গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান বলেছেন, ‘আপনারা জানেন, সারা দেশে ডেভিল হান্ট অভিযান চলছে। যেই অভিযানের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। সেসব সন্ত্রাসী গ্রেফতার এড়ানোর জন্য তাবলিগ জামাতকে ব্যবহার করতে পারে। আমি তাবলিগ জামাতের মুরুব্বিদের প্রতি অনুরোধ রাখবো, আপনারা আপনাদের ভাইদের চেনেন। সন্ত্রাসীরা দেশের অন্য প্রান্ত থেকে আপনাদের অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে, তাদের আমাদের হাতে ধরিয়ে দেবেন।’
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ইজতেমা মাঠের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ সব কথা বলেন।
জিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ইজতেমার মুরুব্বিদের সঙ্গে মারামারি এবং ইজতেমা এ দুটিকে আমি ভিন্নভাবে দেখি। একটি হলো ক্রাইম, আরেকটি হল ধর্মীয় কাজ। আমি বিশ্বাস করি, যারা এখানে এসেছে তারা কেউই মারামারির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। যদি থেকে থাকে আইন কখনও তাদের ক্ষমা করবে না। আমরা যদি তাদের কোনও সখ্য পাই, যদি মারামারি করে থাকে, আমরা সেটিকে ক্রাইম হিসেবে দেখতে চাই এবং আইনের আওতায় আনতে চাই। ইতোমধ্যে মুরুব্বিদের অনেকের নামে মামলা আছে। তারা জামিনে আছেন। জামিনে থাকা অবস্থায় কাউকে ডিস্টার্ব করা যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইতিপূর্বে আমরা শুরায়ে নেজামের (জোবায়ের অনুসারী) প্রথম পর্বের দুই ধাপের ইজতেমা পার করেছি। আমরা নিরাপত্তার জন্য ইজতেমা মাঠকে পাঁচটি সেক্টরে ভাগ করেছি। পাঁচটি সেক্টরের মাধ্যমে আমরা ১৬টি ওয়াচ টাওয়ার বসিয়েছি, যেখানে বাইনোকুলারের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মুসল্লি ভাই-সহ সবার চলাফেরা পর্যবেক্ষণ করা হবে।’
শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা
আগামীকাল শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হচ্ছে। মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা এ পর্বে অংশ নিচ্ছেন।
সরেজমিন ইজতেমা মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাটিতে বাঁশ পুঁতে খুঁটির সঙ্গে টানানো হয়েছে চটের শামিয়ানা। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠে প্রবেশ করে নির্ধারিত জায়গায় (খিত্তা) অবস্থান নিচ্ছেন। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকেই মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠে আসতে শুরু করলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বেড়েছে মুসল্লিদের সমাগম। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে এবারের বিশ্ব ইজতেমা শেষ হবে।
সাদ অনুসারীদের গণমাধ্যম সমন্বয়ক সায়েম বলেন, ‘আমাদের ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে শুক্রবার ফজরের নামাজের পর থেকে। ইতোমধ্যে অনেক সাথী ভাই মাঠে উপস্থিত হয়েছেন। সারা দিন মুসল্লিরা আসতে থাকবেন। সবার অংশগ্রহণে এবার আমরা খুব সুন্দরভাবে ইজতেমা পালন করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবারই প্রথম বিশ্ব ইজতেমা চলাকালীন আমরা শবে বরাত পাচ্ছি। ইজতেমা মাঠে উপস্থিত লাখো মানুষ একসঙ্গে শবে বরাতের নামাজ পড়বেন। নামাজ শেষে একসঙ্গে রোজা রাখবেন, বড় জামাতে জুমার নামাজ আদায় করবেন। এটা অনেক বড় পাওয়া।’
Leave a Reply