লেনদেনের অডিও ভাইরালের পর জাবি ছাত্রলীগ নেতার খোলা চিঠি

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
  • ২১১

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে শাখা ছাত্রলীগকে টাকা দেয়া হয়েছে এবং টাকার ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮ ব্যাচ থেকে ৪৫ ব্যাচের নেতাকর্মীরা পেয়েছেন বলে এক খোলা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা। রোববার রাতে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হামজা রহমান অন্তর সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে লেখা ওই খোলা চিঠিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন।

এর আগে রোববার প্রকল্পের অর্থ কেলেঙ্কারির বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও শাখা ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের মধ্যকার অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়। অডিও শুনে বুঝা যায়, হামজা রহমান অন্তরই রাব্বানীকে ফোন দেন এবং পরবর্তীতে অন্তরের পাশে থাকা সাদ্দামকে ফোন ধরিয়ে দেন।

আর এই ফোন কল রেকর্ড ফাঁস হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অন্তরকে হুমকি দিয়েছেন, এমন অভিযোগ তুলে তিনি চিঠিটি প্রকাশ করেছেন। অন্তরের সঙ্গে প্রক্টরের ফোনালাপটিও এরই মধ্যে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

খোলা চিঠিটিতে অন্তর লিখেছেন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকট সম্পর্কে জানার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ভাই হঠাৎ আমাকে ফোন দেন। এক পর্যায়ে ক্যাম্পাস ও শাখা ছাত্রলীগের অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে, আমি উক্ত ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শাখা ছাত্রলীগের ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেই।

তিনি লিখেছেন, উক্ত ফোন কলের অডিও রেকর্ড রোববার ভাইরাল হলে সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফিরোজ উল হাসান স্যার আমাকে ফোন দিয়ে ওই ভাইরাল অডিও নিয়ে প্রচ্ছন্ন হুমকির সুরে বলেন, আমি কেন অডিও ভাইরাল করেছি এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান-সম্মান নষ্ট করছে দাবি করেন। কাজটি ঠিক হয়নি ও আমাকে দুর্নীতির প্রমাণ দেখাতে হুমকি প্রদান করলে আমি বলি, এটি জাহাঙ্গীরনগর ও দেশব্যাপী ওপেন সিক্রেট এবং আমাকেও টাকার ভাগ দেবার চেষ্টা করলে আমি প্রত্যাখ্যান করি। জাবির ৩৮ থেকে ৪৫ ব্যাচের জুনিয়রেরাও টাকার ভাগ পেয়েছে। উপরোক্ত তথ্য বলার পরে উনি আমতা-আমতা করে বিষয়টি স্বীকার করলেও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন।

হামজা রহমান অন্তরের সঙ্গে প্রক্টরের ফোনালাপটি এরই মধ্যে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। অডিওতে অন্তরের উদ্দেশ্যে প্রক্টরকে বলতে শোনা যায়, ফোনটা যেহেতু তোমার, তোমাকেই কিন্তু দায়টা নিতে হবে। তোমার ফোনে কথপোকথন তুমি কিন্তু দায়টা এড়াতে পার না।

কথপোকথনের এক পর্যায়ে হামজা রহমান অন্তরকে বলতে শোনা যায়, ক্যাম্পাসের ৪৪-৪৫ ব্যাচ পর্যন্ত টাকা পাইছে, আমি এটা গোপন রাখার কী আছে স্যার?….স্যার আপনি যদি চান, আমি আপনাকে প্রমাণ দেখাতে পারবো, ৪৪-৪৫ ব্যাচও টাকা পাইছে।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, অন্তরের সঙ্গে আমার ইনফরমাল সম্পর্ক। ও আমার অনেক কাছের স্টুডেন্ট। সেই হিসেবে তার সঙ্গে অনেক কথায় হয়। তবে তাকে কোনো হুমকি দেয়া হয়নি।

এ দিকে গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে উপাচার্যের টাকা দেয়ার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও শাখা ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের মধ্যকার একটি ফোনকল কথপোকথন ছড়িয়ে পড়ে। ফোন আলাপে সাদ্দাম হোসেনকে বলতে শোনা যায়, উপাচার্য তার বাসভবনে শাখা ছাত্রলীগের তিনটি গ্রুপের মধ্যে ১ কোটি টাকা ভাগ করে দিয়েছেন। এর মধ্যে সভাপতি জুয়েল ৫০, সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল ২৫ ও তারা (সাদ্দাম) ২৫ লাখ টাকা পেয়েছেন।

তবে ছাত্রলীগকে টাকা প্রদানের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT