রমজানের শেষ ১০ দিনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১৭০
রমজানের শেষ ১০ দিনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল

মাহে রমজানের প্রতিটি মুহূর্ত মুমিন-জীবনের জন্য অনেক মহামূল্যবান। প্রতিটি দিন বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে মাহে রমজানের শেষ ১০ দিনের তাৎপর্য অপরিসীম।

নবীজি (সা.) এবং তার সাহাবীরা এই দিনগুলোকে খুব গুরুত্ব দিতেন। রমজানের অন্যান্য দিনে যেই আমলগুলো করতেন, শেষ ১০ দিনে এসে তার পরিমাণ অনেক বেড়ে যেত।

হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, রমজানের শেষ ১০ দিনে নবীজি (সা.) ইবাদতের জন্য লুঙ্গি শক্ত করে বেঁধে ফেলতেন। অর্থাৎ ইবাদতের জন্য পরিপূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। সারা রাত জেগে থেকে ইবাদত করতেন এবং স্বীয় পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন। (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)

রমজানের শেষ ১০ দিনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি আমল:

ইতেকাফ: লাইলাতুল কদরের কল্যাণ যেন আমাদের ছুঁয়ে যায়, তাই নবীজি (সা.) রমজানের শেষ ১০ দিনে ইতেকাফের আমল দিয়েছেন। গুরুত্বের সঙ্গে অন্যকেও আমল করে শিখিয়েছেন। আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, ‘নবীজি রমজানের শেষ ১০ দিনে ইতেকাফ করতেন।’ (বুখারি, হাদিস: ২০২৫)

আয়েশা (রা.) বলেন, ‘নবীজি শেষ ১০ দিনে ইতেকাফ করতেন, আর বলতেন- তোমরা এই সময়ে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করো।’ (বুখারি, হাদিস: ২০২০)

তিনি আরও বলেন, নবীজি তার ইন্তেকাল পর্যন্ত এই সময়টাতে ইতেকাফ করেছেন, তারপর তাঁর স্ত্রীরাও ইতেকাফ করেছেন। (বুখারি, হাদিস: ২০২৬)

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবীজি ওফাতের বছরে ২০ দিন ইতেকাফ করেন। (বুখারি, হাদিস: ২০৪৪)

শবে কদরের খোঁজ: শেষ ১০ দিনে ইবাদতের অন্যতম হলো— শবে কদর তালাশ করা। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শবে কদরের সন্ধান পেতে চায় সে যেন রমজানের শেষ ১০ দশকে খুঁজে নেয়।’ (বুখারি, হাদিস: ১১৫৮)

নবীজি (সা.) আরও বলেছেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের তালাশ করো।’ (বুখারি, হাদিস: ২০১৭)

অন্য হাদিসে বলেন, ‘একটি রাত হাজার রাতের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। যে এর কল্যাণ অর্জন করতে পারে না— তার সকল কল্যাণই হাতছাড়া হয়। সত্যিকার হতভাগা ছাড়া কেউ এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয় না।’ (ইবনু মাজাহ, হাদিস: ১৬৪৪)

আয়েশা (রা.) নবীজিকে বলেন, যদি আমি শবে কদর পেয়ে যাই— তাহলে কী দোয়া করবো? নবীজি শেখালেন এই দোয়া— ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওবুন তুহিব্বুল আফওয়া ফাআফু আন্নি। অর্থাৎ: ‘হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাকারী, ক্ষমা করতে আপনি পছন্দ করেন। অতএব আমায় ক্ষমা করুন।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩)

সদকাতুল ফিতর আদায়: এই সময়ের অন্যতম আমল সদকাতুল ফিতর আদায় করা। সামর্থ্যবান প্রতিটি নারী-পুরুষ ছোট-বড় সবার জন্য রাসুল (সা.) এটা ফরজ করেছেন। সেই সঙ্গে নির্দেশ করেছেন— যেন তা ঈদুল ফিতরের নামাজের পূর্বেই আদায় করা হয়। (বুখারি, হাদিস: ১৫০৩)

ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন, ‘নবীজি সদকাতুল ফিতর নির্ধারণ করেছেন— যাতে করে এটা রোজাদারের রোজার বিচ্যুতি তথা অনর্থক কথা-কাজ ও অশালীন আচরণের ক্ষতিপূরণ হয় এবং অসহায় মানুষের খাবারের সুন্দর ব্যবস্থা হয়।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ১৬০৯)

আবু সাইদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘নবীজির যুগে আমরা ঈদুল ফিতরের দিনে খাদ্যদ্রব্যের এক সা’ অথবা এক সা’ যব, অথবা এক সা’ খেজুর, অথবা এক সা’ পনির অথবা এক সা’ কিশমিশ সদকাতুল ফিতর আদায় করতাম।’ (বুখারি, হাদিস: ১৫০৫)

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সময়ের মূল্য বুঝে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT