শিরোনাম :
সাতক্ষীরার আসিফসহ যারা শহীদ হয়েছেন তাদের অবদানের কথা ভুলে গেলে হবে না : আসিফ মাহমুদ কু প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রতিবন্ধী নারীর স্বামীকে মারপিটের অভিযোগ! ভারতে ট্রাভেল ডকুমেন্ট ‘পেয়েছেন’ শেখ হাসিনা বিচারাধীন ৬ লাখ: থমকে আছে চাঞ্চল্যকর মামলার বিচারও বিশ্ব বাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম বিপিএলের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ১২ ক্রিকেটার কারা? দেবহাটা প্রেসক্লাবে সাম্প্রাদায়িক সম্প্রীতি অনুষ্ঠান সাতক্ষীরায় আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সম্মেলন সাতক্ষীরায় স্থানীয় জাতের ব্যতিক্রমধর্মী বীজমেলা দূর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব

হাইপ্রোফাইল দুর্নীতিবাজের তালিকায় সেই হুইপ শামশুল

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৯
  • ১১৮
জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের এমপি শামশুল হক চৌধুরী

এবার ক্ষমতাসীন দলের হাইপ্রোফাইল দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযানে নামছে দুদক। এ লক্ষ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার, ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি এবং দলের পদ-পদবি ভাঙিয়ে যারা দুর্নীতি করেছে, তাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি হচ্ছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট, ইসিতে দেয়া জনপ্রতিনিধিদের হলফনামা ও বিভিন্ন দায়িত্বশীল মাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুদক ওই তালিকা করছে। তবে এর আগে ৪৩ জনের একটি প্রাথমিক তালিকা হয়েছে।

সোমবার পর্যন্ত দুদকের অনুসন্ধান তালিকায় জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের এমপি শামশুল হক চৌধুরীর নাম আছে, যিনি ক্যাসিনোকাণ্ডে অভিযান শুরু হওয়ার কয়েদিন পর চট্টগ্রামে অভিযান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এছাড়া ভোলার একটি আসনের সরকার দলীয় এমপির নামও রয়েছে, যিনি একসময় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

সূত্র জানায়, র‌্যাবের অভিযানে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার এবং দেশ-বিদেশে আত্মগোপনে আছেন এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। তবে প্রথম তালিকাভুক্ত ৪৩ জনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে একাধিক মামলার প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত সেলের এক পরিচালককে ডেকে দ্রুত তদন্ত শেষ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে মামলা দায়েরের বিষয়ে তাগিদ দিয়েছেন বলেও জানা গেছে।

এদিকে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি ও টেন্ডার চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি (বরখাস্ত) ইসমাইল হোসেন সম্রাটের নামে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ডহোমের সন্ধান পেয়েছে দুদক।

মালয়েশিয়ায় সেকেন্ডহোম কর্মসূচি বা মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ডহোমে (এমএম ২ এইচ) অংশ নেন ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। সেখানে তার বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও বিভিন্ন ব্যাংকে লেনদেন করেছেন বলে নানা মাধ্যম থেকে জানতে পেরেছে দুদক।

ক্যাসিনো-কাণ্ডে জড়িত ও তাদের সহায়তাকারীদের নাম নিয়ে দুদক ৪৩ জনের একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছে। তালিকাভুক্তদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

এ তালিকায় আছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মোল্লা আবু কাওসার, হুইপ ও চট্টগ্রামের এমপি শামসুল হক চৌধুরী, যুবলীগের ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, জি কে শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মোহামেডান ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লোকমান হোসেন ভুঁইয়া, কৃষক লীগের শফিকুল আলম ফিরোজ, যুবলীগের আনিসুর রহমান আনিস, আরমান, আওয়ামী লীগের এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন চৌধুরী, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদ, রাজিব, হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজান, জি কে শামীমের ক্যাশিয়ার যুবলীগের সোহেল, ক্যাসিনো সম্রাট সেলিম প্রধান, গণপূর্তের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী উৎপল কুমার দে ও আবদুল হাই, নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হালিম প্রমুখ।

দুদক সচিব মুহম্মদ দিলোয়ার বখত বলেন, আমরা ৪৩ জনের তালিকা করেছি। তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মামলা দেয়া হবে।

তবে দুদকের অপর একটি সূত্র জানায়, ক্যাসিনো-কাণ্ডে প্রথম তালিকাভুক্ত ৪৩ জন থেকে বেড়ে এ সংখ্যা অর্ধশত হতে পারে। তাদের বিরুদ্ধে দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের টিম অনুসন্ধান কাজ করছে।

টিমের অপর সদস্যরা হলেন- উপপরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক মামুন চৌধুরী ও উপসহকারী পরিচালক নেয়ামুল হক গাজী। এই টিমের কাজ তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন দুদকের একজন মহাপরিচালক।

জানা গেছে, দুদকের প্রথম তালিকার ৪৩ জনের বিরুদ্ধে সব ধরনের তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তাদের অনেকের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। গত পাঁচ বছরে কি পরিমাণ লেনদেন হয়েছে সেই তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে দুদক।

এ ছাড়া এনবিআর, ভূমি অফিস, সাবরেজিস্ট্রি অফিস, রিহ্যাবসহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে চিঠি দিয়ে সংশ্লিষ্টদের অর্থ সম্পদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

দুদকের একটি সূত্র জানায়, সরকার দলের অনেকের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অবৈধ সম্পদসহ নানা অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

দুদক বলছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতিসহ বর্তমান ও সাবেক অন্তত হাফ ডজন এমপির বিরুদ্ধে চলমান অনুসন্ধান নথিভুক্ত হলেও ফের সচল করা হচ্ছে।

এছাড়া শিগগিরই আরও বেশ কয়েকজন হাইপ্রোফাইলের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু হচ্ছে বলে দুদক সূত্রে আভাস পাওয়া গেছে।

হাইপ্রোফাইলদের দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সোমবার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, দুর্নীতির ‘গডফাদার’দের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। অনুসন্ধান ও তদন্তের সময় কোনো দল বা মুখ দেখা হবে না।

ক্যাসিনো অভিযানে যাদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ সম্পদ ও টাকা-পয়সা পাওয়া গেছে তাদের বিষয়টি অনুসন্ধান করা হচ্ছে। ক্যাসিনো-কাণ্ড ছাড়াও অর্থ পাচার করে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ডহোমে কারা বাড়ি করেছেন তাদের বিষয়টিও অনুসন্ধানে আনা হয়েছে।

ক্যাসিনো-কাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত মামলা দায়ের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইকবাল মাহমুদ বলেন. আমরা অনুসন্ধান করব। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের মামলা করার আগে সম্পদ বিবরণী চাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, সম্পদ বিবরণী চাইলে তারা দেবে।

অনুসন্ধানে যদি ‘গ্রহণযোগ্য’ তথ্যপ্রমাণ আসে তবে সরাসরিও মামলা করা যাবে। এতে কোনো বাধা নেই। তিনি বলেন, কারও কথায় আমরা কাজ করি না। দুদক স্বাধীন। সংসদ নির্বাচনের আগে দেয়া এমপিদের হলফনামায় দেয়া সম্পদের বিষয়টিও অনুসন্ধানে আনা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১
Design and Developed by IT Craft in association with INTENT