সাতক্ষীরা জেলার বিস্তীর্ণ মাঠে এবার আবাদ হয়েছে সরিষার। যেদিকে দু’চোখ যায় সেদিকে শুধু হলুদের সমারোহ। সরিষার হলুদ ফুলের গন্ধ যেন দিক দিগন্ত রাঙিয়ে দিয়েছে। মাঠের পর মাঠ হলুদ হাসিতে ভরে তুলেছে প্রকৃতির চিত্র।
চির সবুজের বুকে এ যেনো কাঁচা হলুদের আল্পনা। প্রকৃতি সেজেছে অপরূপ সৌন্দর্যের নান্দনিক রূপে। ফুলে ফুলে মৌমাছি মধু আহরণ করছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে সরিষার ক্ষেত থেকে মধু আহরণ।
সরকারের সহযোগিতা পেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে এই মধু বিদেশে রপ্তানী করতে পারলে প্রচুর বৈদিশিক মুদ্রা অর্জন হবে বলে আশাবাদ মধু চাষীদের।
সাতক্ষীরা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার ১১ হাজার ৫’শ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। মধু আহরণের জন্য জেলায় এবার সরিষার ক্ষেতের চারিপাশে ৩ হাজার মৌচাষী ১০ হাজারের বেশি মৌচাক বসিয়েছেন। সুন্দরবন ঘেষা এই জেলায় মধু উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭শ মেট্রিক টন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তলুইগাছা গ্রামের কৃষক মাহবুবুর রহমান, আশরাফ আলী ও বেলাল হোসেন জানান, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সরিষার ফসলের কোন রোগ বালাই নেই এবং ফলনও ভাল হয়েছে। মৗমাছির পরাগায়ণের ফলে সরিষার ফলন এবার ১৫ থেকে ২০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
মৌচাষী শাহাজান আলী, মেহেদী, হাসান ও জিয়াউর রহমান জানান, মধুর দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় প্রতি বছর বাড়ছে মৌচাষীর সংখ্যা। কর্মসংস্থান হয়েছে বেকার যুবকদের। এই মধু বিদেশে পাঠাতে পারলে তারা আরও বেশি লাভবান হবেন বলে তারা জানান ।
মধু ব্যবসায়ী মোশারাফ হোসেন জানান, তিনি শহরের রসূলপুর এলাকায় মধু প্রক্রিয়াজাতকরণ মেশিন স্থাপন করেছেন। নামমাত্র মূল্যে তিনি এখানে মধু প্রক্রিয়াজাত করেন। মধু বিদেশে রপ্তানি করার জন্য ইতিমধ্যে বিদেশী ক্রেতাদের সাথে তার কথা হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে কিছু মধু সে সব দেশে পাঠানোও হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরো জানান, সরকারের সহযোগিতা পেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে মধু বিদেশে রপ্তানী করতে পারলে প্রচুর বৈদিশিক মুদ্রা অর্জন হবে।
জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নূরুল ইসলাম জানান, জেলার প্রতিটি উপজেলায় সরিষার চাষ হয়েছে। সরিষা ক্ষেত থেকে মৌমাছি মধু আহরণ করলে ফষলের কোন ক্ষতি হয় না। সরিষা ফুলের মধু সব চেয়ে বেশি উপকারি।
Leave a Reply