সাতক্ষীরার কামালকাটিতে শালখালী খাল ও মরিচ্চাপ নদী পুণঃখননে বাধা সৃষ্টি, লাঠিশোঠা নিয়ে খনন কার্যক্রমের দায়িত্বে নিয়োজিতদের ওপর হামলা ও চাঁদাবাজির ঘটনায় মমতাজ খাতুন (৪২) নামের এক নারী ইউপি সদস্য এবং তার ছেলে মহিউদ্দীন (৩২) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত মমতাজ খাতুন আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়ন পরিষদের ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যা এবং কান্দুড়িয়া গ্রামের কাছেদ আলীর স্ত্রী।
বৃহষ্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টার দিকে কামালকাটি বাজার সংলঘ্ন শ্মশানঘাট এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুস সালাম জানান, শালখালী খাল ও তৎসংলঘ্ন মরিচ্চাপ নদী পুণঃখননে বাধা সৃষ্টি, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনের কাছে ২লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি, খননকাজে নিয়োজিতদের ওপর হামলা ও মারপিটের ঘটনায় বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফিরোজ তালুকদার বাদি হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনাতা ১০/১২ জনকে আসামি করে আশাশুনি থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার আসামি হিসেবে নারী ইউপি সদস্য মমতাজ খাতুন ও তার ছেলে মহিউদ্দীনকে বৃহষ্পতিবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র এসও সাইদুর রহমান জানান, নাব্যতা সংকটে থাকা দেবহাটার সাপমারা খালের ১৯ কিলোমিটার, আশাশুনী অংশে শোভনালী ইউনিয়নের শালখালী খালের সাড়ে ৪ কিলোমিটার এবং সংযুক্ত মরিচ্চাপ নদীর এক হাজার মিটার পুণঃখনন কার্যক্রম চলমান অবস্থায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছে নারী ইউপি সদস্য মমতাজ খাতুন, তার ছেলে মহিউদ্দীনসহ কয়েকজন ২লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কামালকাটি শ্মশান এলাকায় ইউপি সদস্য মমতাজ খাতুন, তার ছেলে মহিউদ্দীন, স্বামী কাছেদ আলী, স্থানীয় খোরশেদ আলী, সাহান আলী, মতিয়ার রহমান সহ অজ্ঞাত ব্যাক্তিরা লাঠিশোঠা নিয়ে বাধা সৃষ্টি ও খনন কাজে নিয়োজিত লোকজনদের মারপিট করে।
পরবর্তীতে সরকারী খাল খননের কাজে বাধা সৃষ্টির ঘটনায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফিরোজ তালুকদার বাদি হয়ে মামলা দায়ের করলে মমতাজ খাতুন ও মহিউদ্দীনকে গ্রেপ্তার করে আশাশুনি থানা পুলিশ।
এদিকে বৃহষ্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল কামালকাটির খাল খনন চলমান এলাকা পরিদর্শন করেন সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী, আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুস সালামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা।
এসময় নেতৃবৃন্দরা বলেন, সরকারি খাল খনন কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। পাশাপাশি সুষ্ঠভাবে খাল খনন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনাও দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বেও কামালকাটির পাশ্ববর্তী স্থানে খাল খননে বাধা সৃষ্টির ঘটনায় আরেকটি মামলা দায়ের করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ওই মামলার আসামি পুর্ব কামালকাটি গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে রবিউল ইসলাম (৩৫)কে আগেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
Leave a Reply