দেশের অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো ব্যবসার অন্যতম গডফাদার সেলিম প্রধানের বনানীর বাসা থেকে অনলাইন ক্যাসিনোর সরঞ্জামসহ নগদ টাকা, কোটি টাকার চেক ও ২৩টি দেশের ৭৭ লাখ বৈদেশিক মুদ্রা ও বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে সেলিমের বনানীর ২ নম্বর সড়কের ২২ নম্বর বাসায় র্যাবের অভিযান শুরু হয়। অভিযানে সহকারী আক্তারুজ্জামানকে আটক করেছে র্যাব।
র্যাব জানায়, অভিযানে ২৯ লাখ টাকা নগদ, ৮ কোটি টাকার চেক, ২৩টি দেশের ৭৭ লাখ বৈদেশিক মুদ্রা এবং বিপুল পরিমাণ মদ জব্দ করা হয়েছে। তার বাসা থেকে অনলাইন ক্যাসিনোর সরঞ্জাম, অফিসের যন্ত্রপাতিসহ তার ব্যক্তিগত সহকারী আক্তারুজ্জামানকেও আটক করা হয়েছে।
সেলিম প্রধানের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানান র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি মিজানুর রহমান।
র্যাব-১-এর অধিনায়ক সারোয়ান বিন কাসেম জানান, আজ দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে র্যাব-১-এর বেশ কয়েকটি গাড়ি বনানীতে সেলিমের বাসায় অভিযান চালাতে রওনা দেয়। এছাড়া রাজধানীর গুলশান-২ এলাকায় সেলিম প্রধানের অফিস কাম বাসায় এখনো অভিযান চলছে। বনানীর বাসায় অভিযানের পর বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে গুলশান-২-এর ১১/এ রোডে সেলিম প্রধানের বাসায় অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মদ, নগদ টাকা ও বিদেশি মুদ্রা জব্দ করে র্যাব।
এর আগে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে ঢাকা থেকে একটি ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশে সেলিমের রওনা হওয়ার কথা ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দল ফ্লাইটে হাজির হলে ফ্লাইটটি ছাড়তে তিনটা বেজে যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩২২ নম্বর ফ্লাইটটি দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে ব্যাংককের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি ইউনিট ফ্লাইটে হাজির হলে সেটি বেলা ৩টায় ঢাকা ছেড়ে যায়। সেখান থেকেই সেলিম প্রধানকে গ্রেফতার করা হয়। সারা দেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের কারণে ভয়ে তিনি দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। তবে র্যাবের গোয়েন্দা ইউনিটের সদস্যরা তার ওপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছিলেন। এ কারণে শেষ পর্যন্ত তিনি পালাতে পারেননি।
সেলিমের কোম্পানির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, পি২৪ গেমিং শুরুতে বিনোদনমূলক সফটওয়্যার তৈরি ও প্রকাশ করত। এখন তারা এশিয়ায় দ্রুত বড় হতে থাকা ক্যাসিনো কারবারে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। এশিয়ার লাইভ ক্যাসিনো মার্কেটে প্রতিষ্ঠানটি যেন এক নম্বরে যেতে পারে, সেই চেষ্টা আছে তাদের। ২০১৬ সালে তারা শুধু কম্পিউটার গেমস বাজারে আনত। পরে অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো কারবারে জড়িয়ে পড়ে। পি২৪-এর সঙ্গে বাংলাদেশে ১৫০টি অপারেটর এবং ক্যাসিনো যুক্ত আছে। অনলাইনে বিশ্বের সবচেয়ে প্রচলিত ক্যাসিনোর সঙ্গে যুক্ত করে দেয়ার ক্ষমতা আছে তাদের। জুয়াড়িদের মুঠোফোনে লাইভ ক্যাসিনোতে যুক্ত করে দেয়ার সুবিধা তারা এনেছে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর।
Leave a Reply