গ্রাহকদের কাছ থেকে ১৪ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় সাতক্ষীরার প্রগতি এনজিও’র নির্বাহী পরিচালক প্রণনাথ দাস ও তার স্ত্রী সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইতি রানী বিশ্বাসসহ ৫ জনকে জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরার আমলী আদালত-৭ (দেবহাটা) এ আসামীরা হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালতের বিচারক তনিয়া মন্ডল তনি তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগী গ্রাহক সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার উত্তর সখিপুর গ্রামের তাপস চন্দ্র বিশ্বাসের স্ত্রী রিংকু রানী বিশ্বাস বাদী হয়ে ২০২৪ সালের জুলাই মাসের ২৯ তারিখে এমামলাটি দায়ের করেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে গ্রাহকদের কয়েক কোটি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রায় ১০টির অধিক মামলা রয়েছে।
রিংকু রানী বিশ্বাস জানান, তিনিসহ তার এলাকার শতাধিক গ্রাহকদের অধিক লাভের প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ১৪ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয় প্রাণনাথ দাস। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় শহরের কামালনগর এলাকার প্রগতি নামের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পরিচালক প্রানাথ দাস। শহরের পুরাতন সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় মন্দিরের পাশে রয়েছে তার আলিশান বাড়ি। সেখানে তিনি বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন। কিন্তু গত বছরের শেষ দিকে এসে গ্রাহকদের আমানতের টাকা ও লভ্যাংশ ফেরত দিতে প্রাণনাথ গড়িমোশি শুরু করেন এবং তিনি আত্মগোপনে চলে যান। কোন উপায় না পেয়ে আমানত কারীদের কেউ কেউ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাননি।
একপর্যায়ে ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর শত শত গ্রাহক প্রগতি কার্যালয়ে এসে দেখেন অভিভাবকহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে অফিসটি। তার বাড়িতেও তালা মারা অবস্থায় দেখতে পেয়ে গ্রহকদের চোখে মুখে হতাশার ছাপ নেমে আসে। গ্রহকরা তাদের টাকা ফেরত পাওয়ার দাবীতে বিক্ষোভও করেন। এরই মধ্যে ২০২৪ সালের ১৯ মার্চ ভারতের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোবরডাঙ্গা এলাকা থেকে সে দেশের পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। এরপর সেখানে কয়েকমাস কারাভোগের পর দেশে ফিরে সাতক্ষীরার সদর থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। একপর্যায়ে বেশ কিছুদিন কারাভোগের পর তিনি আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার প্রাণনাথ ও তার স্ত্রীসহ তার সহযোগী উক্ত ৫ আসামী আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরন করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবি এড. সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তার বিরুদ্ধে গ্রাহকের কোটি কোটি আতœসাতের অভিযোগে প্রায় ১০ টির অধিক মামলা রয়েছে।
Leave a Reply