি ৩৭ লাখ কিন্তু রপ্তানি হয়েছে ৪ কোটি ১৬ লাখ ডলার। এছাড়া কৃষিপণ্যের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ কোটি ৪২ লাখ, রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ৭২ লাখ ডলার, কেমিক্যাল পণ্যের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ কোটি ৩৭ লাখ, রপ্তানি হয়েছে ১ কোটি ৬ লাখ ডলার। পাশাপাশি সিরামিক পণ্য, হস্তশিল্পের পণ্য, স্টিল, স্টেইনলেস স্টিল ওয়ার, জাহাজ জাতীয় পণ্য, চুল, আইরনসহ বেশকিছু পণ্যের রপ্তানিও কমেছে।
তবে চামড়া ও চামড়াজাতীয় পণ্য, পাট ও পাটজাতীয় পণ্য, উৎপাদিত পণ্য, প্লাস্টিকের পণ্য, রাবার, বিভিন্ন ফুটওয়ার, গ্লাস ও গ্লাস ওয়ারসহ বেশকিছু পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে।
প্রসঙ্গত, গেল ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানি খাতে বাংলদেশের অবস্থান বেশ স্বস্তিদায়ক ছিল। এ সময়ে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি গত কয়েক বছরের মধ্যে রপ্তানি প্রবৃদ্ধিও ছিল আগের বছরগুলোর চেয়ে বেশি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরে ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৪ হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এই রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬৬৭ কোটি ডলার। অর্থাৎ একবছরে রপ্তানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। তাছাড়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪ শতাংশ বেশি। অথচ এর আগের অর্থবছর অর্থাৎ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রপ্তানি কমেছিল তিন শতাংশ।
তবে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে অর্থাৎ জুনে রপ্তানির প্রবৃদ্ধিতে ছন্দপতন হয়েছে। এই মাসে রপ্তানি না বেড়ে আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় সোয়া পাঁচ শতাংশ কমে গেছে। এ সময়ে ৩৬০ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ২৭৮ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের পণ্য। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি কমেছে প্রায় ২৩ শতাংশ।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত অর্থবছর ৩ হাজার ৪১৩ কোটি ডলারের গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আর এর আগের অর্থবছরে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬১ কোটি ডলার।
তবে দেশের অন্যান্য রপ্তানি খাত যেমন- হিমায়িত মাছ, চামড়াজাত পণ্য এবং পাট ও পাটজাত পণ্য ও হোম টেক্সটাইলসহ বেশ কিছু খাতের রপ্তানি কমে গেছে।
বিদায়ী অর্থবছরে কেমিক্যাল পণ্য ৩৬ শতাংশ, বিশেষায়িত টেক্সটাইল ৩১ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্য ২১ দশমিক ৬৫ শতাংশ, টেরিটাওয়েল ২০ শতাংশ, হস্তশিল্প ১৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং ফার্নিচার ১৯ শতাংশের রপ্তানি বেড়েছে।
Leave a Reply